Ajker Patrika

ঢাবির ফজলুল হক হলে ‘সিট দখল’ নিয়ে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, আহত ১৫

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১: ২৭
ঢাবির ফজলুল হক হলে ‘সিট দখল’ নিয়ে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, আহত ১৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ে (দক্ষিণ ভবন) সিট দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শয়নের অনুসারীদের সম্মিলিত গ্রুপ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে মূল ভবনে হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের কক্ষে (২০১) ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহত হিসেবে প্রাথমিকভাবে হল ছাত্রলীগ নেতা ইমামুল হাসান, মাহমুদুল হাসান, পারভেজ রেদোয়ানুর, শাহরিয়ার হাসান কল্লোল, সাদমান রিসান এবং হাসিবুল হাসান শাহেদের নাম পাওয়া গেছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন হলের একাধিক শিক্ষার্থী। 

দফায় দফায় সংঘর্ষে ছাত্রলীগের অন্তত ১৫ নেতা কর্মী আহত হয়েছেন। ছবি: আজকের পত্রিকাআবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি আবাসিক হলে সিট বরাদ্দে প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। হলগুলোতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের একাধিপত্যের ভিত্তিতে সিট ভাগ–বাঁটোয়ারা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হওয়ার পর চারজন নেতাকে কেন্দ্র করে হলগুলোতেও নতুন নতুন পক্ষ তৈরি হয়েছে। আসন বাঁটোয়ারা নিয়ে নিয়মিতই দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে গ্রুপগুলো। 

ঘটনার বিষয়ে জানতে সরেজমিনে হলের ডজনের বেশি শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের। 

তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকতের অনুসারীদের অবস্থান শক্ত। এতে বাকি গ্রুপগুলো এককভাবে সৈকতের গ্রুপের সঙ্গে পেরে উঠছে না। বিভিন্ন সময় সৈকত গ্রুপের কর্তৃত্বের কাছে নতি স্বীকার করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি এক জোট হয় তারা। 

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে সম্মিলিত গ্রুপের নেতা-কর্মীরা দক্ষিণ ভবনের ৫০০৬ নং কক্ষে থাকা সৈকতের অনুসারী সাব্বির অনিককে সিট থেকে নামিয়ে দেন। এর থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরে হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু নাঈমের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তাঁরই কক্ষে হামলা চালান সৈকতের অনুসারীরা। 

ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমের কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাহলের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে দুই পক্ষই কর্মী ও অনুসারীদের ভবনের সামনে খোলা স্থানে জড়ো করে। এ সময় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল থেকে সৈকত গ্রুপের মাজহারুল ইসলাম আকাশের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা এসে হলের বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর করেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আকাশ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, নাঈমের কক্ষের দরজার কাচ ভেঙে পড়ে আছে, কক্ষের ভেতরে তছনছ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন নাঈম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিভিন্ন হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে আমি একটি “হাঁস পার্টির” আয়োজন করেছিলাম। রাত দেড়টার দিকে আমার রুমে অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক শীর্ষস্থানীয় চার নেতাকে (সাদ্দাম, ইনান, শয়ন ও সৈকত) এবং হল প্রশাসনকে জানাই। যাঁরা আমার রুমে হামলা করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করেছি।’ হত্যাচেষ্টার মামলা করবেন বলেও জানান নাঈম।

সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে জেনেছি। হল প্রশাসন বিষয়টি দেখবে, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।’ 

হল ছাত্রলীগের নেতা শাওন চৌধুরী, জিহাদুল ইসলাম, আসাদুল্লাহ আসাদ, আল-কাওসার, মাহিদুর রহমান বাঁধন ও সানজিদ হোসেন হলে সৈকতের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। ঘটনার বিষয়ে সানজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নাঈম ভাই আমাদের সভাপতি, শ্রদ্ধার মানুষ। তাঁর কক্ষে হামলা করার প্রশ্নই ওঠে না। হলের বাকি গ্রুপগুলো এক হয়ে আমাদের গ্রুপের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে, আমাদের এক কর্মীকে রুম থেকে বের করে দিয়েছে।’ 

ফিরোজ কবির, মাসুদ রানা, শাফিনুর রহমান, ফয়সাল হক জামি ও জাহিদ হাসান রুবেল হলে শেখ ইনানের গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন। জাহিদ হাসান রুবেল বলেন, ‘সৈকত ভাইয়ের গ্রুপের নেতা-কর্মীরা হলে বিভিন্ন সময় ঝামেলা করেন, মারধর করেন, সিট থেকে নামিয়ে দেন। তাই আমরা বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করলে তাঁরা আমাদের কক্ষ ভাঙচুর ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন।’ 

অপর দিকে রবিউল ইসলাম রবি, হুমায়ুন কবির সবুজ এবং মাকফুর রহমান সাদ্দাম হোসেনের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ‘৩০১০ নম্বর পলিটিক্যাল রুমে তারা তাদের অনুসারীকে তোলে। আমরা ঝামেলায় জড়াইনি, ম্যান পাওয়ার কম। ৪০০১ রুমে এক বড় ভাইকে নামিয়ে দিতে চায়। ১০১৫ রুমে আমাদের ছেলেকে বের করে দেয়। বেড বাইরে ফেলে দেয়। ৫০০৬ নম্বর রুমে যেকোনো সময়ে ছোট ভাইদের নামিয়ে দিচ্ছে, রুম থেকে বের করে দেয়। সব সময় আমরা হুমকির মুখে থাকি।’ 

সোমবার মধ্যরাতে ফজলুল হক হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: আজকের পত্রিকাহলে শয়নের অনুসারী মাইনুদ্দিন চৌধুরী বাপ্পী বলেন, ‘সৈকত ভাইয়ের গ্রুপের লোকজন দক্ষিণ ভবন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। নিয়ন্ত্রণের জের ধরে এককভাবে বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে ঝামেলা করেন, তাই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি।’ 

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগে অপরাধীর কোনো স্থান নেই। ফজলুল হক মুসলিম হলে যে বা যারা অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যেন বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয় তার অনুরোধ থাকবে। পাশাপাশি ছাত্রলীগও তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘ছাত্রলীগে গ্রুপভিত্তিক রাজনীতি কখনো কাম্য নয়, সকলেই ছাত্রলীগের কর্মী। গতরাতে যে ঘটনা ঘটেছে তার কোনো পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না। তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

ঘটনা সম্পর্কে জেনেছেন এবং হল প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মাসুম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো কার্যালয়ে পুলিশের ব্যারিকেড, সিআইডির নমুনা সংগ্রহ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয় ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয় ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী কারওয়ান বাজারে আগুনে পুড়ে যাওয়া দৈনিক প্রথম আলোর কার্যালয় ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এর মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ভবনের সামনে চারপাশে হিসেবে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে।

আজ শুক্রবার সকালে জমিনে দেখা গেছে, প্রথম আলো চারতলা ভবনটির প্রতিটি ফ্লোরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের সদস্যরা ভবনটির চারপাশে ঘিরে রাখে।

সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ জানান, তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করার জন্য প্রথম আলো ভবনে এসেছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে কারওয়ান বাজারে দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এ সময় সরেজমিনে দেখা গেছে, একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রথম আলোর কার্যালয়ে আসেন। তারা প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপর কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। ভবনের সামনে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এর পরপরই ডেইলি স্টার ভবনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিসংযোগের পর ভবনের ভেতর ৩০-৩৫ জন সাংবাদিক ও কর্মী আটকা পড়েন। বিক্ষোভের শুরুতেই রাত ১০টার সময় ফার্মগেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তেজগাঁও স্টেশন থেকে কয়েকটি ইউনিট ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে দিকে রওনা হয়। তবে তাদের বাধা দেন বিক্ষুব্ধরা। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ডেইলি স্টার ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদগঞ্জে আলাদা স্থান থেকে ঝুলন্ত দুই মরদেহ উদ্ধার

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে আলাদা স্থান থেকে দুটি ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রাম ও রূপসা উত্তর ইউনিয়নের গাব্দেরগাঁও গ্রাম থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিরা হলেন খাজুরিয়া গ্রামের শফিউল্লা মোল্লার ছেলে বিটু মোল্লা (৪০) ও গাব্দেরগাঁও গ্রামের বাবুল ব্যাপারীর স্ত্রী সেলিনা বেগম (৫০)।

বিটু মোল্লার স্বজন মিজান মোল্লা বলেন, ‘আমরা একই বাড়ির বাসিন্দা। শুনেছি রাতে বিটু মোল্লা ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ হয়েছে। পরে দুজনেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখা যায় বিটু মোল্লা নিজেদের বসতঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলে আছে। পরিবারের সদস্যদের ডাকচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে পুলিশকে খবর দেয়।’

এদিকে সেলিনা বেগমের মৃত্যুর বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহিম মৃধা বলেন, ‘বিভিন্ন স্থান থেকে ঋণ করে তার এক ছেলেকে প্রবাসে পাঠানো হয়েছে। এখনো ঋণ পরিশোধ করা হয়নি, এর মধ্যে ছেলে বিদেশ থেকে চলে আসতে চায়। এই খবরে তার পরিবারে কলহের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে খাবার খেয়ে সেলিনা বেগম ঘুমিয়ে পড়লেও সকালে বসতঘরের পাশে একটি কাঁঠালগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পায় স্বজনেরা। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির হত্যার বিচার দাবিতে শাহবাগে ছাত্র-জনতার অবস্থান বাড়ছে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্র-জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্র-জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্র-জনতা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে।

হাদির মারা যাওয়ার খবর ঘোষণার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতার বিভিন্ন অংশ সেখানে যোগ দেয়। আজ সকাল থেকেও ছাত্র-জনতা শাহবাগে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সঙ্গে অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।

এ দিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের সেনানী শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে’ আজ বিকেল ৩টায় শাহবাগে আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন ডাকসুর নেতারা।

গতকাল রাতে শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ এখন কার্যত একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিকদের জীবন আজ হুমকির মুখে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না।

নাহিদ বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় যেসব স্পটে আপনারা নেমে এসেছিলেন—যেমন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর এবং ঢাকায় যাত্রাবাড়ী ও উত্তরাসহ সব জায়গায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করুন। শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বগুড়ায় স্ত্রীকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে লাশ ফেলে থানায় নিখোঁজের জিডি

বগুড়া প্রতিনিধি
অভিযুক্ত মুকুল মিয়াকে আটক করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযুক্ত মুকুল মিয়াকে আটক করা হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ায় স্ত্রী মারুফা আক্তারকে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর স্বামী মুকুল মিয়া থানায় স্ত্রী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে মুকুল মিয়াকে সন্দেহের মধ্যে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বগুড়া সদরের নুরইল মধ্যপাড়া গ্রামের মুকুল মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে মারুফা আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুকুল মিয়া স্বীকার করেছেন যে তাঁর স্ত্রী টিকটক ভিডিও করার কারণে দাম্পত্য কলহের জেরে তিনি শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রেখেছিলেন।

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত মারুফা আক্তার পীরগাছা গ্রামের বাসিন্দা। মুকুল মিয়া নুরইল গ্রামের বাসিন্দা ও পেশায় ঢালাই মিস্ত্রি। তাঁদের বিয়ে হয়েছিল ৯ বছর আগে।

জানা যায়, টিকটক ভিডিওর কারণে গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তিন মাস আগে পুনর্বিবাহের মাধ্যমে সংসার শুরু করেছিলেন তাঁরা। তাঁদের ছয় বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

পুলিশ জানায়, ১১ ডিসেম্বর মারুফা তাঁর চাচাতো বোনের বিয়েতে নাচের একটি ভিডিও টিকটকে প্রকাশ করেন। এই কারণে ১৩ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মুকুল মিয়া স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন এবং লাশ বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। পরে ১৫ ডিসেম্বর তিনি থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন। গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করার পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত