পরকীয়া সন্দেহে হত্যার পর স্ত্রীর চোখ উপড়ে ফেলা হয়: পুলিশ 

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

পরকীয়ায় জড়িত সন্দেহে স্ত্রী আনজুর সঙ্গে বিবাদ চলছিল স্বামী ফিরোজের। পরে ক্রাইম পেট্রল দেখে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী স্ত্রীকে আশুলিয়ার একটি বাঁশ বাগানে ডেকে নিয়ে হত্যার পর চোখ উপড়ে ফেলেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ফিরোজের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ এসব তথ্য জানিয়েছে। 

আজ রোববার দুপুরে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী। এ সময় তিনি এসব তথ্য জানান। এর আগে শনিবার রাতে র‍্যাব–৪ ও আশুলিয়া থানা–পুলিশের যৌথ অভিযানে আশুলিয়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার মো. ফিরোজ ওরফে লাল মিয়া (৪৫) মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার রৌহা গ্রামের মৃত হাকিম উদ্দিনের ছেলে। স্ত্রী আনজুকে (৩২) নিয়ে আশুলিয়ার পার্শ্ববর্তী গাজীপুরের কাশিমপুর বাগবাড়ি এলাকায় বাস করতেন তিনি। 

নিহত আনজু খাতুন গাইবান্ধা জেলার সদর থানার ঘাগোয়া ইউনিয়নের মৃত মনোয়ার হোসেনের মেয়ে। তিনি আশুলিয়ার হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। 

পুলিশ জানায়, গত ২৬ এপ্রিল সকালে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার একটি বাঁশবাগান থেকে আনজু খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। কাছে থাকা কর্মস্থলের আইডি কার্ড থেকে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে তদন্তে নামে থানা–পুলিশ ও ছায়া তদন্ত শুরু করে র‍্যাব–৪। তদন্তের একপর্যায়ে ঘটনার সঙ্গে স্বামীর যোগসূত্র খুঁজে পেয়ে স্বামীকে আটক করলে সব স্বীকার করেন তিনি। 

ফিরোজের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আনজু খাতুনের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে সন্দেহ করতেন তিনি। এ নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বাক্বিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। পরে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ফিরোজ। 

আনজুরই এক পুরোনো সিম দিয়ে কথা বলে তাঁকে কারখানা থেকে ডেকে আনেন ফিরোজ। এছাড়া নিজেকে আড়ালে রাখতে নিজের মোবাইল ও সিম মানিকগঞ্জে চালু করে রেখে এসেছিলেন ফিরোজ। কারখানা ছুটির পর কবিরাজ দেখানোর কথা বলে স্ত্রীকে কৌশলে বাঁশ বাগানে নিয়ে স্লাই রেঞ্চ দিয়ে আঘাত করেন তিনি। 

পরে আনজুর মুখ মণ্ডল থেঁতলে দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে পালিয়ে যান ফিরোজ। স্লাই রেঞ্চ ও রক্ত মাখা কাপড় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার একটি ডাস্টবিনে ফেলে মানিকগঞ্জে চলে যান তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পরে নিহতের ভাই বাদী হয়ে ২৭ এপ্রিল আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই 
র‍্যাবের সহযোগিতায় আমরা আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। আদালতেও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত