জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ (মরণোত্তর) ডিগ্রি দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশেষ সমাবর্তন আগামী রোববার (২৯ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে। এই বিশেষ সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদ ও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। 

আজ শুক্রবার দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলাদেশের একটি অগ্রণী ও শ্রেষ্ঠ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি গণতন্ত্রচর্চার সূতিকাগার ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার লালন কেন্দ্র। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি, পাকিস্তানি অগণতান্ত্রিক স্বৈরশাসক, এমনকি স্বাধীন বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক স্বৈরশক্তির বিরুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা আমরা সকলেই জানি। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে, যার নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস ও মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশে চরম কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। এই সরকার চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।’ 

• বঙ্গবন্ধুকে ডিগ্রি দিতে ঢাবির বিশেষ সমাবর্তন ২৯ অক্টোবর, বক্তা শেখ হাসিনা

মুক্তবুদ্ধিচর্চা ও বাক্‌স্বাধীনতা হরণ করেছে। জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে আবারও একটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আগামী নির্বাচন বিষয়ে সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রশ্নে নতুন ভিসা নীতি গ্রহণ এবং এর প্রয়োগ শুরু করায় বাংলাদেশ একটি দীর্ঘস্থায়ী সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবস্থানও বাংলাদেশের জন্য নয়। এ অবস্থায় বর্তমান সরকারের অগণতান্ত্রিক, স্বৈর ও কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা, আবারও একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজনের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে এবং সরকারের পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় ও দেশপ্রেমিক মানুষ এখন সর্বাত্মক আন্দোলন করছে বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। 

• ২৯ অক্টোবর ঢাবির সমাবর্তনে যেসব রাস্তা এড়িয়ে যেতে বলল কর্তৃপক্ষ

সাদা দলের বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস এবং মানুষের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার হরণকারী সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি না। এর প্রতিবাদ হিসেবে সাদা দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আসন্ন বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আমরা আশা করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষকসমাজ আমাদের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়ে আসন্ন সমাবর্তন বর্জন করবেন।’