এবার সেই মাদক কারবারির ঘর খুঁড়ে মিলল মানব কঙ্কাল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ১১ জুন ২০২৪, ২১: ৪৫
Thumbnail image

সাভার পৌর এলাকার আনন্দপুরে সেই মাদক কারবারি স্বপন মিয়ার বাড়ি থেকে কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঘরের মেঝে খুঁড়ে এসব উদ্ধার করা হয়। সেখানে কাপড় দেখে সেটি এক বছর আগে নিখোঁজ পোশাক শ্রমিক তোফাজ্জল হোসেন টোটনের কঙ্কাল বলে দাবি করেছেন তাঁর স্বজনেরা।

এর আগে গত ৬ জুন বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগরে স্বপনের অপর একটি বাড়ির পাশ থেকে পুলিশের তথ্যদাতা সীমা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকেও হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।

নিহত পোশাক শ্রমিক তোফাজ্জল হোসেন (২৮) ইমান্দিপুর চৌরাস্তার সালামত মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।

তোফাজ্জল হোসেনের চাচা ব্যবসায়ী উচমান গনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০২৩ সালের ১৯ আমার ভাতিজা তোফাজ্জল হোসেন নিখোঁজ হন। এর আগের দিন মাদক কারবারি স্বপন মিয়া ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে তোফাজ্জলের মারামারি হয়। স্বপনের মাদকের কারবারের প্রতিবাদ করাকে কেন্দ্র করে মারামারির সূত্রপাত হয়েছিল। নিখোঁজের পর খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওই বছর ২১ এপ্রিল সাভার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। এর এক বছর পর আজ মঙ্গলবার স্বপনের ঘরের ভেতর থেকে তোফাজ্জলের কংকাল উদ্ধার করল পুলিশ।’

স্বপনের ঘনিষ্টজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে স্বপন মিয়া সাভার পৌর এলাকাসহ বিরুলিয়াতে মাদকের কারবার করে আসছিলেন। বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হামিদ মিয়াসহ কতিপয় প্রভাবশালী তাঁকে প্রশ্রয় দিয়ে আসছিলেন। তাঁর (স্বপন) স্ত্রী পপি আক্তার ও জনৈক সাইফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন তাঁকে মাদক বিক্রিতে সহায়তা করতেন। মাদকের কারবার করে তিনি (স্বপন) পৌর এলাকার আনন্দপুর ও বাড্ডা এবং বিরুলিয়ার খনিজনগরসহ ধামরাইয়ে পাঁচটি বাড়ি করেছেন। আনন্দপুরে যে বাড়ি থেকে কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে দুই বছর আগে স্বপন ওই বাড়িটি ৬০ লাখ টাকায় ক্রয় করেছিলেন।

কঙ্কালের উদ্ধারের পর তোফাজ্জল হোসেন টোটনের স্ত্রী রানী বেগমের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা নিহত তোফাজ্জল হোসেরনের বোন পূর্ণিমা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বপন আনন্দপুরের দ্বিতীয় তলার বাড়িতে থেকে মাদক বেচাকেনা করতেন। অনেক রুম খালি থাকার পরও তিনি কাউকে ভাড়া দিতেন না। আমার ভাই নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে স্বপন ওই বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হতো আমার ভাইকে হত্যার পর লাশ ওই বাড়িতেই লুকিয়ে রাখা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে বারবার জানানোর পরেও লাশ উদ্ধারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পুলিশের সোর্স সীমা বেগম হত্যার ঘটনায় প্রযুক্তির সহয়তা নিয়ে প্রথমে মাদক কারবারি স্বপনের সহযোগী সাইফুল ইসলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে দেওয়ার তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী উদ্ধার করা হয় সীমার লাশ। সীমা হত্যার ঘটনায় সাইফুল ও স্বপনসহ পাঁচজন জড়িত ছিলেন। পরে স্বপনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাঁর ঘরের মেঝে খুঁড়ে আজ মঙ্গলবার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। কঙ্কালের সঙ্গে থাকা জামা দেখে স্ত্রী রানী বেগম কঙ্কালটি তাঁর স্বামী তোফাজ্জল হোসেনের বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।’

এসপি আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, ‘স্বপনকে আটকের সময় তাঁর কাছে একটি বিদেশি রিভলবার পাওয়া যায়। তিনি একজন সিরিয়াল কিলার ও মাদক কারবারি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত