কনস্টেবল পদে দেড় কোটি টাকার ঘুষ, সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগে দেড় কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনসহ দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

আজ বৃহস্পতিবার মাদারীপুর জেলা দায়রা জজ আদালতের দুদকের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম চার্জশিট দাখিল করেন। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

এর আগে গত ৭ মে কমিশন থেকে মামলার অনুমোদন করা হয়। গত বছরের ৫ জুলাই মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) সুব্রত কুমার হালদারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁদের বিরুদ্ধে কনস্টেবল নিয়োগে ১ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। 

আসামিরা হলেন—বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল মো. নুরুজ্জামান সুমন, জাহিদুল ইসলাম, মাদারীপুর জেলা পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট পিয়াস বালা ও সাবেক টিএসআই গোলাম রহমান। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৬ হাজার ৮০০ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৮৮০ জন নারীসহ মোট ৯ হাজার ৬৮০ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালের ২৮ মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা রেঞ্জের অধীনে মাদারীপুর জেলায় সাধারণ পুরুষ ১৬ জন ও সাধারণ নারী ৩ জন এবং বিশেষ কোটায় ১৫ জন পুরুষ ও ২০ জন নারীসহ মোট ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। যেখানে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়। যার সভাপতি ছিলেন মাদারীপুর জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার। 

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপ হিসেবে ২০১৯ সালের ২২ জুন শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৯৯৩ জন, যাদের মধ্যে ৩৬৪ জন প্রার্থী শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে ওই বছরের ২৩ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর চূড়ান্ত ফলাফলের ভিত্তিতে ৫৪ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের সুপারিশ করে নিয়োগ কমিটি। উক্ত নিয়োগ চলাকালে ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার অবৈধ ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর থানায় ছয়টি জিডির ভিত্তিতে জব্দ করা হয়। বিষয়টি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে এবং বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক পরবর্তীতে দুদকে প্রেরণ করা হয়। 

দুদক আরও জানায়, দুদকের তদন্তে মাদারীপুর পুলিশ সুপার অফিস থেকে জব্দ করা ৩২টি লিখিত পরীক্ষার খাতা ও আনুষঙ্গিক রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় ১৭ জন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট ১ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন আসামিরা। দুদকের অনুসন্ধানেও আসামিদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ / ৪২০ / ১০৯ ধারা এবং তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত