অক্সি-মরফোন ওষুধ হিসেবে বাজারে এসে মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ০০: ১০

অক্সি-মরফোন ওষুধ হিসেবে বাজারে এসেছ কিন্তু এটা মাদক হিসেবে গ্রহণ করছে অনেকে। যুব সমাজে এটার সেবন ব্যাপক হারে বাড়ছে। এরই মধ্যে বিশেষ করে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এটার সেবন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। যা কিছুদিন হল গোয়েন্দা পুলিশের নজরে এসেছে।

ভয়ংকর এই ড্রাগ সংগ্রহ করে মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে আসছে একটি চক্র বলে জানতে পারে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। পরে গত ১৯ নভেম্বর রাজধানীর কোতোয়ালি বাবু বাজার এলাকা থেকে এই মাদক সেবনকারী চক্রের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মিন্টু রোড ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার কে এম হাফিজ আক্তার।  

হাফিজ আক্তার বলেন, বাংলাদেশে একমাত্র জিজকা ফার্মেসির উৎপাদনের অনুমোদন আছে। তবুও সেটা বছরে মাত্র পাঁচ লাখ উৎপাদন করতে পারবেন। 

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, জিজকা ওষুধ কোম্পানী এটা উৎপাদন করে বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যবহার করার জন্য। এটা তারা নির্দিষ্ট কিছু প্রতিনিধির মাধ্যমে বিক্রি করেন। এ ছাড়া এই ওষুধটি ডাক্তাররা তাদের নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে রোগীর প্রেসক্রিপশন লিখেন। তবে সেটা ছয় থেকে সাত দিনের জন্য নরমাল ডোজ। অক্সি-মরফোন বেশি দিন নিলেই মানুষের কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। 

ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, এটা সেবনের অভ্যাস হয়ে গেলে আর না খেয়ে থাকতে পারে না সেবনকারীরা, এটা না পেলে তারা যেকোনো ধরনের অপরাধ করতে পারেন। আমরা সতর্ক করে দিতে চাই। এই ওষুধের যারাই নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আছে, বিক্রয় প্রতিনিধি ও বিভিন্ন হাসপাতাল। তারা যেন এটা সাবধানের সঙ্গে ব্যবহার করেন। 

এটা সাবধানের সঙ্গে ব্যবহার করতে না পারলে, যুব সমাজে এটার ব্যবহার বেড়ে গেলে আইন-শৃঙ্খলার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। 

হাফিজ আক্তার বলেন, অক্সি-মরফোন মূলত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (ব্রেইন) এ কাজ করে। তীব্র ব্যথানাশক হিসেবে ক্যানসার, হার্ট, দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী রোগীর তীব্র ব্যথা কমানোর জন্য এটার ব্যবহার করে থাকেন। মরফিন একটি ইউফোরিক ড্রাগ। এ ছাড়া মস্তিষ্কে প্রচণ্ড আনন্দ অনুভূতি তৈরি করে। শরীরে সাময়িকভাবে দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা ভুলিয়ে দেয়। ব্যথার সিগন্যাল গিয়ে মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করতে পারে না। মস্তিষ্ক বোধহীন অসাড় হয়ে যায়। মূলত মাদকসেবীরা অক্সি-মরফোন গুঁড়ো করে যেকোনো সিরাপ ও পানির সঙ্গে মিক্স করে খেয়ে ফেলে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-অক্সি-মরফোন মরফিনের পাইকারি বিক্রেতা আলমগীর সরকার (৫৮) ও জ্রেড ট্রেড ফার্মেসির মালিক খুচরা বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম (৩৪)। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোতোয়ালি থানাধীন মিটফোর্ড ও ধানমন্ডির সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস থেকে ১৩ হাজার পিস ড্রাগ অক্সি-মরফোন ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। 

অক্সি-মরফোন মরফিনের একটি অ্যানালগ, যা একটি এনালজেসিক ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি ইনজেকশন থেকে ওরাল ফর্মে নিয়ে আসা হয়েছে। এই ওষুধ তৈরিতে জিজকার মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ থেকে অনুমোদন নেওয়া। 

জিজকা ওষুধ কোম্পানির সারা দেশে ১২০ জন বিক্রয় প্রতিনিধি (ডিলার) আছে। তবে এর মধ্যে ৫০ জন বরিশাল। যার ২০ জন বরিশাল মেডিকেল কলেজ রোডে। এ ছাড়া খুলনায় ১৭ জন, ঢাকায় ২৭ জন ও রাজশাহীতে ৫ জন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উপ-কমিশনার ফারুক হোসেন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদ, কোতয়ালী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত