আনারস কাটার সময় বটিতে উপুড় হয়ে পড়েন তাসমিনা, সেখানেই মৃত্যু

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭: ৫৩

গায়ে প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে ছেলের জন্য আনারস কাটছিলেন তাসমিনা (২৮)। একপর্যায়ে ভারসাম্য হারিয়ে বটির ওপর উপুড় হয়ে পড়েন। গলা বিঁধে যায় বটির সুঁচালো আগা। বাড়িতে কেউ না থাকায় ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের কাপাসিয়ার বারিষাব ইউনিয়নের ভেড়ারচলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাসমিনাকে দাফন করা হয়।

তাসমিনা ওই এলাকার আশরাফুল আলমের স্ত্রী। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে।

তাহমিনার স্বামীর বড় ভাই মো. সিরাজুল আলম জানান, দুদিন ধরে ঠান্ডা জোরে ভুগছিলেন তাসমিনা। জ্বরের জন্য আনারস কিনে নিয়ে আসেন। এই দেখে ছেলে আনারস খাওয়ার বায়না ধরে, কান্নাকাটি করতে থাকে। বাধ্য হয়ে তাসমিনা আনারস কাটার জন্য বটি নিয়ে বসেন। আনারসের খোসা ছাড়ানোর একপর্যায়ে বটির ওপর পড়ে যান তিনি। বটির সুঁচালো মাথা তাঁর গলায় বিঁধে যায়। এ সময় ছেলে তাওহীদ (৫) ছাড়া বাসায় আর কেউ কেউ ছিল না। 

মায়ের এই অবস্থা দেখে যে অংশ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল সেখানে কাপড় চেপে ধরে তাওহীদ। চিৎকার করে কান্না করতে থাকে।

কিন্তু পাশের বাড়িতে উচ্চশব্দে বাজছিল বিয়ের গানবাজনা। ফলে তওহীদের কান্নাও কেউ শুনতে পায়নি। কিছুক্ষণ পরে মায়ের আর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তাওহীদ পাশের বাড়ির লোকজনকে ডেকে আনে।

মো. সিরাজুল আলম বলেন, ‘ছোট ভাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। কর্মস্থল বগুড়ায়। সংবাদ পেয়ে আজ সকালে বাড়ি আসে। ছোট ছেলে তাওহীদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে আমরা জানতে পারি। এ বিষয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই কারও বিরুদ্ধে।’ 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এটি একটি দুর্ঘটনা। বাচ্চাকে আনারস কেটে দিতে গিয়ে অসাবধানতাবশত তিনি বটিতে পড়ে গিয়ে গলার ডানপাশে আঘাত পান। তখন পাঁচ বছরের ছেলে সন্তানটি ছাড়া বাড়িতে কেউ ছিল না। নিহতের স্বামী ও বাবার পরিবারের পক্ষ থেকে কারও কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্তে ছাড়াই মরদেহ দাফন কাজ সম্পন্ন করার হয়।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত