সাভারে ইউপি সচিবকে মারধরের অভিযোগে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৬: ৩৪
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৭: ০৬

সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মান্নান হোসেনের বিরুদ্ধে ওই পরিষদের সচিব মতিউল আলমকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জন্মনিবন্ধন নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার এক দিন পর গত সোমবার আশুলিয়া থানায় মান্নান হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মতিউল আলম। এ ছাড়া লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছেন তিনি।

এদিকে মতিউল আলমের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন মান্নান হোসেন। তিনি বলেন, জন্মনিবন্ধন নিয়ে হয়রানির শিকার জনসাধারণের সঙ্গে তাঁর (মতিউল) ধাক্কাধাক্কি ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে।

মতিউল আলম গত সোমবার থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত রোববার তিনি ইউনিয়ন পরিষদে তাঁর কক্ষে বসে জন্মনিবন্ধনের কাজ করছিলেন। এ সময় মান্নান হোসেন তাঁর কক্ষে গিয়ে কম্পিউটারে কিছু কাজ করে দিতে বলেন। তিনি (মতিউল) তাৎক্ষণিক তাঁর কাজ করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মান্নান ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মান্নান তাঁকে কিল ও ঘুষি মেরে আহত করেন। 

ঘটনার পরপরই বিষয়টি তিনি ইউপি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাহারুল ইসলাম সুরুজকে জানান। আজাহারুল ইসলাম তাঁর কক্ষে ডেকে নিয়ে উভয়ের কথা শুনছিলেন। এ সময় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সেখানেও মান্নান তাঁকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন।

জানতে চাইলে মান্নান হোসেন বলেন, ‘সংশোধনের জন্য পরিষদে প্রায় তিন হাজার জন্মনিবন্ধনের আবেদন পড়ে আছে। এ জন্য প্রতিনিয়তই পরিষদে এসে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আর এই সুযোগে মতিউল আলম তাঁদের কাছ থেকে সরকার-নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকেন। যাঁরা ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা ঘুষ দেন তাঁদেরটা দ্রুত সংশোধন হয়ে যায়। যাঁরা টাকা দিতে পারেন না, তাঁদের দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হতে হয়। এসব নিয়েই কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মতিউলের সঙ্গে জনসাধারণের ধাক্কাধাক্কি ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। অথচ মামলার আসামি করা হয়েছে আমাকে।’

ইউপি চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম সুরুজ বলেন, জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য মতিউল আলম ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে থাকেন। টাকা না দিলে জনসাধারণকে মাসের পর মাস হয়রানির শিকার হতে হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জনতা মতিউলকে মারধর করেন। এ সময় মান্নান হোসেন তাঁকে (মতিউলকে) রক্ষা করার চেষ্টা করেন। 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মতিউল আলম বলেন, মাসখানেক আগেও জন্মনিবন্ধন সংশোধনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম সুরুজ তাঁকে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। মান্নান হোসেনও তাঁর সঙ্গে একাধিকবার অশোভন আচরণ করেছেন। তিনি এসব বিষয়ে লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। 

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযুক্ত মান্নানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, পলাতক থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মান্নান জানান, তিনি পালাননি, বাড়িতেই আছেন। তাঁর হয়ে চেয়ারম্যান বিষয়টি দেখছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, শিমুলিয়া ইউপি সচিবকে মারধরের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত