মানিকগঞ্জে পদত্যাগ ও হেনস্তার আতঙ্কে শিক্ষকেরা

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
Thumbnail image

জোর করে পদত্যাগ করানোর চাপের পাশাপাশি অপমান আর হেনস্তার আতঙ্কে আছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলার অন্তত ৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক। তাঁদের কেউ কেউ এই ভয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন না। এই তালিকায় প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে শিক্ষক ছাড়া কর্মচারীরাও রয়েছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলের প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে অনেক শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া টানা ১৫ বছর দল ক্ষমতায় থাকায় বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ কমিটির সভাপতির পদ দখলে রাখেন সরকারদলীয় ব্যক্তিরা। শিক্ষকেরাও রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় করেন ব্যাপক অনিয়ম। সম্প্রতি দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। 

বিদ্যালয়ের কমিটিতে থাকা রাজনীতিবিদেরা আড়ালে চলে যাওয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ভার এসে পড়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের ওপর। অনিয়মে জড়িত শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে চলছে আন্দোলন। তবে অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকদের ঢালাওভাবে দায়ী করা হচ্ছে। নিয়ম না মেনে জোর করে তাঁদের তাৎক্ষণিক পদত্যাগে বাধ্য এবং তা না করলে হেনস্তা করা হচ্ছে। নেওয়া হচ্ছে অবৈধ সুযোগ।
৯ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর জিএম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানকে হেনস্তা করে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ এনে স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

১০ সেপ্টেম্বর ঘিওরের বানিয়াজুরী ইউনিয়ন সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রবীন্দ্র নাথ দাসের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে তাঁর কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তাঁর শাস্তির দাবি জানান। তবে অধ্যক্ষ রবীন্দ্র নাথের অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্র লিখে নেন শিক্ষার্থীরা।

এ ছাড়া দৌলতপুরের তালুকনগর ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ও কাকনা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন মিয়ার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে কথা হলে ঘিওর উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার মেহনাফ ফেরদৌস জানান, যদি কোনো বিদ্যালয়ে অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে হবে। সেখান থেকে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

যোগাযোগ করা হলে ঘিওরের ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মাদ্রাসাপ্রধানদের নিয়ে আলোচনা করেছি। শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ ও নানাভাবে হেনস্তা করার ঘটনা ঘটছে, যা কাম্য নয়। শিক্ষক অভিযুক্ত হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক আদেশ আমাদের জানানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত