Ajker Patrika

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: এমভি রূপসী কার্গো জাহাজ জব্দ

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ২২: ৩৮
শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: এমভি রূপসী কার্গো জাহাজ জব্দ

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় এম এল আশরাফ উদ্দিন নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে ধাক্কা দেওয়া এমভি রুপসি-৯ নামে কার্গো জাহাজটি জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গজারিয়া কোস্ট গার্ডের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার লুৎফর রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া হোসেন্দী সংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে কার্গো জাহাজটিকে জব্দ করে গজারিয়া কোস্ট গার্ড ও নৌপুলিশ। 

এর আগে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর এলাকায় এমভি রুপসি-৯ জাহাজের ধাক্কায় এম এল আশরাফ উদ্দিন লঞ্চটি ডুবে যায়। এতে ১৫-২০ জনের মতো যাত্রী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও বাকিরা নিখোঁজ রয়েছেন। 

জানা যায়, লঞ্চটিতে বেশির ভাগ যাত্রী মুন্সিগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ছিলেন। এখনো পর্যন্ত ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। 

বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা বিভাগ) বাবু লাল বৈদ্য বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একটি জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে গেছে। এখনো অনেকে নিখোঁজ। 

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। 

এদিকে, লঞ্চডুবির সেই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, লঞ্চটিকে ধাক্কা দিয়ে সামনে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিল এম ভি রুপসি নামের মালবাহী কার্গো জাহাজ। একপর্যায়ে লঞ্চটি পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময়ে লঞ্চের অনেক যাত্রীরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই লঞ্চের যাত্রী মোহাম্মদ জনি জানান, একটি কার্গোবাহী জাহাজ পেছন থেকে ধাক্কা দিলে মুহূর্তেই যাত্রী বোঝাই লঞ্চটি ডুবে যায়। পরে আমরা অনেককেই সাঁতরে তীরে উঠতে দেখেছি। তবে অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। লঞ্চে ৭০ জনের মতো যাত্রী ছিল, উপরে যারা ছিলেন তারা সাঁতরে উঠতে পেরেছেন। তবে ভেতরের একজনও বের হতে পারার কথা না। 

 এম এল আশরাফ উদ্দিন লঞ্চে দুর্ঘটনার সময় ছিলেন খানপুর হাসপাতালের কর্মী মোকসেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমাদের লঞ্চটা সামনে ছিল। পেছনে বড় একটা জাহাজ ছিল। পেছন থেকে ওই জাহাজটা আমাগো লঞ্চরে ধাক্কা দিল। এভাবে ১০ মিনিট পর্যন্ত ধাক্কা দিতে দিতে সামনে লইয়া যাইতাছিল। এরপর লঞ্চের পশ্চিম পাশে পানি উইঠে আমাদের লঞ্চটা চোখের সামনে ডুইব্বা গেল। মোকসেদা বাড়ি মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার গণকপাড়া এলাকায়।’ 

আরেক যাত্রী সজীব মাহমুদ। তিনি তেজগাঁও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র। সজিব জানান, সামনেই তার ফাইনাল পরীক্ষা। এ জন্য তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন প্রবেশপত্র আনতে। দুপুর ১.৫৮ মিনিটের দিকে তাদের লঞ্চ নারায়ণগঞ্জ থেকে ছাড়ে। 

 তাঁর ভাষ্যমতে, লঞ্চে ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী ছিল। রোদের কারণে সব যাত্রীরা কেবিনে এবং নিচতলায় ছিলেন। তিনিই একমাত্র লঞ্চের বাইরে ছিলেন। তাঁদের লঞ্চটি কয়লা ঘাট এলাকায় আসার পর পেছন থেকে কার্গো জাহাজটি ধাক্কা দিতে থাকে। তিনি তখনই, প্রবেশপত্র, বই-খাতাসহ পানিতে ঝাঁপ দেন। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন ঝাঁপ দেয়। পরে তাঁরা নদীতে নোঙর করে থাকা বাল্কহেডে ওঠেন। 

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চে যাত্রীরা অধিকাংশই মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা বলে শুনেছি। জরুরি কেউ আহত থাকলে তাঁদেরকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ফায়ার সার্ভিসের একটি দল মুন্সিগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে রাখা হয়েছে। নৌ পুলিশ ও তৎপরতা চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত