মতলব উত্তরে প্রচণ্ড গরম-লোডশেডিংয়ে মারা যাচ্ছে মুরগি

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ৫১
Thumbnail image

প্রচণ্ড গরমে নাকাল জনজীবন। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন ও ব্যবসা-বাণিজ্য। তবে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পোলট্রি খামারিরা। দিন ও রাতের বেশির ভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে প্রচণ্ড গরমে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার খামারের বিপুলসংখ্যক মুরগি মারা যাচ্ছে। 

খামারিরা এর জন্য দুষছেন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২কে। কোনো প্রকার রুটিন কিংবা শিডিউল না করে দিন-রাত মিলে ৮-৯ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকা ক্ষতির বড় কারণ বলে জানিয়েছেন খামারিরা। এতে দুপুরের দিকে প্রচণ্ড গরমের কারণে হিট স্ট্রোকে মুরগি মারা যাচ্ছে। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩৫৭টি পোলট্রি খামার রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ব্রয়লার খামার রয়েছে ৩১৫টি এবং লেয়ার ও দেশি মুরগির খামার রয়েছে ৪২টি। তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে প্রতিদিনই এসব খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। খামারের ওপর নির্ভরশীল অনেক খামারি তাই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বিদ্যুতের বিকল্প জেনারেটর না থাকাসহ পর্যাপ্ত আলো-বাতাস খামারে ঢুকতে না পারায় মুরগির হিট স্ট্রোকের প্রধান কারণ। 
 
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, হিট স্ট্রোক কোনো রোগ নয়। গরমের হাত থেকে যদি মুরগিকে রক্ষা করা যায়, তাহলে হয়তো হিট স্ট্রোকে মুরগির মারা যাওয়া ঠেকানো সম্ভব। এ ছাড়া কোনো প্রকার ওষুধ কিংবা চিকিৎসা দিয়ে মুরগি বাঁচানো সম্ভব নয়। বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর দিয়ে মুরগি পালন করা যায়। তবে এতে উৎপাদনে খরচ আরও বেড়ে যাবে। 

ছেংগারচর পৌরসভার ঘনিয়ারপাড় গ্রামের খামারি মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমার খামারে ৩ হাজার ব্রয়লার মুরগি রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় এবং প্রচণ্ড গরমের কারণে গত ছয়-সাত দিনে আমার প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ মুরগি মারা গেছে। এ জন্য আমি মনে করি, লোডশেডিং সর্বোচ্চ দায়ী। যদি রুটিন মাফিক লোডশেডিং হতো, তবু আগাম ব্যবস্থা নিয়ে হয়তো মুরগিগুলো বাঁচানো যেত। 

ওঠারচর গ্রামের খামারি মো. শিপন মিয়া বলেন, গত দুই দিনে হিট স্ট্রোকে আমার খামারের ৯০টি মুরগি মারা গেছে। প্রতিটি মুরগি দুই কেজির ওপরে। গরমের কারণে কোনোভাবেই হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্যান চালিয়েও রাখতে পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে লোকসান কোথায় ঠেকবে বলা মুশকিল। 

লোডশেডিংয়ের বিষয়ে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর মতলব উত্তর জোনাল অফিসের এজিএম রায়হানুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার গ্রাহকের জন্য আমাদের প্রতিদিনের বিদ্যুতের যা চাহিদা, তার মাত্র ৫০ শতাংশ বরাদ্দ পাচ্ছি। এ ছাড়া প্রধান সংযোগ লাইনও মাঝে মাঝে বন্ধ হচ্ছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের উপসহকারী কর্মকর্তা (প্রাণী ও স্বাস্থ্য) পলাশ কুমার দাস বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে শুধু জেনারেটর দিয়ে মুরগি পালন করা কঠিন। এ জন্য এমন স্থানে খামার তৈরি করতে হবে, যাতে সেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আসতে পারে। এ ছাড়া প্রচণ্ড গরমের সময় বিদ্যুৎ না থাকলে মুরগির শরীরে পানি স্প্রে করতে হবে। তাহলে হিট স্ট্রোকে মুরগি মারা যাওয়ার হার কমবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত