Ajker Patrika

শ্যামলীতে গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের ফের সড়ক অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫: ১৫
রোববার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করেছেন আহতরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রোববার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করেছেন আহতরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আহতরা রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন। আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তাঁরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনের দুই পাশের সড়কে ব্যারিকেড দেন। আহত বেশ কয়েকজন সড়কের ওপর শুয়ে পড়েন।

সড়ক অবরোধের কারণে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের উভয় পাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অফিস শুরুর মুহূর্তে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষেরা।

রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সও পার হতে দিচ্ছেন না তাঁরা। গতকাল শনিবার দিবাগত মধ্যরাতেও পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছিলেন আহতরা।

শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম আজম বলেন, শিশুমেলা ও আশা ইউনিভার্সিটির সামনের সড়ক ব্লক করে আন্দোলন করছে চিকিৎসারত জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এ কারণে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে।

গুলিবিদ্ধ মো. ইমরান প্রমাণিক বলেন, ডান পায়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন, ছয়মাস ধরে তাঁর কোনো রকমে চিকিৎসা চলছে, কিন্তু হাঁটতে পারছেন না।

তাঁত শ্রমিক এই তরুন বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ১ লাখ টাকা দিয়েছে। আর কোনো সহযোগিতা পাননি।

শরীফুল ইসলাম। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে গ্রামের বাড়ি। থানার সামনে গত ৪ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর বাম পায়ে গুলি লাগে। হাঁটতে পারেন না। প্রবাসী ফেরত এই যুবক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আর বিদেশে যেতে পারেননি। এখন দেশেই চিকিৎসা নেন। তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসা হচ্ছে না। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক এসে বলেছেন, আরও আগে চিকিৎসা শুরু হলে অনেকের হাত–পা, চোখ ভালো করা যেত।

এই যুবকের চিকিৎসার জন্য এযাবত ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, ছয় মাস ধরে উপার্জন নেই। বিদেশে থাকাকালে যে আয় করেছেন, তা প্রায় শেষ।

এদিকে সড়ক অবরোধের কারণে মিরপুর রোডের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো গাড়ি চলছে না। ওই এলাকার হাসপাতালে আসা রোগীদের হেঁটে হাসপাতালে যেতে দেখা গেছে। অনেক রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়তে দেখা গেছে। সড়ক অবরোধের প্রভাব পুরো রাজধানীতে পড়েছে। তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

আহতরা জানান, গত তিন মাস আগেও জুলাই আন্দোলনে আহতরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন। তখন মধ্যরাতে হাসপাতালের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও উপদেষ্টাসহ চারজন উপদেষ্টা তাদের দাবি–দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সরে যায়। পরে তাঁদের সঙ্গে একটি বৈঠকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে আহতদের স্বীকৃতি এবং পুনর্বাসন, চাকরির ব্যবস্থা, চিকিৎসা ও ভাতা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এরপর এত দিন তাদের কোনো একটি দাবিও সরকার পূরণ করেনি বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেন।

আহত আন্দোলনকারীদের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে তাঁদের তিনটি দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা সড়কে থেকে সরবেন না। জরুরি ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান তাঁরা। এ ছাড়া প্রত্যেক আহতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ভিত্তিতে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান।

রোববার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করেছেন আহতরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রোববার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করেছেন আহতরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আহতরা বলেন, আমরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ঘটানোর আন্দোলনে আহতরা টাকা-পয়সা কিছুই চাই না, শুধু সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন চাই। শেখ হাসিনার পতনের পর যে সরকার আমাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারেনি তাদের কাছে আমাদের আর কোনো আস্থা নাই। উপদেষ্টাদের প্রতিও আমাদের কোনো আস্থা নাই। যে কারণে আজকে আমরা রাস্তায় নেমেছি।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

থানায় থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের তালিকা হচ্ছে

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত