Ajker Patrika

হোসেনপুরে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ১৫: ৪৪
হোসেনপুরে প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় মা ও দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হোসেনপুর থানায় নিহত তাছলিমা আক্তারের ভাই কবিরুল ইসলাম নয়ন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি করেন। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার সাহেদল ইউনিয়নের বাসুরচর গ্রামে নিজ ঘরের দুটি বিছানা থেকে সৌদিপ্রবাসী মঞ্জিল মিয়ার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার (৩৫), বড় মেয়ে মোহনা (১১) ও ছোট মেয়ে বন্যার (৭) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, মঞ্জিল মিয়া পাঁচ বছর আগে সৌদি আরবে যান। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী তাছলিমা, দুই মেয়ে মোহনা ও বন্যাকে নিয়ে বসবাস করতেন। মোহনা স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে এবং বন্যা প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। গতকাল সকালে মোহনাকে স্কুলে নিয়ে যেতে তাঁর এক বান্ধবী তাদের ঘরে যায়। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিতেই দরজাটি খুলে যায়। পরে ভেতরে গিয়ে মা ও দুই মেয়েকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা সেখানে ছুটে আসে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দুটি বিছানায় মা ও দুই মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখে। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, গতকাল বেলা ২টার দিকে ময়মনসিংহ সিআইডির ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থলে এসে নমুনা সংগ্রহ শুরু করে। নমুনা সংগ্রহ শেষে বিকেলে তারা ফিরে যায়।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘তাছলিমা আক্তার ও তাঁর দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের কার্যক্রম এখনো চলছে। পুলিশের ফরেনসিক টিম পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে আলামত সংগ্রহ করার পর ফরেনসিক ল্যাবে পাঠিয়েছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ল্যাবের রিপোর্ট সংগ্রহ করে আমাদের তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করব।’

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ আরও বলেন, ‘গতকাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে এনেছি। পর্যায়ক্রমে তাদের সঙ্গে কথা বলছি। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো রকমের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। এর মধ্যে পাঁচজনের প্রতি কোনো রকম সন্দেহ ও সংশ্লিষ্টতা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। বাকি যে দিজন রয়েছে তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন মনে করছি।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রথমেই এটিকে হত্যাকাণ্ড ধরেই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। পুরো বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা খুব দ্রুত আইনের আওতায় আসব।’

হত্যার আগে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত ফরেনসিক রিপোর্ট না পাচ্ছি, এটা কনফার্ম বলা ডিফিকাল্ট। পুলিশের ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল থেকে সমস্ত আলামত সংগ্রহ করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলকে বেষ্টনী দিয়ে রেখেছিল। এখান থেকে আলামত বাদ পড়ার সম্ভাবনা কম। সেখান থেকে যদি কোনো আলামত পাওয়া যায়, তবে নিশ্চিতভাবে ফরেনসিক রিপোর্টে পাওয়া যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত