সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বোর্ড থেকে এসএসসির সনদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২১, ১৬: ৫৩
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২১, ১৪: ৫৯

নূর তাবাসসুম সুলতানা, ২০১৯ সালে এসএসসি পাস করেন। গত ২১ আগস্ট ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে একটি এসএমএস পান তাঁর সেলফোনে। সেখানে তাঁর রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঠিক থাকলেও নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম ও জন্ম তারিখ আলাদা। স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করে বুঝতে পারেন তাঁর শিক্ষা সনদটি অন্য কারো নামে বদলে ফেলা হয়েছে। থানা-পুলিশ হয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে বেরিয়ে আসে শিক্ষা সনদ বদলে ফেলা চক্রের সাতজনের। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ডিবি। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-নূর রিমতি, জামাল হোসেন, একেএম মোস্তফা কামাল, মারুফ, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মাহবুব আলম ও আবেদ আলী। 

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার আজ শনিবার দুপুরে সংস্থার মিডিয়ার সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া নূর রিমতি ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। তাঁর ইতালি যাওয়ার জন্য এসএসসি পাসের সনদ প্রয়োজন ছিল। জাল সনদ তৈরি করতে তাঁর মামা জামাল হোসেনের মাধ্যমে একেএম মোস্তফা কামাল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সাড়ে তিন লাখ টাকায় চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী মোস্তফা কামাল শিক্ষা বোর্ডের খণ্ডকালীন কর্মচারী মারুফ এবং দালাল মাহবুব আলম, ফারুক আহম্মেদ স্বপন ও আবেদ আলীদের সঙ্গে চুক্তি করেন। শিক্ষা বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় তাঁরা রেজাল্ট আর্কাইভে পাস করা শিক্ষার্থী নূর তাবাসসুমের তথ্য পরিবর্তন করে নুর রিমতির জন্য জাল সনদ তৈরি করে। শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিমতির তথ্য দেখায়। 

ডিবি কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার বলেন, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা বিভিন্ন পরীক্ষায় পাস করেছেন, তাঁরা শিক্ষাবোর্ডের আর্কাইভে ঢুকে ফলাফল যাচাই করুন। কোনো পরিবর্তন দেখলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ বা পুলিশকে জানান। 

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া মারুফ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে খণ্ডকালীন কাজ করেন। তাঁর মাধ্যমেই সার্ভার থেকে নাম ও রোল পরিবর্তন করা হয়েছে। এই চক্র আরও কয়েকজনের জন্য এমন জাল সনদ তৈরি করে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত। ঘটনায় বোর্ডের আর কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত কি-না তদন্ত করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত