Ajker Patrika

একাডেমিক কাজে থাকতে পারবেন না অধ্যাপক ইমতিয়াজ, ঢাবি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ মে ২০২৩, ১৯: ১২
একাডেমিক কাজে থাকতে পারবেন না অধ্যাপক ইমতিয়াজ, ঢাবি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ‘ইতিহাস বিকৃতির’ অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে একাডেমিক কাজ থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। 

গতকাল রোববার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের নিয়মিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য আজকের পত্রিকাকে জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রচিত ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’ গ্রন্থে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের বিষয় উদ্‌ঘাটনের জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। 

সভায় বলা হয়, গ্রন্থে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিবেশিত তথ্য অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও ইতিহাসের বিকৃতি রয়েছে। একই সঙ্গে সিন্ডিকেটে অসত্য তথ্য পরিবেশন ও ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এবং প্রকাশককে গ্রন্থটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননাকারী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে জড়িত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়া ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। 

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক একটি অনলাইন গণমাধ্যমের মতামত কলামে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের লেখা বই ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে অবমাননার অভিযোগ তুলে ধরেন। গত ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক ইমতিয়াজকে অপসারণের দাবিতে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামক একটি সংগঠন। একই দাবি তুলে ৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ। সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। 

এদিকে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ফকরুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার আগে গত ১১ এপ্রিল তাঁকে (ইমতিয়াজ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টির পরিচালক এবং ১৩ এপ্রিল অফিস অব দা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে দেন উপাচার্য। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর একাডেমিক কাজ থেকে সরিয়ে নিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

মুচলেকার শর্তে বিএনপিপন্থী শিক্ষককে ক্ষমা
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনপিপন্থী শিক্ষক এ এস এম আমানুল্লাহর একটি ‘মনগড়া ও ভিত্তিহীন’ পোস্টের বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন জিয়া রহমানের একটি প্রতিবেদন গতকালের সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হয়। মুচলেকার শর্তে আমানুল্লাহর ক্ষমার আবেদন করলে তা মঞ্জুর করে সিন্ডিকেট। 

এ নিয়ে জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সভা মনে করে, এটি পাঠ্যপুস্তক, সরকারের শিক্ষানীতি ও ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার একটি অপপ্রয়াস। অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এরই মধ্যে তাঁর কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড ও আচরণ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকা দেওয়ার শর্তে তাঁর ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন সভায় মঞ্জুর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত