Ajker Patrika

সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: জাবির প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৪৭
সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: জাবির প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে তৃতীয় দিনের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়। 

এ সময় আন্দোলনকারীরা অবিলম্বে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে গঠিত স্ট্রাকচার্ড কমিটির কাজ শেষ করে শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান। এ ছাড়া অছাত্রদের দ্রুত হল থেকে বের করার দাবি জানানো হয়। 

মানববন্ধনে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি বলেন, ‘পাঁচ দিন সময়ের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন এখন পর্যন্ত ২৫০০ অবৈধ ছাত্রের কোনো তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। তাহলে বাকি দুই দিনে কীভাবে তাদের হল থেকে বের করবেন। আমরা বলেছিলাম, এই বিশ্ববিদ্যালয় বাদী হয়ে ধর্ষণের মামলাটি করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কোনো মামলা করেনি, শুধু একটা জিডি করেছে। আমরা চেয়েছিলাম যে ধর্ষক শিক্ষার্থীর সনদ বাতিল করা হোক। কিন্তু তাও অস্থায়ী বাতিল করা হয়েছে।’  

তিনি বলেন, ধর্ষণের যারা সহযোগী তাদেরও বিচারে গড়িমসি করছে এই প্রশাসন। উপাচার্য বারবার বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কমিটমেন্ট দেন কিন্তু তা আর ফলোআপ করা হয় না। 

মঞ্চের আহ্বায়ক পারভীন জলি বলেন, ‘ধর্ষককে যারা পালাতে সাহায্য করেছে তারা ছাত্রলীগের কর্মী ছিল। কিন্তু এই প্রক্টর মোস্তাফিজকে খুঁজে আনতে পাঠিয়েছিলেন দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে। তাহলে প্রক্টোরিয়াল টিমের কাজ কী? তাদের উচিত ছিল এমএইচ হলকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে মোস্তাফিজকে আটক করা। 

কিন্তু পাঠানো হয়েছে দুজন ছাত্রলীগের কর্মীকে। এখান থেকেও বোঝা যায়, প্রক্টরের কোনো সদিচ্ছা ছিল না, তাদের আটক করার। এই প্রক্টর সকল প্রকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন তাঁর পদে বহাল থাকার। প্রভোস্টও তাঁর দায় এড়াতে পারেন না। আমরা তাঁর শাস্তি চাই। তাঁর স্বপদে থাকার কোনো অধিকার নেই। তাঁদের শুধু পদ থেকে সরালেই হবে না, তাঁদের রাষ্ট্রীয় আইনে শাস্তি দিতে হবে ধর্ষণে সহযোগিতা করার জন্য।’ 

জাহাঙ্গীরনগরে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকাদর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘আমরা এমন একজন উপাচার্যকে পেয়েছি যিনি নিষ্ক্রিয় ও নির্বিকার। ক্যাম্পাসে যত ঘটনা ঘটে এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তিনি বড়জোর একটা নির্দেশ পাঠান কিন্তু এর বাইরে কিছু করতে পারে না। আমরা অছাত্রদের বের করার কথা বলেছি, তিনি শুধু নির্দেশ দিয়ে নির্বিকার হয়ে বসে আছেন। আমরা অভিযুক্তদের সার্টিফিকেট বাতিল চাই, অথচ শুধু স্থগিত করা হয়েছে।’ 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র আহসান লাবিব বলেন, ‘আমরা ধর্ষণের ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমেই দেখি প্রক্টর-প্রভোস্ট ধর্ষককে বাঁচানোর পাঁয়তারা করছেন এবং পরিশেষে তাঁরা ধর্ষককে পালাতে সহযোগিতা করেন। যাঁরা ছাত্রলীগের ছায়া হিসেবে কাজ করে তাঁদের নৈতিক অধিকার নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্বে থাকার। এদিকে এমন একজন শিক্ষকের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হয় যিনি ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে স্ট্রাকচারড কমিটি গঠিত হওয়ার পরেও কেন তাঁকে বহিষ্কার করা হয়নি?’ 

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক রায়হান রাইন, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত