চিকিৎসায় বছরে বিদেশে চলে যায় ৫০০ কোটি ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২: ০৯
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩: ০১

‘পিএইচএ গ্লোবাল সামিট-২০২৪’ এর আহবায়ক ও পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. বাশার এম আতিকুজ্জামান বলেছেন, ‘চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে বছরে ৫০০ কোটি ডলারের মতো দেশের বাইরে চলে যায়। আমাদের অন্যতম দায়িত্ব হলো এই অপচয়টা রোধ করা। টেকনোলজি ডেভলপ করা, ডাক্তারদের ট্রেইন করা, নতুন সার্ভিস লাইন শুরু করা। স্বাস্থ্য সেবার যে বিষয়গুলো দেশে হচ্ছে না, যেসব কারণে রোগীদের দেশের বাইরে যেতে হচ্ছে, সেগুলো যাতে দেশে করা যায় আমরা সেই দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা চাচ্ছি নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে, যাতে তারা দেশের মানুষের জন্য কাজে আসতে পারেন।’ 

আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে ‘পিএইচএ গ্লোবাল সামিট-২০২৪’ এর মূল পর্বের সমাপনী দিনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়া (পিএইচএ) এর চেয়ারপারসন ও ট্রাস্টি ডা. তাসবিরুল ইসলাম, পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. নাসের খান, ডা. মো. জাকের উল্লাহ, ডা. চৌধুরী এইচ আহসান, ডা. শাকিল ফরিদ ও ওমর শরীফ উপস্থিত ছিলেন।

এই প্রথমবারের দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিএইচএ গ্লোবাল সামিট ২০২৪। এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুধু বাংলাদেশে নয়; দক্ষিণ এশিয়ায় এই প্রথম। নয় দিনের এই সম্মেলনে দুই হাজারের অধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও মেডিক্যাল শিক্ষাথী অংশ নিয়েছেন। আজ এই সামিটের সপ্তম দিন এবং দুই দিনের মূল পর্বের সমাপনী দিন। মূল পর্বের সমাপনী পরবর্তী আরো দুই দিনে তিনটি সেশন অনুষ্ঠিত হবে।

ডা. বাশার এম আতিকুজ্জামান বলেন, আমাদের (পিএইচএ) কাজ হলো নলেজ এবং টেকনোলজি ট্রান্সফার করা, একজন আরেকজনের কাছ থেকে শেখা, এবং বিশ্বায়নের যুগে একজন আরেকজনকে সাহায্য করা। 

এই সামিটের প্রাপ্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের যে লক্ষ্য তার চেয়ে বেশি মাত্রায় এই সামিট সফল হয়েছে। আমাদের লক্ষ ছিলো এক হাজার ডাক্তারকে যুক্ত করা। সেখানে দুই হাজার ডাক্তার যুক্ত হয়েছেন। আমি মনে করি এটা একটা বিশাল সাকসেস। আমরা একটা কালচারাল চেঞ্জ আনতে চাচ্ছি। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু আমাদের ড্রিম অনেক বড়। সেই স্বপ্নের জন্য কাজ করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য হলো নলেজ গ্যাপটা কমানো, যাতে আমাদের স্টুডেন্টরা স্বপ্ন দেখতে পারে। সময় লাগবে। কিন্তু আশা করি আমরা সাকসেসফুল হব।’ 

প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়া (পিএইচএ) এর চেয়ারপারসন ও ট্রাস্টি ডা. তাসবিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের সম্মেলন বাংলাদেশ কেন দক্ষিণ এশিয়াতেও হয়নি। আমাদের এই কনফারেন্সের আগে ঢাকার বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ১৬টা কোর্স করিয়েছি। আমার ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ২৩ ফ্রেব্রয়ারি পযর্ন্ত এসব কোর্স করিয়েছি। ২৬ এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি আবার সামিট পরবর্তী দুই দিনের কোর্স করানো হবে। আপনারা দেখবেন আজ একরুমে কথা বলছেন অনকোলজিস্ট, একরুমে কার্ডিওলোজিস্ট, একরুমে সার্জারি ও একরুমে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গাইডেন্স নিয়ে কথা বলছে। এরকম একটা কনফারেন্স ওয়ার্ড হয়েছে কি না আমি চেক করব।’ 

তিনি বলেন, ‘আমার লন্ডন কোর রিভিও কোর্স করিয়েছি। যেটি বাংলাদেশ কেন দক্ষিণ এশিয়াতেও হয়নি। সেই কোর্স আমরা নিয়ে এসেছি ঢাকায়। ইন্ডিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা থেকে এখানে কোর্স করতে এসেছে। এই তিন দেশে কোর্সটি লাইভ টেলিকাস্ট করা হয়েছে। রেডিস্ট্রেশন করেও যারা আসতে পারেননি না তারা ভার্চুয়ারি কোর্সটি করেছেন। এই কোর্সটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় এচিভমেন্ট। যারা এসেছিলেন তাঁরা বাংলাদেশে আতিথেয়তায় মুগ্ধ। আমরা প্রতিবছরই এরকম কনফারেন্সের আয়োজন করব। এ ছাড়া মাঝে মাঝে ঢাকার বাইরে ডে লং কোর্স করাব। নভেম্বরে আমরা চট্টগ্রামে একদিনে আয়োজন করব। খুলনাতে এবং বরিশালেও আমাদের আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা চাচ্ছি বিকেন্দ্রীকরণ করতে। স্টোকের ওপর আমরা ইতিপূর্বে সিলেটে দুই দিনের আয়োজন করেছিলাম।’ 

পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. নাসের খান বলেন, ‘আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক নামকরা প্রফেসর যুক্ত আছেন। তাঁদের পরামর্শ নিয়েই আমরা প্রতিটা পদক্ষেপ নেই। হেলথ কেয়ারে যারা যুক্ত আছেন নার্স-টেকনিশিয়ান বা যেকোনো পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তাঁদের ট্রেনিং ও জ্ঞান আমরা অন্তর্ভুক্ত করতে চাই। আমরা শুধু বিদেশি নলেজে এদেশে নিয়ে আসব তা নয়, বাংলাদেশি ডাক্তারদের অগ্রগতিও আমরা বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে চাই।’ 

পিএইচএ ট্রাস্টি ডা. শাকিল ফরিদ বলেন, ‘দেশের সবগুলো সোসাইটি, কলেজ অব ফিজিসিয়ানস—এ ধরনের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আমরা কাজ করছি। তা না হলে আমরা সাকসেসফুল হতে পারতাম না। এই সামিট স্টুডেন্টদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ তারা একটা প্লাটফর্মের সঙ্গে পরিচিত হতে পারছে, বড় বড় ডাক্তারদের সানিধ্যে আসতে পারছে। এটা তাঁদের ক্যারিয়ারের জন্য খুবই উপকারী।’ 

পিএইচএ ট্রাস্টি ওমর শরীফ বলেন, ‘সকল স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় আমরা পিএইচএকে সাউথ এশিয়াতে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসাবে গড়ে তুলতে চাই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত