Ajker Patrika

ব্যর্থ ইউরোপ যাত্রা: মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন ৫ বাংলাদেশি

অনলাইন ডেস্ক
লিবিয়ায় অমানবিক নির্যাতনের পর দেশে ফিরলেন পাঁচ বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত
লিবিয়ায় অমানবিক নির্যাতনের পর দেশে ফিরলেন পাঁচ বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপে গিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্নে দেশ ছেড়ে লিবিয়ায় পৌঁছান পাঁচ বাংলাদেশি। সেখানে দালালের প্রতারণায় মানব পাচারকারী এক মাফিয়া চক্রের খপ্পরে পড়ে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন তাঁরা। বাড়ি থেকে পাঠানো হয় মুক্তিপণ। দীর্ঘ সময় অমানবিক নির্যাতনের পর অবশেষে দেশে ফিরেছেন ভুক্তভোগী ওই পাঁচ বাংলাদেশি।

আজ শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় টার্কিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে আলজেরিয়া থেকে দেশে ফেরত আসেন তাঁরা। ভুক্তভোগীরা হলেন ঢাকার মোস্তাকিম সরকার, শেরপুরের মোজাম্মেল হক এবং মাদারীপুরের জিহাদ ফকির, রোমান হাওলাদার ও ইয়াসিন হাওলাদার।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

পাচারের শিকার ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে মানব পাচার চক্রের সদস্যরা তাঁদের জিম্মি করে অত্যাচার করে। নির্যাতিত ব্যক্তিদের দিয়ে বাংলাদেশে স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। দেশ থেকে টাকা পাঠানোর পরে তাঁদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পাঠানোর জন্য বোটে তুলে দেওয়া হয়। সাগরে তাঁদের বোট নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে তিউনিসিয়ার কোস্ট গার্ড তাঁদের উদ্ধার করে। এরপর তাঁদের আলজেরিয়া সীমান্তে নিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে নানা বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। পরে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এবং আলজেরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তা নিয়ে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনে।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সিনিয়র ম্যানেজার আজিজ আহমেদ বলেন, ‘পাঁচ বাংলাদেশি মানব পাচার সার্ভাইভারের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাফিকিং ইন পারসন্স হিরো নেটওয়ার্কের সহায়তা নিয়েছি। এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে মানব পাচারের শিকার আরও আট বাংলাদেশিকে ব্র্যাক ও টিআইপি হিরো নেটওয়ার্কের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে এনেছে।’

লিবিয়ায় অমানবিক নির্যাতনের পর দেশে ফিরলেন পাঁচ বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত
লিবিয়ায় অমানবিক নির্যাতনের পর দেশে ফিরলেন পাঁচ বাংলাদেশি। ছবি: সংগৃহীত

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান জানান, ইউরোপে পাঠানোরে প্রলোভন দেখিয়ে যাঁদের লিবিয়া নেওয়া হয়, তাঁদের সবাইকে ভালো চাকরির প্রলোভন দেখালেও তাঁরা চাকরি পান না। উল্টো অধিকাংশকেই লিবিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে বন্দী রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এরপর তাঁদের জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় অর্থ। তবে এত কিছুর পরেও ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপের স্বপ্নে লিবিয়া যাওয়ার এই প্রবণতা থামছে না। সমস্যা সমাধানে সাধারণ মানুষ ও বিদেশগামীদের সবার আগে সচেতন হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত