Ajker Patrika

আদানির বিদ্যুৎ: সঞ্চালন লাইনের ব্যয় বাড়ল ৫,৭৩৫ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আদানির বিদ্যুৎ: সঞ্চালন লাইনের ব্যয় বাড়ল ৫,৭৩৫ কোটি

ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের উৎপাদিত বিদ্যুৎ আনতে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের ব্যয় আবার বেড়েছে। এ দফায় প্রকল্পটির ব্যয় বেড়েছে ৫ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। গতকাল মঙ্গলবার প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। 

শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় ওই প্রকল্পসহ বিভিন্ন খাতের ১৫টি প্রকল্প অনুমোদন পায়। 

সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।  

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদ্যুৎ সঞ্চালনে নেওয়া বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন প্রকল্পের মূল ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। প্রথম দফায় বেড়ে হয়েছিল ৪ হাজার ৫২ কোটি টাকা। এখন দ্বিতীয় সংশোধনীতে আরও ৫ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ৯ হাজার ৮০৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ফলে মূল প্রকল্পের চেয়ে ৬ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা বেড়ে ব্যয় তিন গুণ হয়েছে। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের জুনে। পরে এক দফা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। 

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) বলছে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের ঝাড়খন্ডে আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ড লিমিটেড (এপিজেএল) থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন হচ্ছে। এতে বড়পুকুরিয়া-বগুড়া ১২০ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, বগুড়া-কালিয়াকৈর ১৩১ দশমিক ৪০ কিলোমিটার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ, বগুড়া-কালিয়াকৈর ৯ কিলোমিটার ৪০০ কেভি লাইনের যমুনা নদী পারাপার অংশ, কালিয়াকৈর ৪০০/২৩০ কেভি উপকেন্দ্রে ৪০০ কেভি দুটি এআইএস বে সম্প্রসারণ এবং পার্বতীপুর ২৩০ কেভি সুইচিং স্টেশনে ২৩০ কেভি দুটি এআইএস বে সম্প্রসারণ করা হবে। 

ব্যয় বাড়ানোর কারণ সম্পর্কে সংস্থাটি বলছে, ডলারের দাম বাড়া বা বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার পরিবর্তন, বিভিন্ন প্যাকেজের ব্যয় বৃদ্ধি, প্রকল্প ঋণ খাতে অতিরিক্ত অর্থের সংস্থানসহ বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় বাড়ায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। 

পরিকল্পনা কমিশনের শিল্পশক্তি বিভাগের সদস্য আবদুল বাকী বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি প্রকল্পে ব্যয় বাড়ার অন্যতম কারণ। এ জন্য বেশি ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। আগে বিদ্যুতের লাইন নদী পার করতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার হতো, এখানে তার চেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার হবে। এ জন্য ব্যয় বেড়েছে ১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া সিডি ভ্যাট খাতেও প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা এবং মালপত্র আমদানিতে এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে। 

ভারতের ঝাড়খন্ডে আদানি গ্রুপের নির্মিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ এই সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে আমদানি করার কথা। কিন্তু সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের নির্মাণকাজও চলতি বছরে শেষ হওয়ার কথা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত