বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় পোস্তগোলা শিল্প এলাকার রাস্তা, বাড়ছে জনদুর্ভোগ

জহিরুল আলম পিলু, শ্যামপুর-কদমতলী (ঢাকা) 
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ৪৬

রাজধানীর শ্যামপুর থানার পোস্তগোলা শিল্প এলাকার একটি রাস্তায় সারা বছরই পানি জমে থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এলাকার রাস্তাগুলো তলিয়ে যায় কয়েক ফুট পানির নিচে। এতে বোঝার উপায় নেই কোথায় গর্ত আছে। সেই সঙ্গে খানাখন্দে চলাচলের অনুপযোগী হতে চলেছে ব্যস্ততম এই শিল্প এলাকার রাস্তাগুলো। 

এতে ভোগান্তিতে পড়েন ব্যবসায়ী, শত শত দোকানদার, বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও পথচারীরা। পয়োনিষ্কাশনের অব্যবস্থাপনা, নিয়মিত ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করা ও খোলা ড্রেনে ময়লা আবর্জনা ফেলায় পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। 

১৯৫২ সালে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে স্থাপিত হয় (তৎকালীন ডিআইটি) বর্তমান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্তগোলা শিল্প এলাকা। এখানে রয়েছে ৫ ও ১০ কাঠার ১৫৭টি প্লট। তখন এই এলাকা ছিল অনেকটা গ্রামের মতো। জনসংখ্যা ও বাড়িঘর ছিল খুবই সামান্য। বর্তমানে এখানে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও একটি কাঁচা বাজার। রয়েছে ছোট-বড় কয়েকটি রাস্তা। 

road-2এক সময় এই শিল্প এলাকার রাস্তাগুলোর প্রশস্ত ছিল ৩০-৪০ ফুট। কিন্তু এই প্রশস্ত রাস্তাগুলো দখল করে গড়ে উঠেছে রিকশা-ভ্যান গাড়ির গ্যারেজ ও মেরামতের কারখানা। শুধু তাই নয়, রাস্তার ওপর বসেছে কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান। 

সরেজমিন দেখা যায়, দখলের কারণে শিল্প এলাকার প্রশস্ত রাস্তাগুলো সরু হয়ে গেছে। এখানকার বেশির ভাগ রাস্তার ইট-সুরকি অনেক আগেই বিলীন হয়ে গেছে। ফলে এসব ভাঙাচোরা কাঁচা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে ছোট-বড় ও ভারী যানবাহনগুলোকে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘জুরাইন মেইন রোড থেকে বাজার এলাকায় গিয়ে হাতের বাম দিকের শ্যামপুর থানা পর্যন্ত সে সড়ক গেছে সেখানে ছাড়া বছরই পানি থাকে। কয়েক বছর যাবৎ এ অবস্থা। শুধু তাই নয়, এই কালো বর্ণের পানিতে বিভিন্ন কারখানার কেমিক্যাল, পোড়া মবিল ও বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড এসে মিশ্রণ হয়। ফলে এই দূষিত পানি পাড়িয়ে চলাচল করায় আমিসহ অনেকের পায়ে চুলকানিসহ পানিবাহিত নানা চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়েছে।’ 

মুদি দোকানদার আলম বলেন, ‘রাস্তার পানির কারণে ক্রেতারা আসে না। ফলে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’ 

তিনি আরও বলেন, শিল্প এলাকা একটি ড্রেনের মুখ আটকিয়ে অন্য গলির আরেকটি ড্রেনের কাজ করায় অনেক রাস্তার পানি সরছে না। এর মধ্যে রাস্তায় জলাবদ্ধতা থাকায় বড় গর্ত বোঝা যায় না। এ কারণে প্রতিদিনই বিভিন্ন পথচারীরা পড়ে গিয়ে আহত হয়। পাশাপাশি যানবাহন উল্টে যাচ্ছে। 

শিল্প এলাকার চাল ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান জানান, এই এলাকার রাস্তাটি সারা বছরই পানিতে ডুবে থাকে। ময়লা আবর্জনায় ড্রেন ভরে যাওয়ায় পানি চলাচল করতে পারে না। 

road-3তিনি বলেন, ‘আমরা দোকানদাররা চাঁদা তুলে ড্রেন পরিষ্কার করতাম। স্থানীয় কাউন্সিলরও তাদের লোকবল দিয়ে পরিষ্কার করাতেন। কিন্তু এখন সব বন্ধ রয়েছে। ড্রেনটি জুরাইন ঢাকা-মাওয়া সড়কের মুখের ড্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে দিলে পানি জমত না।’ 

এসব বিষয়ে রাজউক পোস্তগোলা শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই এলাকার রাস্তাগুলো প্রায় ১৫ বছর আগে সংস্কার করা হয়। পদ্মা সেতু ও আন্তজেলা রেল সার্ভিস চালু হওয়ায় এই শিল্প এলাকার পাশ দিয়ে পরিবহন চলাচল কয়েক গুন বেড়েছে। বেড়েছে জনসংখ্যাও। ফলে শিল্প এলাকার গুরুত্বও বেড়েছে। 

তিনি বলেন, এখানকার রাস্তাঘাট ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। এই শিল্প এলাকাকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মতো বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত করা হোক। এতে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। এ ব্যাপারে দুই বছর আগে আমি রাজউকে লিখিত আবেদনও করেছি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত