Ajker Patrika

দেশ তামাকমুক্ত করতে কড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশ তামাকমুক্ত করতে কড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবি

তামাকমুক্ত দেশ গঠনে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নের দাবি জানালেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তাঁরা এ দাবি তুলে ধরেন।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) অনুযায়ী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য ছয়টি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

প্রস্তাবগুলো হলো—জনপরিসর ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটসহ এ জাতীয় তামাকসংশ্লিষ্ট পণ্য নিষিদ্ধ করা, তামাকপণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রি বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম সাইফুল ইসলাম বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে তামাক কোম্পানিগুলো নানা ধরনের কৌশল গ্রহণ করছে। তারা প্রচার চালাচ্ছে, আইনটি সংশোধন হলে সরকার রাজস্ব হারাবে, যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। বাস্তবতা হলো, ২০০৫ সালে আইন প্রণয়ন ও ২০১৩ সালে তা সংশোধনের পর সরকারের রাজস্ব আয় সাড়ে ১২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রজনন ও শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. হালিদা হানুম আক্তার বলেন, বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ জনপরিসর ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। তামাকের কারণে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার ২৫২ জন মানুষ মারা যায়। তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে এখনই শক্তিশালী আইন প্রণয়ন দরকার।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এ ধূমপায়ীদের মৃত্যুর হার অধূমপায়ীদের তুলনায় তিন গুণ বেশি ছিল। বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকের নানা রোগে ভুগছে। ঢাকার মিরপুর ও সাভারের স্কুলশিক্ষার্থীদের মুখের লালা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর লালায় নিকোটিন পাওয়া গেছে, যা পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব।

অন্য বক্তারা তরুণদের আকৃষ্ট করতে তামাক কোম্পানিগুলোর নেওয়া বিভিন্ন কৌশলের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছে রেস্তোরাঁয় নির্ধারিত ধূমপান এলাকা স্থাপন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ব্যাটল অব মাইন্ড’ প্রতিযোগিতার আয়োজন। তাঁরা বিশেষ করে এ ধরনের প্রতিযোগিতা বন্ধ করার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নীতি উপদেষ্টা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম, প্রকল্প সমন্বয়কারী ডা. বরিষা পাল এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যান্টি টোব্যাকো ক্লাবের সদস্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত