Ajker Patrika

নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি দিলেন গাজীপুরের নৌকার মেয়র প্রার্থী আজমত

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ মে ২০২৩, ১৮: ২৪
নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি দিলেন গাজীপুরের নৌকার মেয়র প্রার্থী আজমত

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান সিটি করপোরেশনের অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি এই সিটিকে উন্নয়নের মডেল বানানোর কথাও বলেছেন। আধুনিক ও জনবান্ধব সিটি করপোরেশন গড়তে নগরীর উন্নয়নের নানা পরিকল্পনা তুলে ধরে ২৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন তিনি।

আজ রোববার বেলা পৌনে ১১টায় মহানগরের রাজবাড়ী সড়কের প্রকৌশলী ভবনে তিনি তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন। আশা প্রকাশ করে বলেন, তিনি নির্বাচিত হতে পারলে জীবনের নানা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নগরবাসীকে দেওয়া ওয়াদা পালন করবেন।

আজমত উল্লা তাঁর ইশতেহারে উল্লেখ করেন, একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, ব্রিজসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সেবামূলক খাতগুলোকে আরও শক্তিশালী করে সেবার মানকে সুনিশ্চিত করতে এক বছর, দুই বছর ও পাঁচ বছর মেয়াদবিশিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন তিনি।

প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, সিটি মাস্টারপ্ল্যান এবং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ সুষম নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দিয়েছেন এই ইশতেহারে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে অভূতপূর্ব উন্নয়নযাত্রা শুরু করেছেন, তার সঙ্গে সংগতি রেখে আধুনিক মহানগর ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি কাজ করবেন। 

তা ছাড়া নগরের উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে ‘পরামর্শক কমিটি/নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি’ গঠন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তাঁদের পরামর্শ ও সুপারিশের ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভিজ্ঞ নগরবিদ ও প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে বিশ্বমানের একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে জনগণের সেবা নিশ্চিত করা হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, নাগরিক সনদসহ বিভিন্ন সনদের ফি, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি অনলাইনের মাধ্যমে পরিশোধের ব্যবস্থা, ওয়ার্ডগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা এবং ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন করার উদ্যোগ গ্রহণের কথা উল্লেখ করেছেন ইশতেহারে। 

হোল্ডিং করের বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, নাগরিকদের হোল্ডিং করের হার না বাড়িয়ে রিভিউ বোর্ডের মাধ্যমে সহনশীল পর্যায়ে চূড়ান্ত করা সরকার কর্তৃক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা যথাযথভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে প্রদান করা হবে। 

মহানগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য সব নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ, স্বল্পমূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া, দুস্থ ও অসহায় মানুষের মৃত্যুর পর প্রয়োজন অনুযায়ী কাফনের কাপড়ের ব্যবস্থা করা এবং সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিসহ অন্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে শ্রমিক, বস্তিবাসী ও দরিদ্র মানুষের জন্য বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ইশতেহারে। 

নগরের পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে সব নাগরিকের সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার জন্য ‘জিআইএস’ পদ্ধতি অবলম্বন করে সার্ভের মাধ্যমে ড্রেন ও খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে উপযোগী করে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রতিবন্ধী নাগরিক এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। 

গুরুত্ব বিবেচনায় সড়ক উন্নয়ন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্টজনদের নামে রাস্তার নামকরণ ও নির্মাণকাজের গুণগতমান নিরীক্ষার জন্য শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন করা হবে। 

নগরের যানজট নিরসন, পার্কিং, ফুটপাতসহ যোগাযোগব্যবস্থার আধুনিকীকরণ করা হবে। পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাত নেটওয়ার্ক, যানজট নিরসনের জন্য বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ এবং পরিবহন মালিক, সমিতি, শ্রমিক সংগঠনসহ অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ, নতুন ফুটওভার ব্রিজ, আধুনিক বাসস্ট্যান্ড ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাগরিকদের রেলে যাতায়াত সহজীকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। 

অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ের ওপর ফ্লাইওভার নির্মাণসহ সরকারের সহযোগিতায় সমগ্র গাজীপুরে সংযোগ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণের কথা উল্লেখ আছে ইশতেহারে। 

শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রয়োজনে জিসিসির অধীনে কারিগরি ও অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। নগরীতে অবস্থিত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোতে সাহায্য প্রদান করা হবে। এ ছাড়া অনাথ, গরিব, যোগ্যতাসম্পন্ন মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব পাঠাগারের আধুনিকীকরণ, নতুন পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারগুলোকে সহায়তা প্রদান করা হবে। 

পোশাকশিল্পসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার সংরক্ষণ ও নির্যাতন প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। শ্রমজীবী মায়ের শিশুদের পরিচর্যার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ডে-কেয়ার’ সেন্টার স্থাপন এবং বিকেল ৫টার পর তাঁরা যেন টিসিবির সরবরাহকৃত খাদ্যসামগ্রী পেতে পারেন—সেই উদ্যোগসহ সরকার ও মালিকপক্ষের সহযোগিতায় বেতন-ভাতাদি, নিরাপত্তা, বাসস্থান ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সহায়তা প্রদান করা হবে। গাজীপুর মহানগরীর সব বস্তিবাসীর প্রাপ্ত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। শিল্পমালিক ও ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে জিসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে হেল্পডেস্ক স্থাপন করা হবে। 

তরুণদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি ও উন্নত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের লক্ষ্যে এবং বয়স্ক ও শিশুদের মিলনস্থল ও বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘ওয়ার্ড সেন্টার’ নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সেগুলোতে কমিউনিটি সেন্টার, সেবাদান কেন্দ্র, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, শিল্পকলা শিক্ষাকেন্দ্র, পাঠাগার প্রতিষ্ঠাসহ বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করা হবে। ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরির মাধ্যমে নাগরিক সেবা ও নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং স্মার্ট নেইবারহুড কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত পাড়া উৎসবসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে ইশতেহারে। 

বর্জ্য ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে বর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্র স্থাপন এবং বর্জ্যকে জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ, প্রতিটি ওয়ার্ডে বর্জ্য সংরক্ষণকেন্দ্র স্থাপন, নতুন অডিটরিয়াম এবং কালচারাল কমপ্লেক্স, মুক্তমঞ্চ নির্মাণসহ মিলনয়াতনগুলো সংস্কার, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে সহযোগিতার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে শিল্পকলা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন। 

ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জন্য উপযুক্ত মাঠ তৈরি করা, মেয়র গোল্ডকাপ ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতার উদ্যোগ গ্রহণ এবং কারাতে, সাঁতারসহ বিভিন্ন খেলার উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ, গাজীপুরে অবস্থিত প্রেসক্লাবগুলোর উন্নয়ন ও সংবাদকর্মীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকেরা যেন কোনো হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে ইশতেহারে। 

মহানগরের বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সামাজিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান, প্রতিবন্ধী ও বিশেষ শিশুদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, ভবঘুরে ভিখারিদের পুনর্বাসন ও সুবিধা বাতা ও প্রতিবন্ধী যুবক/যুব মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণের উদ্যোগ, সংস্কার ও উন্নয়ন করাসহ নতুন পার্ক নির্মাণ, শিশুদের জন্য বিশেষায়িত পার্ক নির্মাণ এবং নদীসংলগ্ন স্থানকে নান্দনিক, পায়ে হাঁটা ও বিনোদন উপযোগী করার পদক্ষেপ গ্রহণ। 

প্রতিটি ওয়ার্ডে ঈদগাহ ও কবরস্থান নির্মাণ, শ্মশানগুলোর উন্নয়ন ও নির্মাণ, নগরীর উপযুক্ত স্থানে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য সমাধিক্ষেত্র তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ, আলেম-মাশায়েখসহ সব ধর্মীয় নেতাকে সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গির্জায় সহায়তা প্রদান করা হবে। 

নগরীর জলাশয় দখলমুক্তকরণ, নদী ও পরিবেশ রক্ষা, মশকনিধনে পরিবেশ অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট শিল্প-কলকারখানা, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও স্থানীয় অধিবাসীদের সহযোগিতা নদী ও জলাশয়কে দখলমুক্ত, দূষণমুক্ত ও সংস্কারের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ এবং নগরীর উপযুক্ত স্থানে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ব্যবস্থার কথা আছে ইশতেহারে।

মহানগরের সব কাঁচাবাজার ও মার্কেটের আধুনিকায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ফ্রাইডে মার্কেট স্থাপন করার উদ্যোগ, পরিবেশবান্ধব আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ এবং নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হবে।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ, সম্প্রীতি রক্ষা ও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ, গাজীপুরের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য জাদুঘর ও আর্ট গ্যালারি স্থাপনের উদ্যোগ, মাদকসেবীদের সুচিকিৎসার ও সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে এনে কর্মসংস্থানের এবং মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আধুনিক বিপণিবিতান তৈরি এবং যুব নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এবং প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে গাজীপুরে বিনিয়োগে উৎসাহিত করাসহ নতুন আয়ের উৎস তৈরি করার কথা বলা হয়েছে ইশতেহারে। 

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। সিটি করপোরেশনের প্রতিটি বিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত রেখে জিসিসির সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। ‘জনতার মুখোমুখি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহানগর ও ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

ইশতেহার ঘোষণার অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লা মণ্ডল, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজ উদ্দিন মিয়াসহ মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও নগরীর সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত