মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন: নাশকতা ও হত্যার অভিযোগে মামলা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ২৩
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ৪৫

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন এবং আগুনে পুড়ে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় একটি নাশকতা ও হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে থানায় রেলওয়ের ট্রেন পরিচালক খালেদ মোশাররফ বাদী হয়ে এই মামলা করেন। 

আজ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘নাশকতা ও হত্যার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।’ 

এ ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশ, র‍্যাব, থানা-পুলিশ, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমসহ (সিটিটিসি) বিভিন্ন ইউনিট ঘটনা তদন্তে মাঠে কাজ শুরু করেছে বলেও জানান তিনি। 

এর আগে রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন জানান, তেজগাঁওয়ে ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রেলের ডিস্ট্রিক্ট ট্রান্সপোর্ট অফিসারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও রেল স্টেশনে ঢাকা-নেত্রকোনা রুটে চলাচল করা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। ট্রেনে আগুন দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের মিডিয়া সেল কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার। 

শাহজাহান শিকদার বলেন, ‘আনুমানিক ভোর ৫টায় তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে অগ্নি-সন্ত্রাসীরা এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দেয়। একটি বগি থেকে চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি দুটি বগিতে সার্চ করা হচ্ছে। তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট পুলিশ প্রোটেকশনে কাজ করে ৬টা ৪৫ মিনিটে আগুন নেভায়।’ 

এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ট্রেনটি নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় আসছিল। বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর খিলক্ষেত এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীরা পেছনের বগিতে আগুন দেখতে পান। পরে তাঁরা চিৎকার করতে শুরু করেন। এরপর চালক ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশনে থামান।’ 

নিহত চারজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন—নাদিরা আক্তার পপি ও তাঁর তিন বছরের ছেলে ইয়াসিন। 

এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর ভোর ৪টার দিকে গাজীপুরের ভাওয়ালে রেল স্টেশনের আউটার সিগন্যাল এলাকায় চিলাই ব্রিজের কাছে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে একজন নিহত ও সাতজন আহত হয়। সেদিন গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘নাশকতার উদ্দেশ্যে রেললাইন কেটে রাখার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। পুরো ঘটনা তদন্তের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত