মাদ্রাসাছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ, শরীরে ‘যৌন নিপীড়নের’ চিহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮: ২৭
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮: ৪৯

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বাসা থেকে এক মাদ্রাসাছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই মাদ্রাসাছাত্রের নাম শরিফুল ইসলাম (১৪)। স্থানীয় নূরানীয়া ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ত সে। গত শুক্রবার হেফজ পড়া শেষ করে পাগড়ি পায় এবং ছুটি নিয়ে ওই দিনই বাড়িতে আসে।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষার্থীর পায়ুপথে যৌন নিপীড়নের চিহ্ন রয়েছে। বিষয়টি কাউকে বলতে না পেরে হয়তো আত্মহত্যা করেছে সে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

কামরাঙ্গীরচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আশরাফুল হক সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, শরিফুল ইসলামের মলদ্বার অস্বাভাবিক ছিল। মলদ্বার দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সে মলদ্বার দিয়ে ইতিপূর্বে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। তবে বিষয়টি কাউকে বলতে না পেরে নিজের ওপর অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। 

এসআই মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ জানায়, কামরাঙ্গীরচরের রসুলপুরের একটি ভবনের ৬ তলায় বাবা-মা ও ভাইয়েরা মিলে থাকত শিশু শরিফুল। সোমবার রাতে তাকে ঘরের ভেতর ঝুলন্ত অবস্থায় পায় স্বজনেরা। রাত পৌনে ২টায় কামরাঙ্গীরচর থানা-পুলিশ শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

মৃত শরিফুল মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার হাজি আমির হোসেনের ছেলে। শিশুটির বাবা মাছের ব্যবসা করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল শরিফুল। 

মৃত শরিফুল ইসলামের বড় ভাই শাহিন হাসান জানান, গত শুক্রবার সে হাফেজ পড়া সম্পন্ন করেছিল। ওই রাতেই বাড়িতে আসে। এরপর সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। সোমবার বিকেলে বাবা তাকে আবার মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বললে তখন শরিফুল তাকে জানায়, আজ মঙ্গলবার মাদ্রাসায় যাবে সে। এরপর রাত ১০টার দিকে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও দরজা না খোলায় তাদের সন্দেহ হলে তাকে ডাকাডাকি শুরু করেন। পরে রুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখেন ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে সে। 

যৌন নিপীড়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বড় ভাই শাহিন বলেন, বিষয়টি পুলিশের মাধ্যমেই কিছুটা শুনেছেন। তবে বিস্তারিত কিছু জানেন না। এর আগে মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মারধর করার কথা তাদের জানিয়ে ছিল শরিফুল। সে সময় মারধরের ঘটনাটি কাউকে জানাতেও নিষেধ করেছিলেন শিক্ষকেরা। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত