Ajker Patrika

নারীর জন্য ইনবক্স যখন আতঙ্কের নাম

মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১০: ৪২
নারীর জন্য ইনবক্স যখন আতঙ্কের নাম

ফেসবুক মেসেঞ্জারের ইনবক্সে একের পর এক কুরুচিকর এসএমএস, ফোন নম্বর চেয়ে বার্তা, জবাব না দিলে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করা ছবিগুলো এডিট করে বাজে ছবি বানিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি—এমন সব ঘটনায় ভয় পেয়ে নিজের পুরোনো অ্যাকাউন্টটি ডি-অ্যাকটিভ করেন বর্ণালি (ছদ্মনাম)। এমন ঘটনার শিকার বর্ণালি একা নন। প্রায় সব নারীকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন হেনস্তার শিকার হতে হয় কম-বেশি। এ কারণে অনেক নারীর কাছেই ইনবক্স এক আতঙ্কের নাম। 

তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের জীবনে এসেছে যুগান্তকারী কিছু পরিবর্তন। বিশেষত যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন পৃথিবীর এক প্রান্তে বসে নিমেষেই অন্য প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যেকোনো সময় যোগাযোগ করা যাচ্ছে। ছোট একটি ডিভাইসের মাধ্যমে ঘরে বসে অনায়াসেই পাওয়া যাচ্ছে গোটা বিশ্বের সব খবর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিস্তৃতি এনে দিয়েছে ব্যক্তিক যোগাযোগের এক নতুন যুগ। দিনের যেকোনো সময় ইনবক্সে আসছে পরিচিত-অপরিচিতজনদের বার্তা। কিন্তু এই ইনবক্সই কখনো কখনো আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। 

ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে হরহামেশাই হেনস্তার শিকার হচ্ছেন নারীরা। অনেক সময়ই বিষয়গুলো আর শুধু হেনস্তায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। একধরনের নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি করছে এটি। অনেকের জীবনই গেছে পাল্টে। ভেঙে গেছে কারও কারও সংসার। ছিন্ন হয়ে গেছে পারিবারিক বন্ধন। আর মানসিক সংকট তো রয়েছেই। এই মানসিক পীড়া কখনো কখনো এতটাই বড় আকার নিচ্ছে যে, কখনো কখনো আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটছে। 

একটু পরিসংখ্যানে নজর দেওয়া যাক। নারীদের জন্য নিরাপদ সাইবার স্পেস নিশ্চিতে ২০২০ সালের নভেম্বরে যাত্রা করেছিল বাংলাদেশ পুলিশের সেবা ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’। তাদের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের ফেসবুক পেজে মোট ১৯ হাজার ৮৯৭টি মেসেজ, হটলাইন নম্বরে ৩৫ হাজার ৪০০টি ফোনকল ও ৪৭৭টি ই-মেইল অভিযোগ এসেছে। 

শুরুতেই বলা হয়েছে ভুক্তভোগী বর্ণালির কথা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই নারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার। এ বিষয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘একদিন হঠাৎ আমার এক বান্ধবী ফোনে জানতে চাইল আমার কী হয়েছে। আমার ফেসবুকে নতুন আইডি কেন? ওর কথায় বুঝলাম, আমার নামে ফেসবুকে নতুন আইডি তৈরি করা হয়েছে। এই নতুন আইডি থেকে আমার পরিচিতজনদের বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠানো হচ্ছে।’ 

অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পান বর্ণালি। ভাবতে থাকেন কে এই কাজ করল? ক্ষোভ ও হতাশা গ্রাস করল তাঁকে। কিন্তু ঘটনা আরও বাকি ছিল। হঠাৎ করেই বর্ণালির ইনবক্সে উল্টোপাল্টা এসএমএস আসতে শুরু করল; সঙ্গে হুমকি। বর্ণালির ভাষ্য, ‘হুমকি দিয়ে বলে, ফোন নম্বর না দিলে আমার ছবি এডিট করে বাজে ছবি বানিয়ে ফেসবুকের নানা গ্রুপে পোস্ট দেবে। একপর্যায়ে আমি খুব ভয় পাই। বুঝতে পারছিলাম না কী করব। কার কাছে যাব। একপর্যায়ে আমি আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডি-অ্যাকটিভ করে দিই। পরে আর কখনোই ওই আইডি চালু করিনি।’ 

নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে বর্ণালি বলেন, ‘আজকাল যেভাবে নতুন নতুন উপায়ে সাইবার ক্রাইম হচ্ছে, তাতে মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা কেউই নিরাপদ না। বিশেষ করে নারীরা। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু এ নিয়ে কতজনই-বা প্রতিবাদ করে? অনেকেই হয়তো আমার মতো চুপচাপ নিজেকে গুটিয়ে ফেলে।’ 

আবার অনেকে অপরিচিত নয়, পরিচিতজনদের কাছ থেকেই হেনস্তার শিকার হন। এমনই একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নীলা (ছদ্মনাম)। নারীদের নিয়ে সমাজসেবামূলক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। মতবিরোধের জেরে চাকরি বদলের পর ওই প্রতিষ্ঠানের সহকর্মীরাই তাঁকে হেনস্তা করেন। নীলা জানান, ‘একপর্যায়ে আমার ননদকে ফোন দিয়ে আমার নামে আজেবাজে কথা বলতে শুরু করেন সাবেক সহকর্মীরা। পারিবারিক অশান্তি চরম পর্যায়ে চলে যায়।’ বিষয়টিতে এখনো বেশ ক্ষুব্ধ নীলা বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হলো, এটি কোনো পুরুষের কাজ ছিল না। এটা ছিল ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কিছু নারীর কাজ।’ 

নীলা ও বর্ণালি দুজনই নিজেকে গুটিয়ে ফেলে সংকটের আপাত সমাধান খুঁজেছেন। কিন্তু এই গুটিয়ে ফেলাই কি সমাধান? নিশ্চিতভাবেই না। এমন অনেকে আছেন, যাঁরা এমন হেনস্তার প্রতিবাদ করেন বেশ সোচ্চারে। নিজের হাতে থাকা বিকল্পগুলো ব্যবহার করে হেনস্তাকারীর বিরুদ্ধে দরকারি পদক্ষেপও নেন। এমনই একজন শিউলি (ছদ্মনাম)। পেশায় সাংবাদিক শিউলি এক অদ্ভুত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। ফেসবুকের একটি গ্রুপে তাঁর বিয়ের ছবি ব্যবহার করে ট্রল শুরু হয়। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় এ ঘটনা ঘটে। এক শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছ থেকে বিষয়টি জেনে শিউলি ওই গ্রুপে ঢুকে দেখেন, বিয়ের দিন খাবারের টেবিলের একটি ছবি ব্যবহার করে ট্রল করা হচ্ছে। ওই পোস্টের মন্তব্যের ঘর আজেবাজে মন্তব্যে ভরা। শিউলি তাঁর বরকে জানান। বিয়েতে নিজেদের কাছের বন্ধু ও পরিবারের লোকজন ছাড়া আর কেউ না থাকায় তাঁরা ভেবে পাচ্ছিলেন না, কে করল এ কাজ। গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে জানতে চাইলে তারা বলল—এটা আমাদের গ্রুপ, আমরা যা খুশি তাই করব। পরে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর ছবিটি তারা সরিয়ে ফেলে। 

শিউলি বলেন, ‘কেন অনুমতি ছাড়া আমাদের বিয়ের ছবি এভাবে ট্রল করল? দেশে কি আইন বলতে কিছুই নেই?’ এটাই একমাত্র অভিজ্ঞতা নয়। বর্ণালির মতো তাঁর ছবি ব্যবহার করেও অন্য কেউ অ্যাকাউন্ট খুলেছিল ফেসবুকে। বন্ধুদের মাধ্যমে জেনে পরে রিপোর্ট করে সেই ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেন তিনি। 

পেশাজীবীরাই যেখানে এমন হেনস্তার শিকার হন, সেখানে কিশোরী বা তরুণীদের কথা না বললেও চলে। কম বয়সী মেয়েদের ইনবক্সে এমন হেনস্তা নিয়মিত ঘটনা বলা যায়। এ থেকে বড় বড় অপরাধের ঘটনাও ঘটে। অনেক সময়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় ও ইনবক্সে আলাপের সূত্র ধরে কিশোরী বা তরুণীরা ঘর ছাড়ে এবং পড়ে বড় বিপদে। কারও কারও প্রাণও চলে যায় এতে। এমনই একজন সিদ্ধেশ্বরী কলেজের শিক্ষার্থী রুপা (ছদ্মনাম)। বেশ সচেতন রুপা বললেন, ‘সাইবার বুলিংয়ের কবলে প্রায়ই পড়তে হয়। সমস্যা হচ্ছে, এদের ধরা যায় না। এই ধরতে না পারার যন্ত্রণাও কম না।’ অবশ্য রুপাও নিজের আইডি পাল্টাতে বাধ্য হয়েছিলেন। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়রানির শিকার নারীরা প্রায়ই সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এতে নারীদের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে পরিবর্তন ঘটে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেক সময় আত্মহত্যা করারও সিদ্ধান্ত নেন অনেকে। হয়রানির শিকার নারীদের মানসিক উত্তরণের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরাসরি ইভটিজিং বা যৌন হয়রানির মতোই অনলাইনে হয়রানি সমানভাবে ক্ষতিকর এবং অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। এর প্রতিকারের জন্য আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। যারা অনলাইনে নারীদের কটূক্তি বা অবমানকর মন্তব্য করে। তাদের সুস্থ সামাজিক ও মানসিক বিকাশে ঘাটতি রয়েছে। নিজেদের দীনতা ঢাকতে বিকারগ্রস্ত মনমানসিকতায় তারা অন্যের অপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।’ 

নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এই সংকট ভয়াবহ। নিজের ব্যবসার স্বার্থেই ফেসবুক পেজে নিজের বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ফোন নম্বর দিতে হয়। নিয়মিত ইনবক্স চেক করতে হয়। অপরিচিত ব্যক্তির বার্তা বলে কোনো কিছু এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এরই সুযোগ নেয় হেনস্তাকারীরা। আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে বিভিন্ন লেখায় নানাজন এই অভিযোগ করেছেন। এটা নতুন কিছু নয়। 

নারী উদ্যোক্তা পদ্মাবতীর সঙ্গে কথা হয় এ বিষয়ে। বললেন, ‘অনলাইনে হয়রানি অতি সাধারণ ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যে কত বড় অসামাজিক আচরণ করে, সেটা উদ্যোক্তা না হলে বুঝতে পারতাম না। নিজের অভিজ্ঞতাটা বলি। মেয়েদের পোশাক ও আনুষঙ্গিক জিনিস নিয়ে আমার অনলাইন উদ্যোগ। ব্যবসার প্রয়োজনে ছবি, ফোন নম্বর ইত্যাদি দিতে হয়। কিছু মানুষ একে পাবলিক সম্পত্তি ভেবে নেয়। অপ্রয়োজনীয় ফোন, মেসেজের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় যোগাযোগ নষ্ট হয়। ইনবক্সে আসতে থাকে অতি নোংরা মেসেজ। ক্রেতা সেজে প্রথমে কথা শুরু করে। প্রথম প্রথম খুব হতাশ লাগত। এখন অবশ্য ক্রেতা ও ছদ্মবেশীর তফাত বুঝতে পারি। চোখে পড়লে রিপোর্ট করি। কাজ কতটা হয় জানি না। ফেসবুক পেজ, আইডি, ইনস্টাগ্রাম—সব প্ল্যাটফর্মেই এক অবস্থা। যাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ, তারাও সামাজিক মাধ্যমে অন্যরকম হয়ে যায়।’ 

নিজের বাবার অসুস্থতার সময়ে হওয়া কিছু অভিজ্ঞতাকে সবচেয়ে বাজে বললেন পদ্মাবতী। বললেন, ‘বাবার চিকিৎসার জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে হতো নিয়মিত। তখন অনেকগুলো গ্রুপে আমার নম্বর দিতে হয়েছিল। মানুষের অমানবিকতা দেখে তখন অবাক হতাম। নীরবে চোখের জল ফেলা ছাড়া কোনো উপায় থাকত না। গভীর রাতে ফোন দিয়ে একেকজন একেক কথা বলতে শুরু করত। প্রথমেই রক্ত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। তাই কল কাটতেও পারতাম না। এ রকম কত শতবার হয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। একটা পর্যায়ে মরিয়া হয়ে সবকিছু এড়িয়ে যেতে শুরু করলাম।’ 

এমন উদাহরণ হাজারটা দেওয়া যাবে। এই হেনস্তার ধরনেও আছে ভিন্নতা। পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেনের তথ্যমতে, গত ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জমা পড়া অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগীর ছবি বা পরিচিতি ব্যবহার করে বেনামে আইডি খুলে বা ভুয়া আইডি সংশ্লিষ্ট অভিযোগ ৬ হাজার ৩৭৫টি বা ৪৩ শতাংশ, আইডি হ্যাক ১ হাজার ৫৫৪টি বা ১১ শতাংশ, পূর্বপরিচয় বা সম্পর্কের জেরে বা অন্য কোনোভাবে প্রাপ্ত ছবি, ভিডিও বা তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো বা ব্ল্যাকমেলের অভিযোগ ২ হাজার ২৩৫টি বা ১৫ শতাংশ। আর মোবাইল ফোনে হেনস্তা, লেখা, ছবি বা ভিডিও পাঠিয়ে হয়রানির ১ হাজার ৬৬৬টি বা ১১ শতাংশ, বিভিন্ন মাধ্যমে অশ্লীল শব্দ, লেখা, ছবি বা ভিডিও পাঠিয়ে হয়রানির ১ হাজার ২১৯টি বা ৮ শতাংশ অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরে অন্য ধরনের অপরাধের অভিযোগ রয়েছে ১ হাজার ৬৬৪ টি, যা মোট অভিযোগ সংখ্যার ১২ শতাংশ। 

এই অভিযোগগুলোর ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তিন্নি (ছদ্মনাম) যা বললেন, তা অন্তত আশ্বস্ত করছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হওয়া হেনস্তা ব্যক্তিগত ফোনেও শুরু হলে আর অপেক্ষা না করে তিনি পুলিশকে জানান। পুলিশ তাঁকে হেনস্তাকারীর নম্বর ব্লক করার পরামর্শ দেয় এবং এড়িয়ে যেতে বলে। তিন্নি বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় হলো, এদের শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবেনি পুলিশ। আমার পরিচিত এক আত্মীয় র‍্যাবে ছিলেন। তাঁর মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে শায়েস্তা করা হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে আমি কোনো আইনি সহায়তা পাইনি।’ 

তবে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক মীর আবু তৌহিদ জানালেন, সংস্থাটির তালিকাভুক্ত সেবাপ্রত্যাশীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৮৯৭ জন। এর মধ্যে ১৪ হাজার ৭১৩ জন নারী সাইবার স্পেসে হয়রানির শিকার হয়ে যোগাযোগ করেছেন। এর মধ্যে ৪ হাজার ৪১৬ জন পরে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সর্বমোট ৯ হাজার ৬৫৩ জনের অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ৬৪৪ জনের অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগগুলো তদন্তাধীন। 

নিজেদের সেবা সম্পর্কে মীর আবু তৌহিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেনের পক্ষ থেকে আমরা সব সময় ভুক্তভোগীর সমস্যা সমাধানে সচেষ্ট থাকি। এই ধরনের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা শুরুতে থানায় যেতে চান না। অভিযোগ জানার পর আমরা ধরন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিই। প্রয়োজন অনুযায়ী মামলা, জিডি বা উপযুক্ত আইনি পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিই। ভুক্তভোগীর সঙ্গে থেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। এমনকি আসামি অন্য কোনো জেলায় অবস্থান করলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আসামিকে আটকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রয়োজনে সেখানেও জিডি বা মামলার বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করি।’ তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগ আসেন সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়রানির শিকার হয়ে। কারও হয়তো আইডি হ্যাক হয়েছে, কারও নামে হয়তো নতুন আইডি খোলা হয়েছে, আবার কারও নামে হয়তো অনলাইনে ছড়াচ্ছে বাজে কোনো ছবি। এ ক্ষেত্রে আমরা টেকনিক্যাল সহযোগিতা করি।’ 

সোশ্যাল মিডিয়ায় নারীদের হেনস্তা করা আইনত অপরাধ। হয়রানির শিকার নারীদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ বলেন, ‘অনলাইনে নারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে বা ভুয়া আইডিতে ছবি আপলোড করে হয়রানি করা হয়। এটি আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। ফেসবুক, টুইটার বা অন্য কোনো মাধ্যমে কারও নামে মানহানিকর বা অপমানজনক কিছু লেখা বা প্রকাশ করা বা মন্তব্য করা যেমন অপরাধ, তেমন নিতান্ত বিরক্ত করা, সেটাও অপরাধ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (১) (ক) ধারায় এই ধরনের কাজকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’ 

এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথম অপরাধের জন্য তিন বছর পর্যন্ত জেল ও ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে। আর একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে শাস্তির মাত্রাও বাড়বে। এ ছাড়া টেলিফোনে বিরক্ত করলেও তা টেলিযোগাযোগ আইনের ৭০ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য উল্লেখ করে ইমতিয়াজ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের পুলিশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আছে এ ধরনের অপরাধ তদন্ত করার। কিন্তু থানাগুলোর পরিবেশ নারীদের জন্য সৌহার্দ্যপূর্ণ না হওয়ায় মেয়েরা পুলিশের কাছে যেতে চায় না। আবার আমাদের দেশের নারীরা সাধারণত হয়রানির বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেন না, যেহেতু সমাজের সব স্তরে নারীকে দোষারোপের একটা প্রবণতা আছে। এটা ঠিক নয়। হয়রানির শিকার নারীদের সচেতন হওয়া জরুরি। হয়রানির শিকার নারীটি ভুক্তভোগী। ভুক্তভোগীর তো কোনো দোষ নাই, লজ্জারও কোনো কারণ নাই। এই কথাটা ভুক্তভোগীদের মধ্যে প্রচার করতে হবে। আর সচেতনতা তৈরি করতে হবে নারী-পুরুষ সবার মধ্যে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাণিজ্য থমকে আছে রেললাইনের অভাবে

  • ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি
  • সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়
আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।

দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।

এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।

সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।

জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’

ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া:সেতুর খুঁটি নির্মাণেই মেয়াদ শেষ

  • আমুয়া ইউনিয়নে ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২২ সালে মে মাসে
  • প্রথম দফায় ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বরাদ্দ এবং ওই বছরে ২০২৩ সালের অক্টোবরে কাজ শেষ করার কথা ছিল
  • নকশা পরিবর্তনের কারণে বরাদ্দ বাড়িয়ে ৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা করা হয় এবং মেয়াদ শেষ হয় গত জুনে
  • ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা জেলহাজতে এবং তাঁদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত রয়েছে
আরিফ রহমান, ঝালকাঠি
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার আমুয়া ইউনিয়নে ধোপাবাড়ির খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতু। খুঁটি নির্মাণের পর কাজ বন্ধ রয়েছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার আমুয়া ইউনিয়নে ধোপাবাড়ির খালের ওপর নির্মাণাধীন সেতু। খুঁটি নির্মাণের পর কাজ বন্ধ রয়েছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নড়বড়ে ও ভাঙাচোরা ওই সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী, নারী, শিশু ও হাসপাতালে আসা রোগীরা।

উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুপ্তি কনস্ট্রাকশন এবং কবির ট্রেডার্স যৌথভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায়। সেতুটি নির্মাণে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শুরু হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর নকশা পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৪৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্য মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রায় ছয় মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ খুঁটি পর্যন্তই আটকে আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা জেলহাজতে থাকা এবং তাঁদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত রয়েছে। এ কারণে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রকল্প প্রকৌশলী মিলন ঘরামি ও ব্যবস্থাপক মো. বাহাদুর হাওলাদার জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ পুনরায় শুরু করা হবে এবং তিন থেকে চার মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।

প্রকল্পের অগ্রিম কোনো বিল তোলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অগ্রিম কোনো বিল তোলেনি। তবে কাজের বেশ কয়েকটি মেমো তাঁদের কাছে আছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধোপাবাড়ির খাল অনেক প্রশস্ত। এ জন্য স্থানীয়দের কাছে এটি নদী হিসেবে পরিচিত। খালটি বিষখালী নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালের ওপর দীর্ঘদিন ধরে একটি কাঠের সেতু রয়েছে। এটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। নড়বড়ে হওয়ায় পথচারীরাও অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। সেতুটি শুধু আমুয়া ইউনিয়নের নয়, বরং পুরো কাঁঠালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম। সেতুটিকে কেন্দ্র করে রয়েছে ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলার একমাত্র আমুয়া হাসপাতাল, আমুয়া বন্দর ও তিনটি বড় বাজার। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করছে, যার মধ্যে শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী, নারী ও শিশু রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা আতঙ্ক নিয়ে কাঠের সেতু পার হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে গিয়ে পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

আমুয়ার জনপ্রতিনিধি নকিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বছরের পর বছর কাজ বন্ধ হয়ে আছে।’

শেখ ফজিলাতুন্নেছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভাঙাচোরা কাঠের সেতু দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্রুত কাজ শেষ করা প্রয়োজন।’

কাঁঠালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নিয়মিত তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় কাজ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝালকাঠির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহের নান্দাইল: নদীর জায়গা দখল করে আ.লীগ নেতার মার্কেট

  • নরসুন্দা নদীর পাড় দখলের অভিযোগ
  • কর্তৃপক্ষ বলছে, সওজের জমি। নিজস্ব সম্পত্তি দাবি বাচ্চুর
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে দ্বিতল ভবন। ময়মনসিংহের নান্দাইলের তারের ঘাট বাজার এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে দ্বিতল ভবন। ময়মনসিংহের নান্দাইলের তারের ঘাট বাজার এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।

হাবিবুর রহমান বাচ্চু মুশুল্লি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি তারের ঘাট বাজার পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।

সরেজমিনে দেখা যায়, তারের ঘাট বাজারে নরসুন্দা নদীর ওপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সেতু রয়েছে। সেতুর পশ্চিম পাশে নদীর উপরে নির্মাণ হচ্ছে পাকা ভবন। সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে হাবিবুর রহমান বাচ্চুর ছেলে মো. ফয়সাল ছবি তোলার কারণ জানতে যান। এ সময় তিনি দাবি করেন, নদীর ওপর কোনো মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে না। নিজেদের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে সাবেক এমপি তুহিনের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন হাবিবুর রহমান বাচ্চু। অবৈধভাবে পাথর ব্যবসার পাশাপাশি দখল করেছেন সরকারি জায়গা। ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন। তবে সরকার পতনের পর ভোল বদলে ফেলেন।

নদীর জায়গায় ভবন নির্মাণের বিষয়ে হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘এই জমি আমার নিজস্ব সম্পত্তি। নদীর পাড়ের ভেতরে আমার আরও প্রায় ৫০ ফুট জমি আছে।’ তবে মুশুল্লি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নির্মাণাধীন স্থাপনাটি কোনো ব্যক্তিগত জমিতে নয়। এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে পড়ে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র বসাক বলেন, ‘সড়ক ও সেতুর দুই পাশে সওজের নিজস্ব জমি রয়েছে। সওজের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তদন্তের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে।’

নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা জান্নাত বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কোন্দল, তবু আশাবাদী বিএনপি

  • চার আসনের দুটিতে বিভক্ত বিএনপি
  • ভোটারদের কাছে ছুটছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থীরা
  • তৎপর এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন
  • এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ
হাসান মাতুব্বর, ফরিদপুর
কোন্দল, তবু আশাবাদী বিএনপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের চারটি আসনের সব কটিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন উভয় দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তৎপর এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মতো দলগুলোও। আগামী নির্বাচনে জেলায় অন্তত ৩০ জন প্রার্থী হবেন। তাঁদের মধ্যে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদসহ অন্তত ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।

চার আসনের দুটিতেই বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। তবে চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন। তিনি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ভোটে প্রভাব ফেলবে না। বিভেদ ভুলে

সবাই ধানের শীষের পক্ষেই কাজ করবে।’ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মুহাম্মাদ বদরুদ্দীন বলেন, ‘চার আসনেই আমাদের ভালো অবস্থান রয়েছে। এখন ইসলামি সমমনা ৮ দলের বিষয়ে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটি মেনে নেওয়া হবে।’

ফরিদপুর-১

আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-১ আসন। তিন উপজেলার মধ্যে বোয়ালমারী ও মধুখালীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোট প্রায় সমান। আলফাডাঙ্গায় প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থক। ৫ আগস্টের পর বিএনপির প্রভাব বাড়লেও দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সঙ্গে কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিবাদে নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। গত ৭ নভেম্বর উপজেলা সদরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এর মধ্যে ৪ ডিসেম্বর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে খন্দকার নাসিরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করে বিএনপি। এ ঘোষণায় ক্ষুব্ধ শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থকেরা।

খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বহুদিন পরে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের সুযোগ এসেছে। এটি কাজে লাগাতে দলে কোনো ভেদাভেদ না রেখে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার চেষ্টা করছি।’ শামসুদ্দীন মিয়া বলেন, ‘খন্দকার নাসিরকে মনোনয়ন দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, এলাকায় তাঁর কোনো ভোট নেই। যারা দলকে আজকের পর্যায়ে এনেছে, তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। সমর্থকদের নিয়ে বসে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’

জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মো. ইলিয়াস মোল্যা। নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দলের জেলা আমির মুহাম্মদ বদরুদ্দীন বলেন, একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ইলিয়াস মোল্যার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে মুফতি মো. জাকির হুসাইন কাসেমী, খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি শারাফাত হুসাইন ও ইসলামী আন্দোলন থেকে ওয়ালিউর রহমান প্রার্থী হতে পারেন। এনসিপির মনোনয়ন পেতে পারেন হাসিবুর রহমান অপু। সাবেক ছাত্রদল নেতা আবুল বাসার খান ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ফরিদপুর-২

সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-২ আসন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে এখান থেকে নির্বাচিত হন বিএনপির সাবেক মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান। এবার বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন তাঁর মেয়ে শামা ওবায়েদ। নির্বাচনী প্রচারে বাবার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী নগরকান্দা উপজেলা আমির সোহরাব হোসেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন শাহ আকরাম আলী। ফরিদপুরে তিনি সর্বজনশ্রদ্ধেয় মুরব্বি হিসেবে পরিচিত। ইসলামি বক্তা হিসেবেও তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। শাহ আকরাম আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আলেম-ওলামাদের সমর্থক বেশি। সেই হিসেবে চেষ্টা করছি ইসলামি দলগুলোর একক প্রার্থী হতে। সভা-সমাবেশে যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তাতে আমি বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’

ফরিদপুর-৩

ফরিদপুর সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে ফরিদপুর-৩ আসন। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আসনটি ছিল বিএনপির সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের দখলে। এবার এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তাঁর মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। তবে তাঁকে মেনে নিতে রাজি নন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোদাররেছ আলী ইছার অনুসারীরা। চৌধুরী নায়াব ইউসুফের প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সমাবেশও করেছেন তাঁরা। চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, ‘আমার বাবা এখান থেকে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। এটা প্রমাণিত যে ফরিদপুর সদরের মানুষ বিএনপিকে ভালোবাসে। মানুষ গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি। তারা আবার বিএনপির শাসন ফেরাতে চায়।’

জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আবদুত তাওয়াব নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচারে দখল বাণিজ্য ও চাঁদাবাজিমুক্ত একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ। স্বতন্ত্র হলেও তাঁকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রায় ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। তবে গত ১৯ অক্টোবর তাঁর গণসংযোগে বিএনপি সমর্থকদের হামলার পর তাঁকে আর মাঠে দেখা যায়নি।

খেলাফত মজলিস থেকে আমজাদ হোসাইন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে কামরুজ্জামান ও ইসলামী আন্দোলন থেকে কে এম সারোয়ার মনোনয়ন পেতে পারেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন মোর্শেদুল ইসলাম আসিফ নামের এক তরুণ। হাতেনাতে চাঁদাবাজ ধরে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকায় আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তিনি। ফরিদপুর পৌরসভায় নিজ উদ্যোগে মশকনিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

ফরিদপুর-৪

ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ আসন। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবলু। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ফরিদপুর-২ আসনে হলেও দল তাঁকে এখানে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। তাঁর বিভিন্ন সমাবেশ ও উঠান বৈঠকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের দেখা গেছে। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ভাঙ্গা উপজেলা আমির সরোয়ার হোসেন। সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন তিনি। খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন মো. মিজানুর রহমান মোল্যা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন স্থপতি মুজাহিদ বেগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত