Ajker Patrika

তিন দিন আগেই চাকরি নিয়েছিলেন বরগুনার নাঈম 

বরগুনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৪, ১৮: ১৬
তিন দিন আগেই চাকরি নিয়েছিলেন বরগুনার নাঈম 

‘আব্বা আগুন লাগছে, দোয়া কইরো, আম্মারে বইলো আমার জন্য দোয়া করতে, বাইচ্চা থাকলে দেখা হবে।’ ভবনের ছাদে উঠে বাবাকে ফোনে ঢাকার বেইলি রোডে আগুনের খবর জানিয়েছিল নাঈম। এরপর আর কথা হয়নি। এখন পুত্রশোকে বাকরুদ্ধ বাবা। বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা। বাড়িতে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজনদের ভিড়। গোটা এলাকায় শোকের মাতম। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রয়ারি) রাতে ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান মো. নাঈম। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার ৩ নম্বর ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের ছোট গৌরীচন্না এলাকার নান্টু মিয়ার ছেলে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে নাঈম বড়। বাবা নান্টু মিয়া পেশায় ভ্যানচালক, মা লাকি বেগম গৃহিণী। মা-বাবা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মেধাবী ছেলে নাঈমকে এইচএসসি পাস করান। 

মা-বাবার কষ্ট ঘোচাতে ও একমাত্র বোনের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে এক মাস আগে কাজের সন্ধানে রাজধানী ঢাকায় যান। মাত্র তিন দিন আগে বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই বিল্ডিংয়ে আরএফএল কোম্পানির একটি শাখায় কাজ নেন। কিন্ত ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। 

ছেলের শোকে কাতর মা লাকি বেগমনাঈমের মা লাকি বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘বাছারে মোর কোলে আইন্না দেও, মুই এট্টু মোর পোলার মুকটা দেকমু। ঈদের সোমায় বাবায় মোর বাড়তে আইবে কইছে। আহারে এইয়া আলহে মোর কপালে। মোর একটা পোলা, মুই এহন কি লইয়া বাচমু...।’ বলতে বলতে ফের মুর্ছা যান লাকি বেগম। 

নাঈমের মৃত্যু এমন অকাল মৃত্যুর খরে এলাকাজুড়ে বইছে শোকের মাতম। বাড়িতে ছুটে এসেছেন পাড়া-প্রতিবেশিসহ সহপাঠীরাও। 

নিহত নাঈমের চাচা সেন্টু মিয়া বলেন, ‘পুরো বিল্ডিংয়ে আগুন ধরলে বাঁচার তাগিদে নাঈম ছাদে গিয়ে বাবাকে মোবাইল ফোনে আগুনের বিষয়টি জানায়। এ সময় বাবাকে দোয়া করতে বলে নাঈম। বাবা ছেলেকে আল্লাহকে ডাকতে বলেন। এরপর একাধিকবার কল করলেও নাঈমের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।’ 

নাঈমের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে ছুটে এসেছেন এলাকাবাসীপরে গণমাধ্যমের খবরে পরিবার জানতে পারে, আগুনে দগ্ধ নাঈমের মৃত্যু হয়েছে। পাড়া-প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা জানান, নিহত নাঈম মেধাবী ছাত্র ছিলেন। অভাবের সংসারের হাল ধরতে গিয়ে লাশ হতে হলো তাঁকে। 

৩ নম্বর ফুলঝুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার কবির বলেন, ‘নাঈম মেধাবী ছাত্র ছিল। অর্থাভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনি। অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়েছিল। এখন এই পরিবারটির হাল ধরার মতো কেউ আর অবশিষ্ট রইল না।’ 

নাঈমের আকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান কবির বলেন, ‘আমি যথাসাধ্য পরিবারটির পাশে থাকার চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

রাজধানীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে ইরানের দুই নাগরিককে মারধর

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত