এ যেন এক অচেনা ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

সড়কের মাঝখানে পুড়ে যাওয়া গাড়ির ভগ্নাংশ। সেই পুড়ে যাওয়া গাড়ির লোহালক্কড় খুলতে ব্যস্ত একদল পথশিশু। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর মুগদার একটি সড়কেই দেখা গেছে এমন চিত্র। শিশু কিশোরেরা বলাবলি করছে, এটা মহানগর দক্ষিণের ৭১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. খায়রুজ্জামান খাইরুলের ব্যক্তিগত গাড়ি। জানা যায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরই বিক্ষুব্ধ মানুষজন আওয়ামী লীগের এই নেতার গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।

একটু সামনে এগোতেই দেখা যায়, মুগদা থানার গেট। গেট তালা দিয়ে দখল করে বসে আছে একদল যুবক। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশ ভ্যানসহ বেশ কিছু গাড়ি। থানার সামনে পাওয়া যায় মুগদার স্থায়ী বাসিন্দা মোবারক হোসেনকে। থানার বিষয়ে জানতে চাইলে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘থানায় আক্রমণের ভয়ে পুলিশ কাল সকালে থানা ছেড়ে চলে গেছে। শেখ হাসিনা গদি ছাড়ার খবর পেয়ে পোলাপান পুলিশের মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে, গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।’

মুগদার প্রধান সড়ক থেকে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের দিকে যে সড়কটি এয়ারপোর্ট দিকে গেছে, সেই সড়কের মাঝখান থেকে লোহার ডিভাইডারগুলো খুলতে ব্যস্ত দেখে মনে হতে পারে এগুলো মেরামতের কাজ করছে, আদতে তা নয়, লোহার বেষ্টনীগুলো ভেঙে ছোট টুকরো করে ভ্যানে রাখা হচ্ছে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কী করছেন জানতে চাইলে তেড়ে এসে বলেন, ‘আপনার কী কাম?’ 

খিলগাঁও ফ্লাইওভার থেকে নেমে রাজারবাগ পুলিশ লাইন ও শাহজাহানপুর মোড়ে আসতে দেখা গেল একদল যুবক নিজ দায়িত্বে ট্রাফিকের কাজ করছেন কারও কারও গাড়ির কাগজ আছে কিনা জানতে চাইছেন, মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট না থাকলে চালকদের সাবধান করছেন। তবে সড়কের কোথাও কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেদের দেখা মেলেনি। মূলত গত কয়েক সপ্তাহের আন্দোলনে পুলিশ সদস্যের প্রাণহানির ঘটনায় থানা নিরাপত্তাজনিত কারণে তারা কেউ কেউ ব্যারাকে ফিরে গেছেন, কেউ কর্মবিরতি দিয়ে বাসায় অবস্থান করছেন।

তবে অফিসপাড়া মতিঝিল ও পল্টনের সড়কেও তেমন মানুষ দেখা যায়নি। সকালে হাতেগোনা যে কর্মকর্তারা অফিসে এসেছেন বেলা ১২টার দিকেই বেশির ভাগই অফিস থেকে বেরিয়ে গেছেন। অফিসপাড়ায় চায়ের দোকানের বেশির ভাগই বন্ধ সকাল থেকে। যে কয়েকটা দোকান খোলা দেখা গেছে সেগুলোতেও খুব নেই লোক সমাগম।

চলমান অচলাবস্থায় ঢাকা মহানগরের গাড়ির খুব একটা চাপ নেই, তবে রাস্তার কিছু মোড়ে ট্রাফিকের কাজ করছে ছাত্র জনতা। পল্টন, কাকরাইলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের লোকেরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন। কোনো কোনো মোড়ে রোবার স্কাউট, স্কাউট ও বিএনসিসির ছেলেরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছে।

গত কদিনে আন্দোলন ও সরকার প্রধানের পদত্যাগে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। অলি গলি থেকে অফিস পাড়া সর্বত্রই অজানা শঙ্কা। রাজধানী ঢাকাও হারিয়েছে চিরচেনা রূপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত