Ajker Patrika

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের তৃতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ, ভোগান্তিতে মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাত দফা দাবিতে আবার সড়ক অবরোধ করেছেন ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত ২৯ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশনের পাশাপাশি প্রতিদিন তাঁরা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সময় বেঁধে দিয়ে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কলেজের সামনের সড়ক আটকে দেন তাঁরা। শিক্ষার্থীরা বাঁশ দিয়ে মহাখালী-গুলশান সড়ক আটকালে দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই সড়কে আটকে পড়া গাড়িগুলো পরে অন্য সড়ক ঘুরে চলে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। তাঁরা গতকাল শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। তাঁদের দাবি না মানলে মহাখালী, গুলশানের রাস্তা এমনকি উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার বিমানবন্দরের রাস্তাও বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন নায়েক নূর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের ঘোষণা না এলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ চলবে।

এদিকে আমরণ অনশনে থাকা ১২ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ছাড়া অনশনরত ৭ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছে।

আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিনে তিতুমীর কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজটির প্রধান ফটকের সামনের ফুটপাতে আটজন শিক্ষার্থী শুয়ে আছেন। তাঁদের ঘিরে আছেন গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার ভোরে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁরা হলেন বাংলা বিভাগের রানা, অর্থনীতি বিভাগের ইউসুফ এবং গণিত বিভাগের রায়হান।

এরপর বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে অনশনরত আরও দুই শিক্ষার্থীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁরা হলেন বোটানি বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান ও নাঈম। তবে তাঁরা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

অনশনে থাকা ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি সকাল থেকে তিনি অনশনে আছেন। তাঁর শরীরের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাঁদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ছাড়া অনশনে রয়েছেন ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, গণিত বিভাগের আমিনুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের মো. বেলাল হাসান, দুর্বার মামুন, এহতেসাম, হুমায়ূন কবির, মাফিজুল ইসলাম, রাব্বি ইসলাম ও মাইনউদ্দিন।

শনিবার বেলা দেড়টার দিকে সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের চিকিৎসক রাসেল আহম্মেদ তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আটজন যাঁরা এখনো অনশনে রয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের শরীর দুর্বল। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁরা কিছু না খাওয়ায় ডিহাইড্রেশনে চলে গেছেন। তাঁদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শনিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা যায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইতিমধ্যে এই কমিটি তিতুমীর কলেজসহ সাতটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাঁদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই কলেজগুলোর শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা ও মানোন্নয়নই বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য এবং এ ক্ষেত্রে করণীয় সব বিকল্পই সরকারের বিবেচনায় থাকবে। এই অবস্থায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা আদায়ে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই। সে জন্য আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ করা হলো।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণাসহ সাত দফা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ ও অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘তিতুমীর ঐক্য’।

আন্দোলনকারীরা এর আগে ৭ জানুয়ারি কলেজটির প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দেন। একই দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি দেন তাঁরা। এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই কমিটি ‘যথাযথভাবে’ কাজ করছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত