৩৪ দিন সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, কৌশলে পালালেন তরুণী 

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২১, ২১: ৫৮
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২১, ২২: ১৫

প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩৪ দিন আটকে রেখে এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের  অভিযোগ উঠেছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে। পরে ওই কিশোরীকে ভারত পাচারের উদ্যোগ নেয় পাচারকারী দলের সদস্যরা। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসে ওই কিশোরী এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন তিনি। 

এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা জুলহাস শেখ বাদী হয়ে আল আমিনকে প্রধান আসামি করে ট্রাক চালক মাসুম, আসকর মল্লিক, নজরুল মল্লিকসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে রোববার টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। 

কিশোরী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ভূঞাপুরের একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে ওই কিশোরী। মোবাইলের মাধ্যমে তার পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল উপজেলার গৌরিশ্বর গ্রামের আসকরের ছেলে আল আমিনের (২৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২১ জুলাই কোরবানির ঈদের দিন বিকেলে ওই কিশোরী তার মায়ের সঙ্গে নানার বাড়ি ভূঞাপুরের পৌর এলাকার তেঘরী গ্রামে যায়। সেখান থেকে আল আমিনের টেলিফোন পেয়ে নানার বাড়ি থেকে আল আমিনের সঙ্গে ঘাটাইল উপজেলার চেংটা গ্রামে যায়। আল আমিন তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই বাড়িতে রেখে একটানা ২৫ দিন ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ১৫ আগস্ট সে তার আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে আসে। বাসস্ট্যান্ডে আল আমিনের বন্ধু পাচার চক্রের সদস্য ট্রাক ড্রাইভার মাসুদের ট্রাকে তুলে দেয়। ১৬ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরীকে। সেখানে তিন-চারজন মিলে মেয়েটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে তিন-চারজন লোকের আলাপচারিতায় মেয়েটি বুঝতে পারে যে তাকে ভারতে পাচার করার পরিকল্পনা করছে। পরের দিন সে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে ২৫ আগস্ট রাত ৮টার দিকে ওখান থেকে পালিয়ে রিকশাযোগে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ড আসে। পরে সেখান থেকে ২৬ আগস্ট বাড়িতে চলে আসে। 

ভুক্তভোগী কিশোরীর পিতা বলেন, আমার মেয়েটি বাড়িতে আসার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পল্লী চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের ঘটনা অবহিত করি। পরে আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে গত ১০ সেপ্টেম্বর আমার মেয়েকে নিয়ে ভূঞাপুর থানায় একটি অভিযোগ করতে যাই। ভূঞাপুর থানা-পুলিশ অভিযোগ শুনে মামলা গ্রহণ না করায় আমি আল আমিনকে প্রধান আসামি করে ট্রাক চালক মাসুম, আসকর মল্লিক, নজরুল মল্লিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ-ছয় জনের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করি। 

তবে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুল ওহাব জানান, এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। 

এদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী আকবর হোসেন রানা জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবি টাঙ্গাইলকে তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। 

মামলার বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এ ধরনের কোনো মামলা এখনো হাতে আসেনি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত