Ajker Patrika

বিএনপির জোট বেশি দিন থাকবে না: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৪৫
বিএনপির জোট বেশি দিন থাকবে না: ওবায়দুল কাদের

বিএনপির নেতৃত্বে যে ৫৪ দলীয় জোট; তা খুব বেশি দিন থাকবে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন কাদের। 

টকশোতে গিয়ে বিএনপির নেতারা ‘পথহারা পথিকের মতো’ কথা বলেন বলেও মন্তব্য করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘কী করবে, কী বলবে, কী কর্মসূচি দেবে—এ নিয়ে ৫৪ দল, ৫৪ পদ, ৫৪ মত। এই দল ছোট হয়ে আসবে বেশি দেরি নেই। বামে-ডানে একাকার। অতি বাম, অতি ডান। এই দৃশ্যপট থাকবে না। গতবারও দেখেছি। ২১ দলীয় জোট, শেষ পর্যন্ত জোটের নেতা কামাল হোসেনই আউট। এখন তো অদৃশ্য রিমোট কন্ট্রোলে বিএনপি চলে।’ 

বিএনপি জোটের আন্দোলন রিমোট কন্ট্রোলে অদৃশ্য নির্দেশে চলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আর বিদেশিরা কখন সরকারকে নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের ওপর নির্ভর করে তাকিয়ে আছে। লবিং করছে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য। জনগণ নেই, এখন নিষেধাজ্ঞা এবং অদৃশ্য ইশারায় তাদের রাজনীতি। এই অবস্থায় তারা এসে গেছে।’ 

আওয়ামী লীগ বিএনপিকে দুর্বল ভাবে না জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামীবিরোধী সব শক্তি এবং বেশ কিছু অপশক্তি এখানে জোট গঠন করেছে বিএনপির নেতৃত্বে। আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব আমাদের লক্ষ্য সামনে রেখে। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের যে রূপকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, তার বাস্তবায়ন আমরা করে যাব।’ 
 
‘সরকারের পেছনে আজরাইল ঘুরঘুর করছে’—বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি এখন কত কথা বলে। এখন বুঝতে পারছি কারা শেখ হাসিনাকে মেরে জানাজা করে সমাহিত করে ফেলেছে। কারা এই নষ্ট রাজনীতি করে। এখানে প্রশ্ন, আজরাইল নাকি সরকারের পেছনে ঘুরঘুর করছে। তোমরা জানো কীভাবে? তোমরা কি আল্লাহর ফেরেশতা নাকি? মির্জা ফখরুল, আপনি কি আল্লাহর ফেরেশতা? আপনি কীভাবে জানেন আজরাইল কার পেছনে ঘুরঘুর করছে?’ 

এ সময় তাঁর মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়ানোর বিষয়টি তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাকে তো কয়দিন ধরে মারছে। এখন আবার হাসপাতালে পাঠাচ্ছে। গভীর রাতে ফোন আসে, আপনি কি হাসপাতালে? আমি বলি, না আমি তো বাসায়। আবার ফোন করে বলে, বেঁচে আছেন ভাই? কেন? আমরা তো শুনেছি আপনি মরে গেছেন। আমাদের ইন্তেকাল পর্যন্ত তারা করিয়ে ফেলেছে। কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। এখন আজরাইল লাগায় দিছে। আজরাইল সরকারের পেছনে ঘুরঘুর করছে।’ 

কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, আল্লাহ কবে আপনাকে ফেরেশতা বানাল? অথবা নবী বানাল? কেউ কি জানে? কেউ জানে না। সব আজগুবি খবর, নষ্ট রাজনীতি। এই নষ্ট রাজনীতি এবং নষ্ট কথা তারাই বলে। কী ভয়াবহ! কোনো দেশের রাজনীতিতে এই সংস্কৃতি কি আছে প্রতিপক্ষকে মেরে ফেলছে? এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এ রকম ভয়াবহ গুজব ছড়ায়। এটা বিএনপি ও তাদের দোসরাই করে। এখন আজরাইলের খবর থেকে আমার এ কথাই মনে হচ্ছে।’ 

 ‘জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা’—মির্জা ফখরুলের অপর এক মন্তব্যের জবাবে কাদের বলেন, ‘এটা কেমন করে হলো! এটা তো শুনিনি! জানি না। এই আজগুবি আওয়াজ কোথা হতে দেয়। ফখরুল মাঝে মাঝে এমন উদ্ভট কথা বলে এবং জিয়াউর রহমান পারলে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দেয়। পঁচাত্তর ঘটানোই হয়েছে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধকে শেষ করার জন্য। তিনি করবেন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা?’ 

এ সময় বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলো যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাতে কোনো প্রকার সংঘাত বা উসকানি যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ছাত্রলীগসহ সম্মেলন হওয়া সংগঠনগুলো এবং আওয়ামী লীগের উপকমিটিগুলোর কমিটি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ করতে নির্দেশ দেন কাদের। 

সম্মেলনের আগে দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেলেও এখন সেভাবে দেখা যায় না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সম্মেলন চলে গেছে, অনেকেরই একটু গা-ছাড়া ভাব। পার্টি অফিসে সন্ধ্যায় গেলে লোকই দেখা যায় না। আগে তো ঢুকতেই পারতাম না। সব প্রার্থী। এখন মনে হচ্ছে প্রার্থী হয়ে তো লাভ নেই, সে জন্য গা-ছাড়া ভাব আছে। গা ঝাড়া দিয়ে উঠুন।’ 

এ সময় সম্মেলন হওয়া সংগঠনের কমিটি দ্রুত করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘উপকমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যসচিবের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কাজেই উপকমিটিগুলো নতুন করে কমিটি করতে হবে। সেই প্রক্রিয়াটা যার যার বিভাগ থেকে উদ্যোগ নেবেন। এটা আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’ 

সামনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এতে আপনার নাম বিভিন্ন অঙ্গনে বেশ জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘টকশোতে শুনলাম ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছেন। তার মানে, আমি নেত্রীর ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করছি রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য। তার মানে, আমি তোষামোদি করছি? শেখ হাসিনার নিরাপত্তা তোষামোদি? আমি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি, আমাদের পার্টির নেতৃবৃন্দের উদ্বেগ আছে।’ 

কাদের বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, মাঝেও বলেছি, এখনো বলছি। সর্বশেষ বলব, রাষ্ট্রপতি পদের যোগ্যতা আমার নেই।’ 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাবিতে মুখে লাল কাপড় বেঁধে বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি

রাবি প্রতিনিধি 
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাবির বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাবির বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

৪৭তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) লিখিত পরীক্ষা দুই মাসে নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও পেছানোর দাবিতে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে এই প্রতীকী মানববন্ধন করেন তাঁরা।

এ সময় তাঁরা ‘বৈষম্যবিরোধী বাংলায়, স্বৈরাচারের ঠাঁই নাই’; ‘প্রশ্ন ফাঁসের ১৮ মাস, বৈধের কেন ২ মাস’; ‘কষ্টের টেকা ৪৭ আমার, নষ্ট করার তুমি কে আবার’; ‘৪৭ মারা রোডম্যাপ বাতিল চাই, করতে হবে’; ‘আমার ভাইয়ের উপর হামলা কেন, পিএসসি তুই জবাব দে’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন রাবি শাখার সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, ‘আমাদেরকে সর্বনিম্ন ছয় মাস সময় দিতে হবে, যার মধ্যে আমরা লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারব এবং যারা পুরাতন আছে, তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা পরীক্ষায় বসতে পারব। এ ছাড়া ৯ নভেম্বর আমাদের ঢাকায় যে প্রোগ্রাম ছিল, সেখানে যারা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে।’

এ সময় ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিতে উত্তীর্ণ বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোর বোর্ডে এইচএসসির খাতা পুনর্নিরীক্ষণ: ২১৬ জনের ফল পরিবর্তন

­যশোর প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

যশোর শিক্ষা বোর্ডে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ২১৬ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে ৭২ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। সেই সঙ্গে ৫৪ জন অকৃতকার্য শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছেন। রোববার শিক্ষা বোর্ডের খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

জানা যায়, যশোর শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসির খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ২১৬ জন শিক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। ফলাফল পরিবর্তন হওয়া শিক্ষার্থীদের নতুন করে ৭২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। নতুন করে জিপিএ-৫ পাওয়া ৭২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এ গ্রেড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৭ জন, এ মাইনাস থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ জন, বি গ্রেড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ জন ও ফেল করা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ জন শিক্ষার্থী।

সেই সঙ্গে ৫৪ জন শিক্ষার্থী নতুন করে পাস করেছেন। নতুন পাস করা শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ জন, এ মাইনাস ৪ জন, বি গ্রেড ২৪ জন, সি গ্রেড ৪ জন ও ডি গ্রেড পেয়েছেন ২১ জন।

এ ছাড়া ফলাফল পরিবর্তন হওয়াদোর মধ্যে এ মাইনাস থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ জন, এ মাইনাস থেকে এ গ্রেড ৪৬ জন, বি গ্রেড থেকে জিপিএ-৫ ১ জন, বি গ্রেড থেকে এ গ্রেড ৩ জন, বি গ্রেড থেকে এ মাইনাস ২২ জন, সি গ্রেড থেকে এ গ্রেড ১ জন, সি গ্রেড থেকে এ মাইনাস ২ জন, সি গ্রেড থেকে বি গ্রেড ১১ জন, ডি থেকে বি গ্রেড ১ জন ও ডি থেকে সি গ্রেড পেয়েছেন ৪ জন শিক্ষার্থী।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. আব্দুল মতিন জানান, খাতা পুনর্নিরীক্ষণে যশোর শিক্ষা বোর্ডে ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। তার মধ্যে মাত্র ২১৬ জন শিক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তন হয়েছে। পুনর্নিরীক্ষণে নতুন করে খাতা মূল্যায়ন করা হয় না। শুধু প্রাপ্ত নম্বর গণনা করা হয়। গণনায় যেসব শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ভুল হয়েছিল, তাঁদের সঠিক করে দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অভিনেত্রী মেহজাবীন ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৫
মেহজাবীন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
মেহজাবীন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

ব্যবসায়িক অংশীদারকে হুমকি-ধমকি এবং ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলায় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এবং তাঁর ভাই আলিসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা তানিয়া এই পরোয়ানা জারি করেন।

আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মামলার নথি থেকে দেখা যায়, ১০ নভেম্বর মেহজাবীন ও তাঁর ভাই আলিসানের আদালতে হাজির হওয়ার দিন ধার্য ছিল। তাঁরা হাজির না হওয়ায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেহজাবীনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল বাদী আমিরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীর। মেহজাবীন চৌধুরী তাঁর সঙ্গে আমিরুল ইসলামকে একটি ব্যবসায় অংশীদার হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন। অধিক মুনাফা হবে এই আশ্বাস দিয়ে আমিরুল ইসলামকে রাজিও করান। বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে আমিরুল ইসলাম মেহজাবীনকে ২৭ লাখ টাকা দেন। এরপর মেহজাবীন ও তাঁর ভাই দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ না নেওয়ায় বাদী বিভিন্ন সময় টাকা চাইতে গেলে আজকে দেব, কালকে দেব বলে দীর্ঘদিন কালক্ষেপণ করেন।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাঁরা ১৬ মার্চ হাতিরঝিল রোডের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে আসতে বলেন। ওই দিন ঘটনাস্থলে গেলে মেহজাবীন ও তাঁর ভাইসহ আরও অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আমিরুলকে। একই সঙ্গে তাঁরা আমিরুলকে বলেন, এরপর আর কখনো টাকা চাইতে পারবেন না। পুনরায় টাকা চাইলে জীবননাশের হুমকি দেন তাঁরা।

মামলার অভিযোগে আমিরুল আরও বলেন, অভিযোগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়।

এ ঘটনায় আমিরুল ইসলাম গত ২৪ মার্চ বাদী হয়ে ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। মামলার পর আসামিদের হাজির হতে সময় জারি করা হয়। কিন্তু তাঁরা হাজির হননি।

এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হলে মেহজাবীন ও তাঁর ভাইকে আদালতে শান্তি রক্ষার মুচলেকা দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাংনীতে অশ্লীল ভিডিও-কাণ্ডের সেই প্রধান শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৬
আজ সকালে প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই শিক্ষককে স্থায়ী বরখাস্ত করতে হবে। না হলে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। রোববার সকালে হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের স্থায়ী বরখাস্ত দাবি করেন।

শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘একজন প্রধান শিক্ষকের চরিত্র যদি এমন হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষা পাবে কোথায়! আর এই ভিডিও যখন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন তো ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও দেখেছে, দেখছে। ওই শিক্ষকের লজ্জা-শরম যদি থাকে, তাহলে কখনোই ওই স্কুলে প্রবেশ করবে না। তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আমরা আরও কঠিন আন্দোলনে যাব। এমন নোংরা মানুষ কখনোই শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তাই তাঁর স্থায়ী বরখাস্ত চাই।’

স্থানীয় মনিরুজ্জামান সেন্টু বলেন, ‘এই শিক্ষক যদি বিদ্যালয়ে থাকে তাহলে নতুন কোনো ছাত্র-ছাত্রী আর এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হবে না। তাই আমরা সাময়িক বরখাস্ত নয়, স্থায়ী বরখাস্ত চাই। তা ছাড়া এই শিক্ষক চাকরি করার কোনো যোগ্যতা রাখেন না। এটা আমাদের প্রতিষ্ঠান। আমরা এই শিক্ষককে আর এখানে দেখতে চাই না।’

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মাসুম পারভেজ বলেন, ‘আমি গতবার এই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। এখন আমার বোন পড়ে এই প্রতিষ্ঠানে। প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদের সঙ্গে ছাত্রীদের যে অশ্লীল ভিডিও প্রকাশ হয়েছে, তা অত্যন্ত জঘন্য। আমরা তাঁর সাময়িক পদত্যাগ নয়, স্থায়ী পদত্যাগ চাই। পদত্যাগ না করলে তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।’

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসমিন খাতুন বলে, ‘ছাত্রীর সঙ্গে যে অনৈতিক কাজ করেছে প্রধান শিক্ষক, এটা অত্যন্ত জঘন্য। আমরা এবার প্রমাণ পেয়েছি। তাই এই শিক্ষকের সম্পূর্ণ পদত্যাগ দাবি করছি। আমরা ওই ছাত্রীরও বিচার চাই। কারণ, ওই ছাত্রীও দোষী।’

হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জামশেদ আলী বলেন, ‘আমরা চাই এটার বিচার হোক। আমাদের অনেক কষ্টে গড়া এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একজন শিক্ষকের জন্য এটা নষ্ট হয়ে যাবে, তা কখনোই আমরা হতে দেব না।’

হাড়াভাঙ্গা এইচ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মকলেছুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর যে অনৈতিক ঘটনা ঘটে গেছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি বসে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। আর স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য সরকারি বিধি মোতাবেক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এ ছাড়া এই ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা খুব ক্ষুব্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের ভিডিও আমরা দেখেছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। লিখিত অভিযোগটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও পাঠানো হবে।’

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা বিষয়টি জেনেছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার বিকেলে প্রধান শিক্ষক রাজু আহমেদ ও এক ছাত্রীর একটি অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে পুরো গাংনীতে তোলপাড় শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত