উড়ালসড়কের পিলার নির্মাণ হচ্ছে তুরাগে, পানিপ্রবাহ ব্যাহত

নাঈমুল হাসান, টঙ্গী (গাজীপুর)
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৪১
Thumbnail image

তুরাগ নদের ওপর নির্মিত গাজীপুরের প্রায় শতবর্ষী টঙ্গী সেতু পরিত্যক্ত ঘোষণার পর ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এই স্থানে চলছে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসড়কের পিলার নির্মাণকাজ। কিন্তু নদে বাঁধ দিয়ে পিলার নির্মাণকাজ চলায় পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। 

এদিকে সেতুর পিলার ও নিচের অংশে ভারী যন্ত্রপাতি স্থাপনের কথা বলে মাটি দিয়ে নদের কয়েকশ ফুট জায়গাজুড়ে দেওয়া হয়েছে বাঁধ। এতে নদের প্রশস্ত কমে পানি প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট-বড় নৌযান চলাচল এখন বন্ধ রয়েছে। নদে মাটি ফেলে বাঁধ দেওয়ায় পানি প্রবাহের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে স্থানীয় সচেতন মহল। 

আজ সোমবার সরেজমিনে জানা গেছে, চলতি শুষ্ক মৌসুমে তুরাগ নদের পানি কমে গেছে। নদে দূষণসহ অধিকাংশ স্থানে পাড় দখল করা হয়েছে। সেতুর নিচের অংশে দুই পাশে মাটি ফেলে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। নদের পানিতে বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসড়কের কয়েকটি পিলার স্থাপনের কাজ চলছে। এতে নদের ওই অংশ সরু খালে পরিণত হয়েছে। 

তুরাগ নদে নৌকা বেয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এমদাদ। তিনি বলেন, ‘নদের এই অংশে প্রায় ৭০টি ছোট নৌকা আছে। নদের পাশেই টঙ্গী বাজার। আমরা এখন শুধু মানুষ পারাপার করি। মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়ায় নৌকা চলাচল করতে পারে না।’ 

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন সরকার বলেন, ‘নদের উভয় পাশে মাটি দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। নদটি সরু হয়ে গেছে। বিষয়টি সম্পর্কে বিআরটি প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলার পর মাটি সরিয়ে নেওয়া হবে বলে।’ 

বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার সাদাত বলেন, ‘বাঁধ দিয়ে যেন তুরাগ নদকে গলা টিপে হত্যা করা হচ্ছে। বিআরটি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের জানালেও তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এর প্রতিবাদে আমরা ৫ এপ্রিল প্রতিবাদ সভা ডেকেছি।’ 

টঙ্গী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) হযরত আলী মিলন বলেন, ‘তুরাগ নদের পানিপ্রবাহ বন্ধ করেই সেতুটি ভাঙা ও উড়াল সেতুর পিলার নির্মাণ করা হচ্ছে। কয়েক দিন আগে নৌকা চলাচলের জন্য কয়েক ফিট খুলে দেওয়া হয়েছে। এটি সরকারের বড় প্রজেক্ট। আমাদের তেমন কিছুই করার নেই।’ 

টঙ্গী নদী বন্দরের সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদের পানি প্রবাহ বন্ধ করে সেতুটি অপসরণ ও উড়াল সেতুর পিলার নির্মাণ করে আসছিল। এ বিষয়ে বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। নদের মাঝের অংশে কিছুটা মাটি সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’ 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘সেতু ভাঙা ও উলাড়সেতুর পিলার নির্মাণকাজের দায়িত্ব আমাদের নয়। এটি বিআরটি প্রকল্পের অধীনে।’ 

বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক মহিরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়েই নদের ওপর উড়াল সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। নদের মধ্যে পিলার স্থাপন করতে গিয়ে কিছু অংশ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। কাজ শেষে মাটি অপসরণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত