এক সংগঠনে থাকবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষকেরা: জাবি উপাচার্য

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২২, ২০: ৫৩

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুটি সংগঠন রয়েছে। এ অবস্থায় বর্তমান উপাচার্য আওয়ামীপন্থীদের এক করার উদ্যোগ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষকদের এক সংগঠনে থাকার প্রক্রিয়া চলছে। আজ শনিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম। 

উপাচার্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরে বিভিন্ন সময় আওয়ামীপন্থীদের মধ্যে বিভক্তি ছিল। সর্বশেষ অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার পর একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। আমার চাওয়া হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালনকারী শিক্ষকদের একটিই ব্যানার থাকুক। এই জন্য সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ 

অধ্যাপক নূরুল আলম আরও বলেন, ‘আমাদের আদর্শ সব সময় একই ছিল, কিন্তু বিভিন্ন কারণে এক হওয়া যাচ্ছিল না। এই অবস্থায় আমার দায়িত্ব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা। এ কারণে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’ 

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৫ সালে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ গঠিত হয়। পরে বিভিন্ন ধরনের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি থাকলেও একটি সংগঠনেই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে এই সংগঠনের ব্যানারে প্যানেল নির্বাচন করে উপাচার্য হন অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। পরে ২০১৮ সালের মে মাসে অধ্যাপক ফারজানার পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু-আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’ গঠন করা হয়। যার বর্তমান নাম ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’। 

সর্বশেষ গত ১১ অক্টোবর এই সংগঠনের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে অধ্যাপক ড. এ এ মামুনকে। সদস্য হিসেবে রয়েছে আওয়ামীপন্থী বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধি অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি ও অধ্যাপক আলমগীর কবির। এ ছাড়া সদস্যসচিব হিসেবে উপাচার্যের এই উদ্যোগ সফল করতে তৎপর ভূমিকা পালন করছেন অধ্যাপক বশির আহমেদ। 

এ ব্যাপারে শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খবিরউদ্দিন বলেন, ‘প্যানেল নির্বাচন ছাড়াই উপাচার্য হওয়ার পর অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আওয়ামীপন্থীদের মাঝে বিভাজনের মাধ্যমে একটি আলাদা সংগঠন করে। এখন তার দায়িত্ব শেষ এবং আমাদের এক হওয়ার সময় এসেছে।’ 

এ নিয়ে শিক্ষক পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষকদের মাঝে আদর্শিক ঐক্য থাকলে অভ্যন্তরীণ বিভক্তি বেমানান। এটা শিক্ষক সমাজের সঙ্গে যায় না। পূর্বে আওয়ামীপন্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নে কাজ করলেও বর্তমান উপাচার্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আশা করি শিগগিরই আওয়ামীপন্থীরা জাহাঙ্গীরনগরে এক হয়ে কাজ করবে।’ 

এদিকে এই উদ্যোগের বিরোধিতা করে শিক্ষক সমাজের একাধিক শিক্ষক নেতা জানান, আওয়ামীপন্থীদের এক হওয়ার এই উদ্যোগ একটি বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলের প্রক্রিয়া। যাদের কারণে ২০১৮ সালে শিক্ষক সমাজ বিভক্ত হয় তাদের সঙ্গেই মিলতে যাচ্ছে এই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। এদের কেউ চাকরি ফেরত পাওয়ার আশায়, কেউ হল প্রভোস্ট আবার কেউবা সিন্ডিকেট সদস্য হওয়ার জন্য দল ত্যাগ করছেন। কিন্তু এরপরেও সংগঠনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তাঁরা। কারণ এখনো নিবেদিত প্রাণ একনিষ্ঠ শিক্ষক নেতা রয়েছে বলে জানান তাঁরা। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত