ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে ধারণক্ষমতার বেশি মুসল্লি নামাজ পড়লেন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ৩৯
Thumbnail image

সকাল ১০টা। প্রখর রোদের মধ্যেও দেশের ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ১৯৭ তম পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এবারের ঈদের জামাতে মাঠে দুই লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেন। এছাড়া আশপাশের দুই কিলোমিটারের মধ্যে সব মিলিয়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ নামাজে অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। 
 
নামাজ পড়তে আসা দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মুসল্লির ভিড়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় শোলাকিয়া ময়দান। আগত মুসল্লিদের অনেকে মাঠে জায়গা না পেয়ে পার্শ্ববর্তী রাস্তা, বাড়ির ছাদ, নদীর পাড় ও শোলাকিয়া সেতুতে জায়গা করে নিয়ে জামাতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়েন। 

নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল ৭টার আগে মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশ করতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সকাল ৭টার দিকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে প্রত্যেক মুসল্লিকে তল্লাশি করে ঈদগাহে ঢুকতে দেয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকেই ৭ একর আয়তনের শোলাকিয়া মাঠ পূর্ণ হয়ে যায়। 

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এই জামাতে ইমামতি করেন বড় বাজার মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা শোয়াইব আব্দুর রউফ। ১৭৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ঈদগাহের ঐতিহ্য অনুসারে মুসল্লিদের প্রস্তুতির জন্য জামাত শুরুর ১৫ মিনিট আগে তিনটি, ১০ মিনিট আগে তিনটি এবং ৫ মিনিট আগে তিনটি শটগানের গুলি ছোড়া হয়। 

প্রতিবারের মতো এবারও শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাতে অংশ নিতে দূর-দূরন্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন। দেশের সর্ববৃহৎ এই জামাতে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহের মাঠে। 

জামাত শুরুর আগে ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ সমাগত মুসল্লিদের উদ্দেশে শান্তিপূর্ণ ঈদ জামাত আয়োজনে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। সেই সঙ্গে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। মুসল্লিদের ভিড়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় শোলাকিয়া ময়দানজেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমাদের হাওরে একটাই ফসল ধান। ফসল যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য আপনাদের (মুসল্লি) কাছে দোয়া চাই। এবার সর্বকালের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ ঈদগাহসহ আশপাশের দুই কিলোমিটারের মধ্যে ৭ লাখের বেশি মানুষ এবারের ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন। 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের জন্য চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ছিল ১ হাজার ১১৬ পুলিশ সদস্য। এর মধ্যে পোশাকে ৮৮০ জন, সাদা পোশাকে ১৮৭ জন ও ট্রাফিকে ৪৯ জন অফিসার ফোর্স মোতায়েন ছিলেন। র‍্যাবের আটটি টিম (প্রতি টিমে ছয়জন করে) ও ৫ প্লাটুন বিজিবি সদস্য এবং এপিবিএন মোতায়েন ছিল। এ ছাড়া আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। ছিল ফায়ার সার্ভিসেরও বেশ কয়েকটি ইউনিট। দায়িত্ব পালন করেছেন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। 

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুবেল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম, র‍্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মনতোষ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু রাসেল, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত