আসন্ন বাজেটে তামাক পণ্যের দাম বাড়ানোর দাবি প্রজ্ঞা ও আত্মার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১৫: ৩৮
Thumbnail image

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের তামাক পণ্যের দাম কার্যকরভাবে বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা)। 

আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত আসন্ন অর্থবছরের জন্য তামাক কর ও মূল্যসংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে এই দাবি তোলা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে তামাক কর ও মূল্যবিষয়ক বাজেট প্রস্তাব সমর্থন করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাক পণ্য ক্রমান্বয়ে সস্তা হয়ে পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তামাকের কারণে লাখ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু, অসুস্থতা, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি বিবেচনায় এনে আসন্ন বাজেটে সব ধরনের তামাক পণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে। 

বর্তমানে ৭০ শতাংশ সিগারেট সেবনকারী নিম্নস্তরের সিগারেটের ভোক্তা উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর। তিনি বলেন, এই স্তরে সম্পূরক শুল্কহার মাত্র ৫৮ শতাংশ, এটা বাড়িয়ে কমপক্ষে ৬৩ শতাংশ করা হলে সিগারেটের ব্যবহার কমবে এবং রাজস্ব আয় বাড়বে। এই বর্ধিত রাজস্ব চলমান আর্থিক সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। 

তার এই বক্তব্যের পক্ষে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে পাওয়া দেশের সাতটি মহানগরীর নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয় ৷ সেখানে দেখা যায়, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙাশ মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ একই সময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। 

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বাজেটে তামাক পণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধির দাবি তুলে বক্তারা বলেন, তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে সরকারের ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব অর্জিত হবে। একই সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে প্রায় ৫ লাখ তরুণসহ মোট ১১ লাখের অধিক মানুষের অকালমৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে। 

সংবাদ সম্মেলনের মূল বক্তব্য পাঠ করেন প্রজ্ঞার প্রধান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সমন্বয়কারী মেহেদি হাসান। তিনি বলেন, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ প্রাণ হারায়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন আত্মার কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত