Ajker Patrika

ক‌লে‌জ শি‌ক্ষিকা‌কে চড়-থাপ্পড়, ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

গোসাইরহাট (শরিয়তপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০: ২৯
ক‌লে‌জ শি‌ক্ষিকা‌কে চড়-থাপ্পড়, ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় এক কলেজ শিক্ষিকাকে চড়-থাপ্পড় ও ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দি‌কে উপ‌জেলার আলহাজ্ব সফুরা বেগম মহিলা কলেজের পরীক্ষার হ‌লে এ ঘটনা ঘটে।

সরকারি সামছুর রহমান ক‌লে‌জ শ‌াখা ছাত্রলী‌গের সহসভাপ‌তি মাহবুব তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ এবং পৌর ছাত্রলী‌গের যুগ্ম সাধারণ আ‌তিকুল ইসলাম রাতুলসহ ছাত্রলী‌গের ৭/৮জন নেতাকর্মীর বিরু‌দ্ধে অভিযোগ ওই শি‌ক্ষিকার। থানা-পু‌লিশ ও উপ‌জেলা ‌নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলমগীর হুসাইন ঘটনাস্থল প‌রিদর্শন ক‌রে‌ছেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্ত‌ভোগী ও ক‌লেজ সূ‌ত্রে জানা গে‌ছে, আলহাজ্ব সফুরা বেগম মহিলা কলেজের পরীক্ষা কে‌ন্দ্রে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের অর্থনীতি ও বাংলা পরীক্ষা চলছিল। এ পরীক্ষার কেন্দ্রে পার্শ্ববর্তী সরকারি সামছুর রহমান ক‌লে‌জের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। বেলা ১টায় পরীক্ষা শুরু হয়। আধা ঘণ্টা পর নিজ ক‌লে‌জের ছাত্রছাত্রী‌দের নক‌লে সহ‌যো‌গিতা ও অসাধু উপায় অবলম্ব‌নের জন‌্য সহকারি সামসুর রহমান কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাহবুব তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ এবং পৌরসভার ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম রাতুলসহ সাত-আটজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পরীক্ষার হলে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় পরীক্ষা কে‌ন্দ্রে দায়িত্বরত কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শারমিন রহমান তাঁদের বাধা দেন। তাঁরা তখন ছাত্রলী‌গ প‌রিচয় দেয়। তাতেও ওই শি‌ক্ষিকা তাঁদের‌ ঢুক‌তে নি‌ষেধ ক‌রেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শারমিন রহমানকে চড়-থাপ্পড় ও ধাক্কা দেয়। 

প‌রে বিষয়‌টি ক‌লে‌জের অধ্যক্ষ মো. মকবুল হোসেন শাহকে জানান ওই শিক্ষিকাসহ পরীক্ষা কেন্দ্রের  শিক্ষকেরা।

এর আগেও পরীক্ষার হ‌লে অসদুপায় অবলম্ব‌নে বাধা দেওয়ায় অন‌্য শিক্ষক‌দের‌ হুম‌কি ধম‌কি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন শি‌ক্ষিকেরা। তাঁরা অধ‌্যক্ষ‌কে জানা‌লেও এ বিষয়ে কোনো পদ‌ক্ষেপ নেওয়া হয়‌নি ব‌লে অভিযোগ করেন শিক্ষকেরা। পরীক্ষার কে‌ন্দ্রে পু‌লিশ দা‌য়িত্ব পালন করার কথা থাক‌লেও দেখা তাদের মেলেনি।

অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগী শারমিন রহমান বলেন, ‘পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে ছাত্রলীগের মাহবুব তালুকদার, মাসুম বিল্লাহ এবং আতিকুর রহমান রাতুলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ব‌হিরাগত নেতা-কর্মীরা পরীক্ষার হলে ঢোকার চেষ্টা ক‌রে। আমি ঢুক‌তে বাধা দেওয়ায় মাহবুব তালুকদার আমা‌কে চড়-থাপ্পড় ও ধাক্কা মারে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ফো‌ননম্বরে একাধিকবার করা হলে নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন শাহ বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানার পরে বিকাল ৪টার দি‌কে বিষয়টি ইউএনও ম‌হোদয়‌কে জা‌নি‌য়ে‌ছি।  এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন‌্য প্রস্তু‌তি নি‌চ্ছি।’

গোসাইরহাট থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযোগ পে‌লে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি আলহাজ্ব শামসুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি, আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির সভাপতি দেওয়ান আজমল হোসেন নয়ন ব‌লেন, ‘কারো ব্যক্তিগত অপরা‌ধের দায় সংগঠন নি‌বে না। এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে।  অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে দোষী‌দের ব‌হিষ্কার করবো।’

কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলমগীর হুসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

তবে সন্ধ্যার পরে ইউএনও মো. আলমগীর হুসাইন জানান, বি‌ভিন্ন জায়গায় অভিযান চা‌লি‌য়ে পুলিশ অভিযুক্ত মাহবুব তালুকদারকে আটক ক‌রেছে। প‌রে ভ্রাম‌্যমাণ আদাল‌তের মাধ‌্যমে পাবলিক পরীক্ষায় বাধাদানের দায়ে মাহবুব তালুকদারকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত