রাজধানীর উত্তরায় ফ্যাশন ভিজেল নামের একটি বায়িং হাউসে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বায়িং হাউসের কেয়ারটেকার হাবিবুল্লাহ ও বাড়ির কেয়ারটেকার রুহুল আমিনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন। 

ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ৬ /এ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাসার তৃতীয় তলার ওই বায়িং হাউসে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। 

ওসি মহসীন বলেন, ‘উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ওই বায়িং হাউসে দুপুর ১টার পর লাগাতার ছয়টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে কেয়ারটেকার হাবিবুল্লাহকে আটক করা হয়। পরে রাতে রুহুল আমিনকে আটক করা হয়। বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁরাও কিছুটা আহত হয়েছেন।’ 

ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোর্শেদ আলম, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) এস এম আশিকুর রহমান এবং উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত হন। পরে ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট উপস্থিত হয়। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ পুলিশ সদস্যরা ওই বাড়িতে তল্লাশি চালান। এ সময় কেয়ারটেকার হাবিবুল্লাহকে একটি ককটেলসহ আটক করা হয়।

নাম না প্রকাশের শর্তে এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, ‘দুপুরে হঠাৎ করে বায়িং হাউসের ভেতরে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়। এ ঘটনায় উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরসহ আশপাশের সেক্টরে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

বাড়ির কেয়ারটেকার রুহুল আমিনের ছেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি গোসল করছিলাম। পরে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। পরে শরীর মুছে বের হয়েছি। তখন ওপরে গিয়ে দেখি রুম থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। আর গ্লাস, পানির ফিল্টারসহ সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। বিকট শব্দ পাওয়ার পরপরই আশপাশের লোকজনও জড়ো হয়।’ 

ভবনের মালিক ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. শরীফ আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের বাসার তৃতীয় তলায় একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত আমি এখনো কিছুই জানি না।’ 

শুক্রবার রাতে ওসি মহসীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের অভিযান সমাপ্ত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি বিস্ফোরিত বোমার অংশবিশেষ এবং একটি অবিস্ফোরিত তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’ 

এ বিষয়ে উত্তরা বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা করা হবে। ঘটনাস্থল থেকে বোমা তৈরির সামান্য কাঁচামাল পাওয়া গেছে। বোমাটি কিছুদিন আগে এখানেও তৈরি করা হয়ে থাকতে পারে, আবার অন্য কোথাও থেকে এখানে নিয়ে আসা হতে পারে।’ 

রাজনৈতিক সহিংসতা তৈরি, নাকি জঙ্গিবাদের জন্য বোমা ছিল—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি মোর্শেদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে এমন কিছুই বলা যাবে না। আটক হওয়া ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানানো যাবে।’