মামলা করে ভেজালে পড়তে চাই না: নিহত যুবদলকর্মী শাওনের ভাই

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০: ০৩
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২: ৫৬

ঝামেলা এড়াতে মামলা করতে চান না মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে গত বুধবার বিকেলে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত যুবদলকর্মী শাওনের (২৫) ছোট ভাই সোহান। তিনি বলেছেন, ‘মামলা করে ভেজালে পড়তে চাই না। মামলা করলে সমস্যা হবে। এ জন্য আমরা কোনো মামলা করি নাই, জিডিও করি নাই।’ 

কোনো দিক থেকে হুমকি আছে কি না জানতে চাইলে সোহান বলেন, ‘অনেকে অনেক কথা বলে। সেগুলো বলে লাভ নাই। পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের থানায় ডাকা হয়েছে। কিন্তু আমরা মামলা করব না। থানায় যাব কেন?’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি মামলা করতে বললেও মামলা করব না। আমাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’ 

এদিকে পুলিশ বলছে মামলা হবে। মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আদিবুল ইসলাম বলেছেন, ‘শাওনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। আমরা যোগাযোগ করছি। আজ শনিবারের মধ্যে মামলা হয়ে যাবে। আমরা নির্দেশনা দিয়েছি আজকের মধ্যে যেন মামলা হয়ে যায়। কারণ এগুলো নিয়ে দেরি করা যায় না।’ 

গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাওনের মৃত্যু হয়। শাওন মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মীরকাদিম পৌরসভার মুরমা এলাকার সোয়াব আলীর ছেলে। পেশায় ইজিবাইক চালক শাওনের আট মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টায় দ্বিতীয় জানাজার পর তাঁর মরদেহ মুরমা জামে মসজিদ কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে দেড় হাজারের বেশি আসামি করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় পুলিশ ও শ্রমিক লীগ থেকে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। ঘটনার দিনআটক ২৪ জনকে ওই দুই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তবে, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত আর কাউকে আটক করা হয়নি। বিএনপি নেতা অভিযোগ করেছেন, পঞ্চসার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফার লোকজন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীর কারখানা ও অফিসে হামলা করছে। 

গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় মুন্সিগঞ্জের দয়াল বাজারের মাল্টি ফিশিং নেট কারখানায় মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিকশা যোগে কিছু লোক এসে হামলা করে। কারখানার মালিক ও পঞ্চসার বিএনপির সদস্যসচিব আয়াত আলী দেওয়ান অভিযোগ করেন, ‘আমার স্টাফরা জানিয়েছে, চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার লোকেরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ও বন্দুকের ভয় দেখিয়ে কারখানা থেকে ৬-৭ লাখ টাকার মাল লুট করে নিয়ে গেছে। তবে, এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে থানায় যেতে পারিনি। কারণ, আমাদের নামে মামলা আছে।’ 

এর আগে গত বুধবার রাতে জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নিজামউদ্দিনের সুতার কারখানায় আগুন লাগার ঘটনাতেও গোলাম মোস্তফার দিকে ইঙ্গিত করে কারখানা মালিক বলেছিলেন, ‘কিছু নব্য আওয়ামী লীগ এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’ 

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে বেশ কয়েকবার ফোন কল করা হলেও গোলাম মোস্তফা রিসিভ করেননি। 

মুন্সিগঞ্জ শহর বিএনপির আহ্বায়ক ইরাদত হোসেন মানু বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই আমাদের নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না। পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তবে, ওই ২৪ জন ছাড়া আর কেউ আটক নেই।’ 

মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব বলেন, ‘কেউ যদি এ রকম কারও বাসা, অফিস বা কারখানায় হামলা করে তাহলে দ্রুত পুলিশকে জানাতে হবে। পুলিশ আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত