ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়: তাপস 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২২, ২০: ৪৮
আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ২০: ৫৬

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সঠিক তথ্যের প্রয়োজন। রোগীদের সঠিক ঠিকানা পাওয়া গেলে সেখানকার আশপাশের ৩০০ গজের মধ্যে চিরুনি অভিযান চালানো হবে। ইদানীং রোগীদের সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। 

আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ কথা বলেন। 

মেয়র বলেন, ‘বাসা ও চারপাশে জমে থাকা পানি প্রতিদিন ফেলে দিলেই ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।’ 

মেয়র আরও বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে সকালে আটজন লার্ভিসাইড ও বিকেলে পাঁচজন অ্যাডালটিসাইড প্রয়োগ করছে। ওয়ার্ডের কার্যক্রম তদারকির জন্য একজন সুপারভাইজার রয়েছেন। সব মিলে ৭৫টি ওয়ার্ডে এক হাজার ৫০ জন প্রতিদিন মশক নিধনে কাজ করছেন। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত মশক নিধনের কীটনাশক মজুত রয়েছে। মশক নিধনে বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মশার উৎস ধ্বংস করতে হবে।’ 

ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ ও ডেঙ্গু রোগের বিস্তার রোধে সম্মিলিতভাবে ঢাকাবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে এবং তাঁদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সবার ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা, সচেতনতা এবং সম্মিলিত সহায়তা না পেলে এই কার্যক্রম আসলেই অনেক দুরূহ হয়ে যাবে।’ এ সময় তিনি যেকোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে ভালো এবং সুষ্ঠুভাবে মশক নিয়ন্ত্রণ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ‘ছাদ বাগান ডেঙ্গু রোগের বিষফোড়ায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন বাড়ির ছাদ বাগানে অভিযান চালিয়ে এডিসের লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে।’ 

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘বিশ্বে যত মহামারি সৃষ্টি হয়েছে সেসবের অন্যতম কারণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ। একইভাবে ডেঙ্গু রোগের মূল কারণও নগরায়ণ ও জলবায়ু পরিবর্তন। যে কারণে সিঙ্গাপুরের মতো দেশেও ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি।’ 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও গবেষক অধ্যাপক কবিরুল বাশার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘কীটনাশক দিয়ে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। উৎস নিধনই এডিস মশক নিয়ন্ত্রণের সর্বোত্তম ও কার্যকর পদ্ধতি। সেটা আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে।’ 

ডুরা’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জয়শ্রী ভাদুড়ীর সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মো. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) মো. নাজমুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বক্তব্য রাখেন। 

উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৭ জন। এর মধ্যে শুধু রাজধানীতেই ২৬ জন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১১৩ জন। এর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই ভর্তি রয়েছেন ১০৮ জন। 

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২২ জুন পর্যন্ত মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৩৫ জন। আর এ বছর মৃত্যু হয়েছে একজনের। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত