মারামারি ও চুরির মামলায় আসামি ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী তিন শিশু

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১৮: ০৮
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে একই পরিবারের তিন শিশুর বিরুদ্ধে আদালতে মারামারি ও চুরির মামলা করা হয়েছে। এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষ থেকে মামলাটি করা হয়। মামলায় শিশুদের আসামি করার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আবুল হাসেমের সঙ্গে প্রতিবেশী তমিজ উদ্দিনের জায়গা সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলছে। এই বিরোধের জের ধরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর মো. আবুল হাসেম বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল গ্রহণকারী আদালতে একটি মামলা করেন। তিনি কুলিয়ারচর পৌর এলাকা নোয়াগাঁও বেপারি পাড়া মহল্লার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেন। মামলায় গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে আবুল হাসেমের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ, ভাঙচুর ও চুরির অভিযোগে তমিজ উদ্দিন ও তার ছেলে মনির মিয়াসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার আসামিদের মধ্যে ৬ বছরের এক শিশু ও ১৩ বছরের দুই শিশু আছে। এ ছাড়া একই পরিবারের ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় নাম থাকা এক শিশুর বাবা মনির মিয়া বলেন, ‘আবুল হাসেম মাস্টার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে তাদের ছত্র ছায়ায় বিভিন্নভাবে গ্রামের অনেক মানুষকে নাজেহাল করেছে। অনেকের জায়গা সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে। এই কারণে ভৈরবের জাকির মিয়া নামের এক ব্যক্তি ওই আবুল হাসিমের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। এখন জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের কারণে রাতের বেলায় ঘটনা দেখিয়ে আমার ৬ বছরের শিশু সন্তানকেও আসামি করেছে। অথচ রাতের বেলায় সে একা ঘর থেকে বাহির হইতে ভয় পায়।’

শিশুদের আসামি করে মামলা করার বিষয়ে কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল মিল্লাত বলেন, এই ধরনের মামলায় শিশুদের মানসিকতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা কাম্য নয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী আবুল হাসেমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথমে বলেন, ৬ বছর ও ১৩ বছরের শিশুর নাম থাকতে পারে। পরে তিনি বলেন, বিষয়টি হয়তো শিশুর বড় ভাইয়ের নামের পরবর্তীতে তার নাম চলে এসেছে। তাদের সবার নামতো সঠিকভাবে জানা নেই, এ কারণে এমনটা হতে পারে। পরবর্তীতে বলেন, টাইপ মিস্টেকও বলছেন। পরক্ষণে আবার বলছেন, এটা তদন্তের বিষয়, তদন্তে যা আসবে তাই হবে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মনমথ চন্দ্র দাস আদালতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ফাইল দেখে বিস্তারিত বলা যাবে। কোনো তথ্য লাগলে আগামীকাল মঙ্গলবার আসুন।’

এ বিষয়ে জানতে কিশোরগঞ্জ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত