গেমের আড়ালে জুয়া, পাচার শত শত কোটি টাকা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

অনলাইনে বিভিন্ন গেমস তৈরি করে বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ আনার কথা থাকলেও উল্টো শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। গেমস ডেভেলপমেন্টের অনুমতি নিয়ে বৈধতার আড়ালে অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছিল চক্রটি। এমন অভিযোগে র‍্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৪ এর অভিযানে রাজধানীর মহাখালী ও উত্তরা এলাকা থেকে চক্রের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

র‍্যাব বলছে, তিন পাত্তি গোল্ডসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার আড়ালে দেশের বাইরে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছে চক্রটি। যার হোতা উল্কা গেমস লিমিটেডের সিইও জামিলুর রশিদ। র‍্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—জামিলুর রশিদ, সায়মন হোসেন, রিদোয়ান আহমেদ, রাকিবুল আলম, মুনতাকিম আহমেদ ও কায়েস উদ্দিন আহম্মেদ। 

এ সময় তাদের কাছ থেকে অনলাইন জুয়া পরিচালনায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, সিপিইউ, সার্ভার স্টেশন, হার্ড ডিস্ক, স্ক্যানার, ডিভিডি ড্রাইভ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও নগদ টাকাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

খন্দকার মঈন জানান, হিরোজ অফ ৭১ ও মুক্তি ক্যাম্প নামক ২০১৭ সালে দুইটি গেমস নির্মাণের জন্য জামিলুর রশিদ সরকারের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা অনুদান পায়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী দেশের একটি প্রতিষ্ঠান মুনফ্রগ ল্যাবের সঙ্গে পরিচয় হয়। ২০১৮ সালে সে মুনফ্রগ ল্যাবের বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে দেড় লাখের বেশি টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন তিনি। মুনফ্রগ ল্যাবের অনলাইন জুয়া অ্যাপ ‘তিন পাত্তি গোল্ড’ এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় গেমটিকে আরও ছড়িয়ে দিতে দেশে বৈধতা পেতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে উল্কা গেমস লিমিটেড নামের গেমিং ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেন জামিলুর। 

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, দেশে গেম ডেভেলপমেন্টের অনুমোদন থাকলেও অনলাইন জুয়া/ক্যাসিনোর অনুমোদন না থাকায় উল্কা গেমস বিভিন্ন ভুল তথ্য উপস্থাপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে আইনি বৈধতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে। এভাবেই ‘তিন পাত্তি গোল্ড’ যাত্রা শুরু করে ছড়িয়ে পড়ে। গেম ডেভেলপমেন্ট না করে তিন পাত্তি গোল্ডসহ বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাঠিয়েছে চক্রটি। বর্তমানে ‘তিন পাত্তি গোল্ড’ এ প্রায় ৯ লাখেরও বেশি নিয়মিত গেমার রয়েছে এবং প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকার ভার্চুয়াল চিপস বিক্রি হয় বলে জানা যায়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত