ফ্রিজিং গাড়িতে শিশু গৃহকর্মীর মরদেহ, এলাকাবাসীর থানায় অবস্থান 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১: ০৪
Thumbnail image

রাজধানীর শাহজাহানপুর শান্তিবাগ এলাকায় একটি বাসায় নাদিয়া নামের নয় বছর বয়সী এক শিশু গৃহকর্মীকে হত্যা করে মরদেহ গুমের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী শাহজাহানপুর থানায় অবস্থান নিয়ে বিচারের দাবি করে। 

পরবর্তীতে এলাকাবাসীকে সরিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী ফরহাদ বাধন মৌকে (৬০) থানা হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্ত মৌ গুলবাগের একটি বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। 

সোমবার দুপুরে মগবাজারে একটি লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি থেকে নাদিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নাদিয়ার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়। তার বড়বোন নাজমা (১৪) ও সে এই নারীর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন বছর তিনেক ধরে। তারা মৌকে মা বলে ডাকতেন। মৌ নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েছে। তিনি সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধান নামে এক পত্রিকায় কাজ করেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। 

বাড়িটির কেয়ারটেকার রেখা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সোমবার সকালে নাদিয়ার লাশ গোসল করিয়ে কাফনের কাপড় পরিয়ে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন মৌ। এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়। পরে আমরা জানতে পারি, গৃহকর্মী নাদিয়া মারা গেছে। 

শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে নাদিয়াকে শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যায় হোটেল কর্মী নূরে আলম নামে এক ব্যক্তি। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, নাদিয়া মারা গেছেন। এরপর নাদিয়াকে নিয়ে বাসায় আসেন মৌ। ২৬ তারিখ সারা দিন লাশ বাসায় রেখে নাদিয়ার বাবা মাকে খবর দেয় মৌ। তারা আজকে ঢাকায় আসেন। সকালে লাশবাহী ফ্রিজ এনে তার ভেতরে ঢুকিয়ে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় মৃত নাদিয়ার বড়বোন ও বাবাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়। এরপর আমরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। 

ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে মৌ জানান, নাদিয়ার ডায়রিয়া হয়েছিল তাই সে মারা গেছে। তবে শরীরে কিছু জখম রয়েছে, তাই আমরা মৃত্যুর কারণ জানতে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। 

এদিকে নাদিয়াকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী বিচারের দাবিতে শাহজাহানপুর থানা ঘেরাও করে। সুলতান নামে এক তরুণ বলেন, ‘মৌ নির্যাতন করে নাদিয়াকে হত্যা করেছে।’ 

ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জানান, আমরা খোঁজ পেয়ে একটি ফ্রিজিং ভ্যান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করি। তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে কিনা তা আমরা জানার চেষ্টা করছি। অভিযুক্ত নারীকে আটক করা হয়েছে। মৃত নাদিয়ার বাবা মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া তারা দুইবোন এক সঙ্গে ছিল, কি ঘটেছিল তা নাদিয়ার বড়বোন নাজমাও বলতে পারবেন। তার মানসিক অবস্থার উন্নতি হলে তাকেও এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত