‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশেও মানুষ স্বস্তিতে নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২: ৪৯
Thumbnail image
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নারীপক্ষ ‘আলোর স্মরণে কাটুক আঁধার’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমতা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছরে দাঁড়িয়েও সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কি না, তা ভাবতে হচ্ছে। রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশেও মানুষ স্বস্তিতে নেই। প্রতিহিংসার রাজনীতি অব্যাহতভাবে চলছে। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এখনো হয়নি।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে নারীপক্ষ আয়োজিত ‘আলোর স্মরণে কাটুক আঁধার’ শীর্ষক স্মরণানুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন নারীপক্ষের সদস্য রেহানা সামদানী। এতে বলা হয়, ‘ক্ষমতাচ্যুত দলের দুর্নীতি-দুঃশাসনে সমতা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানুষ হিসেবে মর্যাদা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সংঘটিত রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশেও স্বস্তি আসেনি। প্রতিহিংসার রাজনীতি অব্যাহতভাবে চলছে। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এখনো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙা যায়নি। ধর্মীয় উসকানিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় মানুষ। আমাদের আকাঙ্ক্ষা কেবল ব্যক্তি ও সরকার বদল নয়। আমরা চাই গণতন্ত্রহীনতা এবং স্বৈরাচারী, কর্তৃত্ববাদী ও বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার চির অবসান ঘটিয়ে “সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠিত হোক।’

নারীপক্ষ ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতিবছর বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধে হারানো স্বজনদের স্মরণে একেকটি প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘আলোর স্মরণে কাটুক আঁধার’ অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ কত দূর?’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মুক্তিযুদ্ধ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথের ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে হারিয়ে যাওয়া স্বজন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে উপস্থিত সবাই একটি করে আলোর শিখা জ্বালিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। গান পরিবেশন করেন জলতরঙ্গের শিল্পীরা। কবিতা আবৃত্তি করেন ইকবাল আহমেদ ও সালমা শবনম। স্মৃতিচারণা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সুফিয়া আকতার এবং ফরহাদ মাহমুদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত