রাঙামাটিতে দুই পাহাড়ি সংগঠনের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১

রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৪, ১৭: ২৬
আপডেট : ১৮ জুন ২০২৪, ১৮: ২৩

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাটে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস-এমএন লারমা) সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও দুজন। আজ মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম মো. নাঈম (৩৪)। নিহত নাঈম যাত্রীবাহী বাস শান্তি পরিবহনের চালক সহকারী ছিলেন। সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, ৯ জুন বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেএসএস (এম এন লারমা) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী বাঘাইহাট বাজারে অবস্থান নেন। এ দুটি দলের লোকজন বাঘাইহাট বাজারে অবস্থানকালে গ্রামবাসীর ক্রয় করা বাজার নিতে বাধা প্রদানসহ নানা হয়রানি করত। এতে এলাকায় অসন্তোষ দেখা দেয়। 

আজ দুপুরে বিক্ষুব্ধ প্রায় ৭ শতাধিক গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রথমে বাঘাইহাট বাজারে অবস্থিত রাঙ্গুনিয়া হোটেল ঘেরাও করে। সেখানে কাউকে না পেয়ে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেরাও করে। তখন বিদ্যালয়ের ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। 

বাঘাইহাট বাজারের রাঙ্গুনিয়া হোটেল ঘেরাও করে গ্রামবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকাশান্তি পরিবহনের লাইনম্যান নাঈমকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্য দুজন হলেন চিক্কোমনি চাকমা (৩০) ও সোনামণি চাকমা (২৮)। তাঁদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। 

দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডা. জয় চৌধুরী জানান, নাঈম নামে এক ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পর যথাসাধ্য চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁর অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় মারা গেছেন। 

সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান সত্যতা স্বীকার করে জানান, বাঘাইহাট বাজারে সংঘর্ষের সময় একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 

এ ঘটনায় ইউপিডিএফ এক বিবৃতিতে ঠেঙারে বাহিনীকে (ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক) দায়ী করেছে। ইউপিডিএফ বিবৃতিতে বলেছে, ঠেঙারে বাহিনীর গুলিতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়ে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের কাউকে মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। 

লাঠিসোঁটা নিয়ে জেএসএস (এম এন লারমা) ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে ঘেরাওয়ের চেষ্টা করে গ্রামবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘বাঘাইহাটে সংঘর্ষের ঘটনা শুনেছি। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এলাকায় গুজব ছড়ানো হয়েছে আগামী ২৭ জুন স্থগিত হওয়া বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এ তথ্যটি সঠিক নয়।’

উল্লেখ্য, ৯ জুন বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৭ জুন (এম এন লারমা) জেএসএস ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী বাঘাইহাট বাজারে অবস্থান নেওয়ার প্রতিবাদে ইউপিডিএফ ৮ জুন সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেন। এ অবরোধের কারণে নির্বাচন কমিশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত