মধ্যবিত্তদেরও স্বস্তি টিসিবি

রেজাউর রহিম, ঢাকা 
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২১, ১৪: ০৫

কল্যাণপুরে প্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন। গতকাল বুধবার সকালে তিনি জীবনে প্রথম টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে আসেন। হঠাৎ করে নিম্ন আয়ের মানুষের বাজারে ভাগ বসিয়েছেন বলে কথা বলতে বেশ লজ্জা পাচ্ছিলেন এই চাকরিজীবী।

আজকের পত্রিকাকে আনোয়ার জানান, করোনায় বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই খরচ সামলাতে না পেরে এখানে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘কখনো ভাবতে পারিনি এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে হবে। হয়তো আমি না এলে অন্য অসহায় কেউ কিনতে পারত।’

করোনায় আনোয়ারের মতো অনেকের আয় কমেছে। কর্মসংস্থান হারিয়েছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ। বেড়েছে নতুন দারিদ্র্যের সংখ্যাও। কিন্তু বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি। এমন পরিস্থিতিতে সুলভে নিত্যপণ্যের জন্য নিম্নবিত্ত মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তদেরও স্বস্তির ঠিকানা হয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মধ্যবিত্তের আধিপত্যের কারণে চোখের পলকেই খালি হয়ে যাচ্ছে টিসিবির ট্রাক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে অনেককে।

কল্যাণপুরে টিসিবির ট্রাকের পণ্য বিক্রেতা আসাদ বলেন, ট্রাক স্পটে আসার পরপরই মানুষ টানা কিনতে থাকে। পণ্য দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। আসাদ জানান, বুধবার ৪০০ কেজি চিনি, ৪০০ কেজি ডাল আর ৪০০ লিটার ভোজ্যতেল বিক্রির জন্য আনা হয়েছে।

কল্যাণপুরে জাহানারা নামের আরেক ক্রেতা জানান, তাঁর স্বামী যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন, করোনার জন্য গত প্রায় দেড় বছর বন্ধ রয়েছে। তাই সংসার চালাতে প্রায়ই টিসিবির পণ্য কিনতে আসেন। সংসারে তেল, চিনি, ডাল এগুলো তো লাগেই। স্বামীর চাকরি হলে আর আসব না, বলেন জাহানারা।

শুধু কল্যাণপুর নয়, বুধবার রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর এলাকায় টিসিবির ট্রাকের সামনে দেখা গেছে মানুষের ভিড়। এ সময় অনেকেই স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে একেবারেই উদাসীন ছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, কোভিডের কারণে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত বেকার হয়েছেন ২৬ লাখের বেশি মানুষ। কর্মজীবীদেরও আয় কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। অন্যদিকে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজারও বেশ চড়া।

সার্বিক বিষয়ে টিসিবির যুগ্ম পরিচালক ও মুখপাত্র হুমায়ূন কবির বলেন, টিসিবির ক্রেতায় মধ্যবিত্তরা আসছেন, এটা ঠিক। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই সারা দেশে ৫০টি ট্রাক বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে পণ্যের পরিমাণও। তারপরও হয়তো ক্রেতাদের চাপে পণ্য দ্রুত শেষ হচ্ছে।

তিনি জানান, রাজধানীসহ সারা দেশে সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রম চলবে। সারা দেশে টিসিবির ৪০০ ভ্রাম্যমাণ ট্রাক এবং রাজধানীতে ৮০টি ও চট্টগ্রাম শহরে ২০টি ট্রাকের মাধ্যমে এ বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া বিভাগীয় ও জেলা শহরেও ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

বর্তমানে টিসিবির প্রতিটি ট্রাকে বিক্রির জন্য প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০ কেজি চিনি, ৩০০ থেকে ৬০০ কেজি মসুর ডাল এবং ৮০০ থেকে ১২০০ লিটার সয়াবিন তেল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত