হাওরাঞ্চলে নানা সংকটে বন্ধ হচ্ছে কিন্ডারগার্টেন

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৩২
Thumbnail image

করোনা মহামারির কারণে কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ঝরে গেছে কিন্ডারগার্টেন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। হাওরাঞ্চল কিন্ডারগার্টেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন কিশোরগঞ্জ বলছে শিক্ষার্থী ঝরে পড়াসহ নানা সংকটে ইতিমধ্যে ছয়টি কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধের পথে রয়েছে আরও পাঁচ কিন্ডারগার্টেন। কিন্ডারগার্টেনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারিতে সরকারি বা বেসরকারি কোনো সহায়তা পায়নি কিন্ডারগার্টেনগুলো। প্রায় দেড় বছরে নানা সংকটের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন শিক্ষক ও পরিচালকেরা। সংকট মোচনে সরকারি সহযোগিতা চান উদ্যোক্তারা।

হাওরাঞ্চল কিন্ডারগার্টেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, কিশোরগঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, অষ্টগ্রাম উপজেলায় ১৬টি, ইটনা ১২ ও মিঠামইনের তিনটি কিন্ডারগার্টেনে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থী ছিল। দুই শতাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী কর্মরত ছিলেন। করোনার কারণে টানা ১৭ মাস বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও, হাওরাঞ্চলে ছয়টি কিন্ডারগার্টেন খোলেনি। ইটনা ও অষ্টগ্রামে তিনটি করে কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে। আরও পাঁচটি কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হওয়ার পথে। বহু শিক্ষক বদল করেছেন পেশা। অনেকে হয়েছেন বেকার।

ইটনা উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের ফুলকলি কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সেবার মানসিকতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে ভালোই চলছিলাম। করোনায় এখন সর্বস্বান্ত হয়েছি। আমিসহ ১২ জন শিক্ষক এখন বেকার। দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে মেরামত করতে পারিনি। তাই নষ্ট হয়ে গেছে অবকাঠামো। খোলার পর দেখা গেল ৮০ ভাগ ছাত্র-ছাত্রী ঝরে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিতে হয়েছে কিন্ডারগার্টেন।’

অষ্টগ্রাম উপজেলা সদর ইউনিয়নের অনামিকা কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম সেলিম বলেন, ‘ভাড়া বাড়িতে কিন্ডারগার্টেন চলত। করোনায় বন্ধ থাকায় শিক্ষকদের বেতন দিতে পারিনি। আসবাব বিক্রি করে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করি। এখন অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী ঝরে পড়ায় কিন্ডারগার্টেন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলাম।’ 
হাওরাঞ্চল কিন্ডারগার্টেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, কিশোরগঞ্জের সভাপতি ও ইটনা উপজেলা পরিষদ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনাকালে শিক্ষকেরা মানবেতর জীবনযাপন করেছেন। তাঁদের খোঁজ কেউ নেননি। অনেকেই ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। তা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরে দেখা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেছে।

ইটনা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আকিকুর রেজা খান বলেন, ‘আমার জানামতে, দুই/তিনটি কিন্ডারগার্টেন নিষ্ক্রিয় রয়েছে। আর কিন্ডারগার্টেনগুলোতে বই বিতরণ ছাড়া আমরা সাধারণত পরিদর্শন করি না। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত