Ajker Patrika

চট্টগ্রাম-১৫ আসন: ইমেজ সংকটে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী নদভী

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯: ৪৭
চট্টগ্রাম-১৫ আসন: ইমেজ সংকটে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী নদভী

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবু রেজা মোহাম্মদ নিজামুদ্দিন নদভী বেশ বেকায়দায় পড়েছেন। নির্বাচন সামনে রেখে একদিকে তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেলেঙ্কারি ও নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশে ইমেজ সংকটে পড়েছেন। তার ওপর আওয়ামী লীগের প্রায় সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে একাট্টা হওয়ায় স্থানীয়ভাবে তিনি কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে (আইআইইউসি) ওঠা নানা অভিযোগ নদভীকে বেশ কিছু দিন ধরেই ব্যস্ত রেখেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মিলে নদভীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। দুদকের দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসির একাধিক ব্যাখ্যা তলবের চিঠি ঝুলছে তাঁর সামনে।

আইন লঙ্ঘন করে কোটি কোটি টাকার সম্মানী-ভাতা গ্রহণের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে তাঁকে নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যেই। আবার নিজের পাকিস্তানি বন্ধুকে অবৈধভাবে আইআইইউসিতে চাকরির সুযোগ দিয়েও ইউজিসির তোপের মুখে নদভী। অন্যদিকে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও তৃণমূলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীই পাশে নেই তাঁর। প্রকাশ্যে তাঁরা অবস্থান নিয়ে ভোটের মাঠে তৈরি করেছেন নদভীবিরোধী অবস্থান।

সম্প্রতি আবু রেজা নদভীর বিরুদ্ধে আইআইইউসি কেলেঙ্কারির সূত্রপাত ঘটে তাঁর পাকিস্তানি বন্ধু আমিন নদভীকে লাখ টাকা বেতনের চাকরি দেওয়াকে কেন্দ্র করে। পাকিস্তানি নাগরিক হয়ে বাংলাদেশে ভিসা নিয়ে অনুমতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আইআইইউসিতে চাকরি করছিলেন আমিন নদভী। এই অভিযোগ পেয়ে ইউজিসি গত ২২ নভেম্বর ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয়। তিন দিনের মধ্যে এ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় আইআইইউসি রেজিস্ট্রারকে। এর পরপরই আইআইইউসি থেকে মাসে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ৪৪২ টাকার সম্মানী নেওয়ার খবর জানাজানি হয় নির্বাচনী ডামাডোলের ভেতর।

হলফনামায় এই তথ্য চাউর হওয়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন আবু রেজা নদভী। কারণ, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী কোনো ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কিংবা চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো মাসিক কোনো ভাতা বা সম্মানী গ্রহণ করতে পারেন না। তোলপাড় হওয়া এ ঘটনায় ইউজিসি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

৮ ডিসেম্বর পাঁচ দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে আইআইইউসির রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেয় ইউজিসি। এসব বিষয়ে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আইআইইউসি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্য টাকা নেওয়ার বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করতে একটি চিঠি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটি আমাদের কাছে পাঠায়। তারপর আমরা এ বিষয়ে আইআইইউসির কাছে ব্যাখ্যা চাই। এ ছাড়া পাকিস্তানি নাগরিককে কীভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়েও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগে নড়বড়ে অবস্থান হওয়ায় দলের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীনের ‘কাঁধে ভর করে’ এবারের ভোটের বৈতরণি পার হতে চাইছিলেন নদভী। কিন্তু নদভীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে নিজেই বেকায়দায় পড়েছেন আমিনুল ইসলাম আমীন। সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নিজের অনুসারীরাই তাঁকে নদভীর পক্ষ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে আমিনুল ইসলামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খুরশিদুল আলম বলেন, ‘গত ১০ বছরে এই আসনে নদভীর কাজগুলো আমাদের পছন্দ হয়নি। তিনি আমাদের (আওয়ামী লীগের) প্রতি আন্তরিক নন। এখানে অনেক জুলুম হয়েছে, অন্যায় হয়েছে। আমি এতে সায় দিইনি। মোতালেব অত্যন্ত ভালো মানুষ। তাঁর সঙ্গে দলের সম্পর্ক রয়েছে। তাই ওনার সঙ্গে কাজ করছি।’

অন্যদিকে নদভীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান (সিনিয়র সহকারী জজ) শাহনেওয়াজ মনিরের তদন্তে উঠে এসেছে, নদভীর সমর্থকেরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনকে মারধর, হামলাসহ নানাভাবে পেশিশক্তির ব্যবহার করছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশন সচিব বরাবর সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। এসব বিষয়ে শাস্তির মুখোমুখিও হতে পারেন নদভী।

এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবকে সমর্থনকারী ১ শতাংশ ভোটারের নিরাপত্তা দিতে জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন সংসদীয় আসন ২৯২-এর নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান।

এদিকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ও চিকিৎসক নেতা আ ম ম মিনহাজুর রহমানও মোতালেবের পক্ষে কাজ করছেন। ওই আসনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন। মোতালেবের প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ায় অনেকটা তাঁকে সমর্থন দিয়ে নিজের প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেননি।

ডা. মিনহাজ বলেন, ‘আমরা সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী জননেতা এম এ মোতালেবের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক হবে এবং জনগণ এ নির্বাচনকে উৎসবে পরিণত করে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী বেছে নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ মারা গেছেন

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত
সুকুমার রঞ্জন ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ (৭০) মারা গেছেন। আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়েসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পরিবারসূত্রে জানা যায়, সুকুমার রঞ্জন ঘোষ দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে পারকিনসন রোগে ভুগছিলেন। তিনি ধানমন্ডির বাসায় থাকতেন। গত কয়েক দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

সুকুমার রঞ্জন ঘোষ শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ শ্রীনগর উপজেলা সদরে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর পর থেকে অসুস্থ ছিলেন।

উল্লেখ্য, সুকুমার রঞ্জন ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (কুলা প্রতীক) ও সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে (ধানের শীষ) পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে নিহত দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক, স্ত্রীকে চাকরির আশ্বাস

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ১০
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনিতে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের বাড়িতে শোকের মাতম এখনো থামেনি। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে পুরো পরিবার যেন শোকে কাতর।

প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার পক্ষ থেকে দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তাসহ নানা আশ্বাস। এ ছাড়া দিপুর পরিবারের জন্য বাড়িতে সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

আজ সোমবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান নিহত দিপু দাসের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তাঁর সঙ্গে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দিপুর পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, শুকনো খাবার ও একটি সেলাই মেশিন পরিবারটিকে দেওয়া হয়। পাশাপাশি দিপুর স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও দেন জেলা প্রশাসক।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সহযোগিতাসহ সব সময় তাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছি।’

উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর রাতে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহে নিহত পোশাকশ্রমিক দিপুর বাড়িতে জেলা প্রশাসক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ঘটনায় নিহতে দিপুর ছোট ভাই অপু দাস ১৯ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় একটি মামলা করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রতিবাদ সমাবেশ

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ভালুকায় দিপু দাস হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ময়মনসিংহ নগরী ও তারাকান্দায় মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। আজ সচেতন ময়মনসিংহবাসীর ব্যানারে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন দিপু দাসের ছোট ভাই অপু দাস, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা আল নুর মো. আয়াস, হৃদয় খান, সাংবাদিক মোজাম্মেল খোকন, কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা প্রমুখ।

একই দাবিতে দিপু দাসের নিজ উপজেলা তারাকান্দায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ফ্রন্ট ও দিপু দাসের পরিবার। আজ সকালে তারাকান্দা বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তারাকান্দা উপজেলা সভাপতি বিজন কুমার ভৌমিক রতন, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত শর্মা সরকার কাঞ্চনসহ দিপুর পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা কারখানার মালিকসহ প্রকৃত দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন এবং দিপু দাসের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যানজটে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় আট দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে শিক্ষার্থীরা রহমতপুর এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে যানজট তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।

ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত সপ্তাহ থেকে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়েছেন তাঁরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) থেকে পৃথক করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করা, সব কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদ শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষণ, ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরিতে ন্যূনতম দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের পর ছয় মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘৯ মাস আগে আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তখন শুধু আশ্বাস দিয়েছিল, বাস্তব কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’ আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আমাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেনে না নেবে, তত দিন ক্যাম্পাস লকডাউন, প্রশাসনিক ভবন বন্ধসহ এই আন্দোলন চলবে।’

এ বিষয়ে রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ কিশোর কুমার মজুমদার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। তবে এসব দাবি বাস্তবায়নের বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এ বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিতাসে শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যায় জামাতা গ্রেপ্তার

হোমনা (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত
মো. জামাল সিকদার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় শাশুড়িকে খালে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি জামাতা মো. জামাল সিকদারকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল রোববার রাতে ঢাকার সাভারে আশুলিয়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। আজ সোমবার সকালে তাঁকে তিতাস থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে তিতাস থানা-পুলিশ দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠায়।

গত ১০ অক্টোবর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে সুফিয়া খাতুন নামে (৭০) এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের জেরে তাঁর জামাতা জামাল তাঁকে বসতবাড়ির কাছে খালে চুবিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে তিতাস থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে পালিয়ে ছিলেন জামাল।

জানা গেছে, জামাল সুফিয়া বেগমের ভাই দিলু সিকদারের ছেলে। তাঁর সঙ্গে সুফিয়ার মেয়ে রহিমা বেগমের বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়ির পাশেই জামালের বাড়ি।

তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, শাশুড়িকে চুবিয়ে হত্যার প্রধান আসামি জামাল উদ্দিন শিকদারকে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় গ্রেপ্তার করে আজ সকালে থানায় আনা হয়। পরে দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত