ভুল-বোঝাবুঝির কারণে কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়েছে: গণপূর্তমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২৪, ২২: ৪০
Thumbnail image

কোটা সংস্কার নিয়ে যে আন্দোলন হয়েছে— তা নিশ্চয় কিছু ভুল-বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। 

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের সন্তান ও নাতি-নাতনির জন্য সংরক্ষিত ৩০ শতাংশ কোটা কখনোই পূরণ হয়নি। বাস্তবে এটি সাত থেকে আট শতাংশের বেশি হয়নি। এই সাত-আট শতাংশ কোটা পূরণকারী প্রতিযোগীরা প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভায় নিজস্ব যোগ্যতার বলে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এরপরে এসেছে কোটার প্রশ্ন। তথাকথিত আন্দোলনকারীরা এসব বিষয়ে না বুঝেই মাঠে নেমেছে। 

আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে পাক্ষিক ‘মত ও পথ’-এর আয়োজনে ‘সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের সুযোগে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশন সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বিন্যাস করে রায় দিয়েছেন। সে অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন তথা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আর কোনো যৌক্তিকতা নেই। 

গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে বিকৃত করে নিজেদের রাজাকার আখ্যায়িত করেছে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের চেতনাবিরোধী তাদের এই স্লোগান সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। তাদের বুঝতে হবে যে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মানুষ সহ্য করবে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং সুশীল সমাজের কতিপয় সদস্যের নেতিবাচক বিবৃতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যাঁরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কাজ করেছে, সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যারা পিটিয়েছে, তাঁদের হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে, সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়েছে, তাদের সমালোচনা না করে ওনারা বরং নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, অগ্নিসংযোগকারী আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করছেন। এই সহমর্মিতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ তাঁদের হীন উদ্দেশ্যকে প্রকাশ করে। তাঁরা যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তাঁরা যে স্বাধীনতার আদর্শে অনুপ্রাণিত নয়— এতে সেটাই প্রমাণিত হয়।

এই অযৌক্তিক আন্দোলনকে ইস্যু করে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও-পোড়াও সবকিছুর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হওয়া উচিত এবং বর্তমান সরকার তা সঠিকভাবে করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন ‘আমরা একাত্তর’-এর সভাপতি এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী ডাকসুর প্রথম জিএস মাহবুব জামান প্রধান আলোচক হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট-পরবর্তী বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচির স্মৃতিচারণা করেন। 

অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মহসীন হাবিবের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন প্রবীণ সাংবাদিক বিভু রঞ্জন সরকার এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ। বৈঠকে বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক, কবি, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীসহ তিন শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত