নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার রাতেই ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মধ্যরাতে ভিসির বাসভবনের সামনেই অতর্কিত হামলার শিকার হন তাঁরা। সোমবার রাত থেকে এক ভয়ার্ত রূপ ধারণ করে এই ক্যাম্পাসের।
সংঘর্ষের শুরু গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের ওপর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এলে অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগ।
এর কিছু পর কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা নিজেদের সংঘবদ্ধ করে ছাত্রলীগের হামলা প্রতিহত করে। এতে করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পিছু হাটে। এই সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে জড়ো হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক আজকের পত্রিকাকে বলেন, সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার পর আন্দোলনকারীরা সংঘবদ্ধভাবে ছাত্রলীগের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করে। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরাপদ মনে না করায় তাঁরা উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
ঘটনার সময় থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক সংবাদকর্মী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রলীগ এর পর থেকেই বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নেয়। এ জন্য তারা বিভিন্ন হল থেকে কর্মীদের একসঙ্গে হওয়ার আহ্বান করে। ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লিটন তার অনুসারীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে জড়ো হতে থাকে। সে সময় তারা লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রের জড়ো করতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টা ৪০ এর দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সাড়ে ১০টার দিকে উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে আন্দোলনকারীরা তাঁদের বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
এক সংবাদকর্মী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বিষয় দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার খাতিরে ভিসির বাসভবনে অবস্থান নেয়।
একপর্যায়ে রাত ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও বহিরাগতরা সন্ত্রাসীরা মিলে আবারও হামলা করতে পারে এমন খবরে উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে (সীমানা প্রাচীরের মধ্যে) অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে আশ্রয় নেওয়ার ১০ মিনিট পর বাসভবনের সামনে বহিরাগত সন্ত্রাসীসহ শাখা ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রাচীরের মূল ফটকের ওপাশ থেকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে কাচের বোতল ও ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় হামলাকারী ব্যক্তিদের অধিকাংশের মাথায় হেলমেট ও হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এ সময় দুটো পেট্রলবোমা ছুড়তে দেখা যায় তাঁদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, ছাত্রলীগ এর মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়াও বহিরাগত কর্মীদের ক্যাম্পাসে ডেকে আনে। পিকাপে করে আশপাশের গেরুয়া, ইসলামনগর, জামসিং, আশুলিয়া, সাভার এলাকা থেকে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ শুরু করে।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, রাত ১২টা ৪০ এর দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটক ছেড়ে বাসভবন সংলগ্ন মাঠে অবস্থান নেন। অন্যদিকে বাসভবনের প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ অবস্থান নেন। তখনো আন্দোলনকারীরা বাসভবন চত্বরে আশ্রয়ে ছিলেন। এভাবে দুই ঘণ্টা চলতে থাকে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন বাইরে থেকেই বিভিন্ন উপায়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়।
একপর্যায়ে রাত ১টা ৫০ এর দিকে পুলিশের সামনে ফটক ভেঙে বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন হামলাকারীরা। এ সময় বেশ কয়েকটি পেট্রলবোমা ছুড়ে বাসভবনের প্রধান ফটকের লাইটসহ বিভিন্ন লাইট ভাঙচুর করেন তাঁরা। এরপর আন্দোলনকারীদের ব্যাপক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপাচার্য বাসভবনেই ছিলেন। হামলাকারীরা পুলিশের উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালালেও পুলিশ তাঁদেরকে বাঁধা দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পরে হামলাকারীদের কয়েকজনকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, হামলার সময় উপাচার্যের বাসভবনে অনেক শিক্ষক অবস্থান করছিলেন। তাঁরাও হতবাক হয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতরা এভাবে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে ঢুকে কীভাবে হামলা করতে পারে। শিক্ষকদের মারতে পারে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে ও পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার লাইভ ও পোস্ট করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, এমন অবস্থায় সব হল থেকে প্রায় দুই হাজারের মতো শিক্ষার্থী জোট বেঁধে উপাচার্যের বাসার সামনে আসেন প্রতিরোধ করতে। এত এত শিক্ষার্থী দেখে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন পিছু হটতে থাকে। অভিযোগ রয়েছে পুলিশ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পিছু হটতে সহায়তা করেছে।
এ সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল, ছররা গুলি নিক্ষেপ ও পিটুনি দেন। এতে অন্তত শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ছাত্রলীগেরও কয়েকজন নেতা-কর্মীও আহত হয়েছেন। এছাড়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৪-৫ জন শিক্ষক ও ৭ জন সাংবাদিক আহত হন। আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন আর গুরুতর আহতদের সাভারের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রাত পৌনে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের দুটি পক্ষ উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন জানতে পেরে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়। পরে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের হামলায় পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
কী হচ্ছে আজ
আজ মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসের বিশমাইল গেটে বহিরাগতদের প্রায় ১০০ জন অবস্থান নিলে ক্যাম্পাস আবার উত্তাল হয়ে ওঠে। তখন আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে বহিরাগতরা ওই স্থান ত্যাগ করে।
এরপর আশপাশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুপুরের পর ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার রাতেই ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মধ্যরাতে ভিসির বাসভবনের সামনেই অতর্কিত হামলার শিকার হন তাঁরা। সোমবার রাত থেকে এক ভয়ার্ত রূপ ধারণ করে এই ক্যাম্পাসের।
সংঘর্ষের শুরু গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের ওপর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এলে অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগ।
এর কিছু পর কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা নিজেদের সংঘবদ্ধ করে ছাত্রলীগের হামলা প্রতিহত করে। এতে করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পিছু হাটে। এই সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে জড়ো হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক আজকের পত্রিকাকে বলেন, সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার পর আন্দোলনকারীরা সংঘবদ্ধভাবে ছাত্রলীগের হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করে। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরাপদ মনে না করায় তাঁরা উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।
ঘটনার সময় থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক সংবাদকর্মী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ছাত্রলীগ এর পর থেকেই বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নেয়। এ জন্য তারা বিভিন্ন হল থেকে কর্মীদের একসঙ্গে হওয়ার আহ্বান করে। ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লিটন তার অনুসারীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে জড়ো হতে থাকে। সে সময় তারা লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রের জড়ো করতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টা ৪০ এর দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। সাড়ে ১০টার দিকে উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে আন্দোলনকারীরা তাঁদের বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
এক সংবাদকর্মী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বিষয় দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার খাতিরে ভিসির বাসভবনে অবস্থান নেয়।
একপর্যায়ে রাত ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও বহিরাগতরা সন্ত্রাসীরা মিলে আবারও হামলা করতে পারে এমন খবরে উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে (সীমানা প্রাচীরের মধ্যে) অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে আশ্রয় নেওয়ার ১০ মিনিট পর বাসভবনের সামনে বহিরাগত সন্ত্রাসীসহ শাখা ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রাচীরের মূল ফটকের ওপাশ থেকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে কাচের বোতল ও ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় হামলাকারী ব্যক্তিদের অধিকাংশের মাথায় হেলমেট ও হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। এ সময় দুটো পেট্রলবোমা ছুড়তে দেখা যায় তাঁদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, ছাত্রলীগ এর মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়াও বহিরাগত কর্মীদের ক্যাম্পাসে ডেকে আনে। পিকাপে করে আশপাশের গেরুয়া, ইসলামনগর, জামসিং, আশুলিয়া, সাভার এলাকা থেকে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ শুরু করে।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, রাত ১২টা ৪০ এর দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটক ছেড়ে বাসভবন সংলগ্ন মাঠে অবস্থান নেন। অন্যদিকে বাসভবনের প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ অবস্থান নেন। তখনো আন্দোলনকারীরা বাসভবন চত্বরে আশ্রয়ে ছিলেন। এভাবে দুই ঘণ্টা চলতে থাকে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন বাইরে থেকেই বিভিন্ন উপায়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়।
একপর্যায়ে রাত ১টা ৫০ এর দিকে পুলিশের সামনে ফটক ভেঙে বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন হামলাকারীরা। এ সময় বেশ কয়েকটি পেট্রলবোমা ছুড়ে বাসভবনের প্রধান ফটকের লাইটসহ বিভিন্ন লাইট ভাঙচুর করেন তাঁরা। এরপর আন্দোলনকারীদের ব্যাপক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপাচার্য বাসভবনেই ছিলেন। হামলাকারীরা পুলিশের উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালালেও পুলিশ তাঁদেরকে বাঁধা দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পরে হামলাকারীদের কয়েকজনকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, হামলার সময় উপাচার্যের বাসভবনে অনেক শিক্ষক অবস্থান করছিলেন। তাঁরাও হতবাক হয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতরা এভাবে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে ঢুকে কীভাবে হামলা করতে পারে। শিক্ষকদের মারতে পারে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে ও পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার লাইভ ও পোস্ট করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সংবাদকর্মী বলেন, এমন অবস্থায় সব হল থেকে প্রায় দুই হাজারের মতো শিক্ষার্থী জোট বেঁধে উপাচার্যের বাসার সামনে আসেন প্রতিরোধ করতে। এত এত শিক্ষার্থী দেখে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তখন পিছু হটতে থাকে। অভিযোগ রয়েছে পুলিশ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পিছু হটতে সহায়তা করেছে।
এ সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল, ছররা গুলি নিক্ষেপ ও পিটুনি দেন। এতে অন্তত শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ছাত্রলীগেরও কয়েকজন নেতা-কর্মীও আহত হয়েছেন। এছাড়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৪-৫ জন শিক্ষক ও ৭ জন সাংবাদিক আহত হন। আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন আর গুরুতর আহতদের সাভারের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রাত পৌনে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের দুটি পক্ষ উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন জানতে পেরে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়। পরে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের হামলায় পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
কী হচ্ছে আজ
আজ মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসের বিশমাইল গেটে বহিরাগতদের প্রায় ১০০ জন অবস্থান নিলে ক্যাম্পাস আবার উত্তাল হয়ে ওঠে। তখন আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে বহিরাগতরা ওই স্থান ত্যাগ করে।
এরপর আশপাশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুপুরের পর ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা ও ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় শিক্ষকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এই হামলা, লুটপাটের ন্যায়বিচারের দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
১৭ মিনিট আগেছাগলকাণ্ডে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্যপদ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্টের পদ হারানো মতিউর রহমান বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে রিট করেছিলেন। তবে রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
৩০ মিনিট আগেরোববার দিবাগত রাত ১টার পর থেকেই বাস, পিকআপ ও মাইক্রোবাসে করে বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন ঢাকায় আসতে শুরু করেন। রাত ১টা থেকে ভোরে শত শত মানুষ শাহবাগে এসে পৌঁছাতে শুরু করেন। অধিকাংশই জানতেন না কী ঘটতে চলেছে।
১ ঘণ্টা আগেরিকশা-ভ্যানে কোনো চাঁদাবাজি হবে না। গরিবদের কষ্টার্জিত অর্থ কেউ নিতে পারবে না। স্থানীয় লোকাল মাস্তানেরা চাঁদাবাজির টাকা ভাগ করে খায়। যদি পুলিশের কোনো লোক চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তাঁর আর রক্ষা নেই। গরিবের কষ্টার্জিত টাকা কেউ নিলেই ব্যবস্থা...
১ ঘণ্টা আগে