ভুল চিকিৎসায় স্থপতি রাজীব আহমেদের মৃত্যুর দাবি পরিবারের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪, ১৭: ০২

চর্মরোগের চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় বুয়েটের ২০০৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী স্থপতি রাজীব আহমেদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে দোষী চিকিৎসকদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানান রাজীব আহমেদের স্ত্রী স্থপতি সারাওয়াত ইকবাল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্থপতি ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক নবী নেওয়াজ খান বলেন, গত দেড় বছর যাবত রাজীব শমরিতা হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এম ইউ কবীর চৌধুরীর অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নতুন ওষুধ সেবন শুরুর করার নয় দিনের মাথায় প্রচণ্ড পেটব্যথা নিয়ে রাজীব ডা. কবীর চৌধুরীর নির্দেশে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি হয়। কবীর চৌধুরী শমরিতা হাসপাতালের একজন ডিরেক্টর। 

নবী নেওয়াজ বলেন, শমরিতায় রাজীবের অবস্থা খুব খারাপের দিকে যাওয়ায় এবং গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা না পাওয়ায় এক দিন পর তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শমরিতায় রাজীবের শিরাপথে ২টি অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্কয়ারে ৮টি অ্যান্টিবায়োটিকসহ মোট ১০টি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। ফলে বহুবিধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং ৪টি অ্যান্টিবায়োটিক কিডনি সংশ্লিষ্ট বিষক্রিয়াও বোধহয় রাজীব আহমেদের অকাল মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করেছে। 

উভয় হাসপাতালেই চিকিৎসা চলাকালীন সময় অব্যবস্থাপনা ছিল এবং কালক্ষেপণ করা হয়েছে অভিযোগ করে নবী নেওয়াজ বলেন, শমরিতায় লিভার এনজাইমগুলোর মাত্রা অনেক বেশি থাকার পরও তাঁরা লিভার ফেইল্যুরের ডায়াগনোসিসকে আড়াল করে অন্য ডায়াগনসিস উল্লেখ করে। স্কয়ার হাসপাতালে শুক্রবার রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ার পরেও কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিদর্শনে আসেননি। 

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তারদের কাছে রাজীবের অবস্থা জানতে চাইলে ডাক্তাররা বারবার ধৈর্য ধরে বিশ্রামের কথা বলেছেন। অথচ রাজীব তখন লিভার ফেইল্যুর থেকে একে একে অন্যান্য অর্গান ফেইল্যুরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এই সম্ভাব্য পরিণতির কোনো আভাসই চিকিৎসকরা রাজীবকে আইসিইউতে নেওয়ার আগে তার পরিবারকে জানাননি। 

সংবাদ সম্মেলনে রাজীবের স্ত্রী স্থপতি সারাওয়াত ইকবাল বলেন, ‘ডা. কবীর চৌধুরী একসঙ্গে তিনজন বা দুইজনকে দেখেন সবসময়। রাজীবের প্রকৃত অবস্থা আমাদের আগে যথাযথভাবে জানানো হলে আমরা তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে পারতাম। এই মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করা হোক।’

রাজীবের ছোট বোন তানিয়া শবনম বলেন, ‘চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় আমার ভাই মারা গেছেন। আমি চাই দোষীদের বিচার হোক, যাতে আর কোনো সন্তান এভাবে তাঁর বাবাকে না হারায়, কোনো বোন তাঁর ভাইকে না হারায়।’

বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি মাহমুদুল ইসলাম জগলুল বলেন, ‘আমরা আশা করি, এ ঘটনার সুবিচার পাব। যদি তা না করা হয় আমরা প্রয়োজনে পথে নেমে আসব। বিএমডিসি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি আমদের প্রত্যাশা তাঁরা সুবিচার করবেন।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত