এজলাসে আমুর আইনজীবীকে মারধর: ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ২৬
এজলাসে আমির হোসেন আমুর আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরীকে মারধর করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসে বিচারকের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর আইনজীবীকে মারধরের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মোস্তাফিজুর রহমান এই নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির রেজোয়ান খন্দকার তদন্তের নির্দেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, গত ৭ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-৯–এর এজলাস কক্ষে আমির হোসেন আমুর রিমান্ড ও জামিন সংক্রান্ত দরখাস্ত শুনানির সময় দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় একজন আইনজীবী মেঝেতে পড়ে যান বলে প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা আদালতের গোচরীভূত হয়। ন্যায় ও সুষ্ঠু বিচারকার্য প্রতিষ্ঠার জন্য এজলাস কক্ষে প্রত্যেকের শোভন আচরণ বজায় রাখা একান্ত আবশ্যক।

নির্দেশে আরও বলা হয়, এজলাস চলাকালীন প্রকাশ্য আদালতে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের এমন আচরণ আদালত ও আইনজীবীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করাসহ জনগণ ও বিচারপ্রার্থীদের মাঝে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। একটি কমিটি গঠন করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আগামী সাত দিনের মধ্যে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এ নির্দেশ দেওয়া হলো।

উল্লেখ্য, গত ৬ নভেম্বর আমির হোসেন আমুকে আটক করে পুলিশ। ৭ নভেম্বর নিউমার্কেট থানায় করা ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালতে দুপুর ১২টার দিকে শুনানিতে আমির হোসেন আমুকে রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী।

ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, আমু শেখ হাসিনার বাপকে বিপথে নিয়েছিলেন। সেই ভাবেই শেখ হাসিনাকে বিপথে নিয়ে গেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি ১৪ দল নিয়ে মিটিং করেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, যে কোনো মূল্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে হবে। তাঁরা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। আমরা চাই বাংলাদেশে কোনো শেখ হাসিনা বা ফ্যাসিস্ট আর তৈরি না হোক। আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই। এদের বিচার হলে এই দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্ট দল আসবে না।

পরে আমির হোসেন আমুর পক্ষে শুনানির সময় আইনজীবী স্বপন রায় চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্যটি রাজনৈতিক বক্তব্য।

তখন উত্তেজিত হয়ে আদালতে উপস্থিত অন্য আইনজীবীরা আমুর আইনজীবীকে মারধর শুরু করেন। মারধর করতে করতে তাঁকে এজলাস থেকে বের করে দেন। এ সময় তিনি আদালতের দরজার সামনে পড়ে যান। একপর্যায়ে তাঁকে লাথি মারা হয়। এরপর কয়েকজন আইনজীবী তাঁকে তুলে আদালত থেকে বের করে দেন।

আমুর পক্ষে অন্য আইনজীবীরা বক্তব্য দিতে গেলে তাঁদেরও বারবার থামিয়ে দেন আদালতে উপস্থিত উৎসুক আইনজীবীরা।

এ ঘটনার পর পিপি ওমর ফারুক ফারুকী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মারধরের ঘটনা সাজানো। আমুর পক্ষে দু–তিনটি গ্রুপ ওকালতনামা দাখিল করেন এবং তাঁরা নিজেরা নিজেরা আদালতের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি করেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত